E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস

২০১৬ ডিসেম্বর ০৮ ১৫:১৮:৪৯
৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : আজ ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের বীর সেনানীরা স্বসস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মধ্যেদিয়ে পাক হানাদারদের এ অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করে শত্রুমুক্ত করেছিলেন । শত্রুমুক্ত হওয়ার আগে পাকহানাদার বাহিনীর  সাথে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর হানাদারদের নির্যাতনে নির্মমভাবে  শহীদ হয়েছিলেন নারী-পুরুষ সহ বহু মুক্তিযোদ্ধা । তাদের ধর্ষণ আর নির্যাতনে ইজ্জত হারিয়েছিলেন অনেক মা-বোন ।

জেলাবাসীর কাছে ৭১এর মুক্তি সংগ্রামের অনেক স্মৃতিছিন্ন, নির্যাতন কিংবা নিপিড়িনের স্থানগুলো আজো কালের স্বাক্ষী বহন করে । মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মৌলভীবাজার অঞ্চলের মুক্তিসেনানীরা রাতের অন্ধকারে বাংকারের নিচে অন্ধকার প্রকোষ্টে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন হানাদারদের ভয়ে । তৎকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধারা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যুদ্ধের খবর ভয়ে বাঁশঝাড়ের ভিতর দাঁড়িয়ে শুনতেন ।

১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকহানাদার বাহিনী মৌলভীবাজারে নিরপরাধ অগনিত মানুষকে হত্যা করেছিল । এরপর আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন মুক্তিবাহিনীর যৌথ অপারেশনের দীর্ঘ লড়াইয়ের ফলে পাকবাহিনী মৌলভীবাজার ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আর অনেক প্রাণের বিনিময়ে মৌলভীবাজার হয় পাকহানাদার মুক্ত হয়।

তৎকালীন সময়ে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে থাকা মুক্তিযুদ্ধের ৪ নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বর্তমান মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ্ব আজিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে যেখানে জর্জকোর্ট, সেখানে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয় ছিল । এবং এখানেই তৎকালীন সময়ে প্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়।

তিনি জানান বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো রক্ষায় বেশ তৎপর এবং এগুলো সংস্কারের জন্য বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন উদ্যোগও নেয়া হয়েছে ।

বদ্ধভুমি, সম্মুখযুদ্ধের স্থান, সব মুক্তিযুদ্ধাদের কবর সব জায়গায় একইরকম সংরক্ষিত করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান (গার্ড অফ অনার) জাতীয় পতাকা দিয়ে করা। শেরপুরের পয়েন্টে স্থাপিত সম্মুকযুদ্ধের স্থান জেলা পরিষদের মাধ্যমে বেশ ব্যয়বহুল ভাবে পূর্নসংস্কার করা হয়েছে, যা বিগত বিএনপি সরকারের আমলে বেশ অবহেলায় কোন ধরনের সংস্কার ছাড়াই পরে ছিল।

তিনি আরো জানান জেলা পরিষদের উদ্যেগে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় কাজির বাজার স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে । বহু জায়গায় বদ্ধভুমি রয়েছে,বড়লেখায় কয়েকটি জায়গায় রয়েছে যুদ্ধস্থান,কুলাউড়া, শমসেরনগর বিমানবন্দরে স্মৃতিস্থম্ভ স্থাপন করা হয়েছে, কামালপুর,নরিয়া,পদিনাপুর সহ এছাড়াও আরো বিভিন্ন জায়গায় স্মৃতিছিন্ন সংরক্ষণ করা ইচ্ছা আছে। পাঁচগাও বড়ধরনের স্মৃতিস্থম্ভ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেহেতু আমি বৃহত্ত্বর সিলেটের মুক্তিযুদ্ধের ৪ নং সেক্টরের কো-অর্ডিনেটর ছিলাম, তাই আমি আগামীতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে স্বাধীনতার স্মৃতি রক্ষার জন্য এগুলো বাস্তবায়ন করবো ।

একজন মুক্তিযুদ্ধা হিসেবে কেমন বাংলাদেশ চান?এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বে একটি গ্রহনযোগ্য গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে দেশকে একটি মধ্যেম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এটাই আমার প্রত্যাশা ।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test