E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেনীতে তিন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা

২০১৬ ডিসেম্বর ১৪ ১৮:১১:২১
ফেনীতে তিন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা

ফেনী প্রতিনিধি : ফেনীতে দরজা বন্ধ ঘরে মা ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন মাসুম। মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয়। এর আগে দুপুরে ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত তিন জনের ময়নাতদন্ত শেষে ভিসেরা রির্পোটের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়না তদন্ত শেষে শহরের পশ্চিম রামপুরে উজির আলী ভূঞা বাড়িতে তাদের দাফন করা হয়।

নিহত মুক্তার ভাই ও মামলার বাদি আনোয়ার হোসেন মাসুম জানান, পুলিশ জিঙ্গাসাবাদের জন্য সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেলে পর্যন্ত তাকে ফেনী থানায় বসিয়ে রাখে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলা সংক্রান্ত কয়েকটি পেপারে তার স্বাক্ষর নেয় পুলিশ। পরে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি থানায় জব্দ করে রাখে। নিহত মুক্তার মা সবুরা খাতুন কাজল মুক্তা ও দুই নাতী নাতনীর মৃত্যুতে বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছে। তিনি কোনভাবেই মেয়ে ও নাতী-নাতনীদের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা। তিনিসহ পরিবারের স্বজনা ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছেন। নিহত মুক্তা পশ্চিম রামপুর গ্রামের মৃত আলী আশরাফের মেয়ে।

ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা অসীম কুমার সাহা জানান, তাঁর নেতৃত্বে হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. রোকসানা বেগম স্বপনা ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় কুমার পাল নিহতদের ময়নাতদন্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে ভিসেরা রির্পোটের জন্য দুই শিশু ও মা’র বেশ কিছু উপাদান সংগ্রহ করেছেন। যা সিআইডি চট্টগ্রাম কার্যালয়ের ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হবে। তবে ময়নাতদন্তে কি পাওয়া গেছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদ খাঁন চৌধুরী জানান, মা ও দুই সন্তান নিহতের ঘটনায় তার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন মাসুম বাদি হয়ে থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নিহত মুক্তার ও ভাই মাসুমের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। ফেনী পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক জানান, নির্মম এর মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওয়াতয় এনে উপযুক্ত বিচার করা হবে।

নিহত মুক্তার চাচা মাওলানা অলি আহম্মেদ জানান, দশ বছর আগে সোনাগাজীর কুঠির হাটের প্রবাসী তারেক আহম্মেদের সাথে তার বড় ভাইয়ের মেয়ে মর্জিনা আক্তার মুক্তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় কয়েকবাব দেশ পরিবর্তন করে। বর্তমানে তারেক ইটালি অবস্থান করায় ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে মুক্তা বছর খানের আগে শহরের পশ্চিম উকিল পাড়ার একটি বাসায় ভাড়া থাকতো। মুক্তার বড় মেয়ে তাসনিম আহম্মেদ শহরের সেন্ট্রাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছিলো। অতিসম্প্রতি মুক্তার সাথে প্রবাসী স্বামী তারেকের মুঠোফোনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও ঝগড়া হচ্ছিল। তবে সেটি যে এমন নৃংশস ঘটনায় পরিনত হবে তা কেউ ধারনা করতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সন্ধ্যায় রাতে শহরের রামপুর এলাকার পশ্চিম উকিল পাড়ার বখতেয়ার ভূইয়া বাড়ির আবদুর রউপ ভূইয়া নিবাসে একটি ঘর থেকে মা মর্জিনা আক্তার মুক্তা (৩০), মেয়ে তাসনিম আহম্মেদ (৮) ও ছেলে মাহিম আহম্মেদের (৫) ফাঁস দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

(এসআইএম/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test