E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মান্দায় সংখ্যালঘুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাদশাসহ গ্রেফতার ৩

২০১৬ ডিসেম্বর ২০ ১৯:০৬:০৮
মান্দায় সংখ্যালঘুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাদশাসহ গ্রেফতার ৩

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টায় মান্দা থানার পুলিশ ঘটনার মূল হোতা বাদশা বাহিনীর প্রধান মহিদুল হক বাদশাসহ ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে।

মহাদেবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রাজ্জাক খান ও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাদশাকে রাজশাহী শহর থেকে ও তার দুই সহযোগী সুমন কুমার ঘোষ ও আশরাফুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় স্বস্তি নেমে আসে। স্থানীয় সংখ্যালঘুদের পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমদাদুল হক মোল্লার পুত্র মহিদুল হক বাদশার বালুমহালের কর্মচারী সুমন ঘোষ (২৫) উপজেলাধীন প্রসাদপুর হালদারপাড়ার রবীন্দ্র নাথ হালদারের সপ্তদশী কন্যা কুমারী বৃষ্টি রাণী (১৭) কে সবসময় উত্যক্ত করত। এমনকি ওই তরুণীকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এতে বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

উক্ত বিরোধের জের ধরে শনিবার সন্ধ্যায় মহিদুল হক বাদশা, সুমন ঘোষ, আশরাফুল ইসলাম, মোঃ আব্দুল ওহাব হিরা ও পুটুসহ অন্যান্য আসামীরা অনুপ মহন্তর বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাটসহ মারপিটের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া বাজারের বিভিন্ন সংখ্যালঘুর বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। মারপিট করে নারীসহ কয়েক সংখ্যালঘু যুবককে। এব্যাপারে অনুপ কুমার মোহন্ত বাদী হয়ে মান্দা থানায় একটি মামলা করেন।

অপরদিকে ভিকটিম বৃষ্টি রাণীর পিতা-রবীন্দ্রনাথ বাদী হয়ে অপহরন প্রচেষ্টা, যৌন নিপীড়ন ও সহায়তার অপরাধে একই সন্ত্রাসী আসামীদের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় পৃথক একটি মামলা করেন। নওগাঁর পুলিশ সুপার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম, পিপিএম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশি টহল ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার ৪দিন পর পুলিশ দিন-রাত ব্যাপক অভিযান চালিয়ে ভিন্ন ভিন্ন জেলা থেকে যখন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করলো, ঠিক সেসময় গ্রেফতারের খবর পেয়ে ওইসব সন্ত্রাসীদের গডফাদার মান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমদাদুল হক মোল্লা এলাকায় নিজের ইমেজ প্রতিস্থাপন করার জন্য এই বলে প্রচার করতে থাকেন যে, ‘তিনি একজন জনদরদী নেতা। পুত্রের সন্ত্রাসী তান্ডব সহ্য করতে না পেরে তাকে তিনি নিজেই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন’। তিনি যদি এমনই হতেন, তাহলে ঘটনার রাতে পুলিশের চোখ এড়িয়ে তিনি তাকে কেন ভাগিয়ে দিয়েছিলেন? এমন প্রশ্ন এখন মান্দা এলাকার মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।

(বিএম/এএস/ডিসেম্বর ২০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test