E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভারতের সেফ হোম থেকে ফেরা ইনামুল পেল নতুন ঠিকানা

২০১৭ এপ্রিল ২৫ ২৩:১৯:৪৪
ভারতের সেফ হোম থেকে ফেরা ইনামুল পেল নতুন ঠিকানা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : অভাব অনটন সঙ্গী ছিলো পুরো পরিবার। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো তাদের। জীবন সংগ্রামে কোন মতে টিকে জীবন চলছিলো অভাবী সংসারে।

এমনি এক দিনে রান্নার জন্য ৬ বছর বয়সী সন্তান ইনামুলকে বাজারে চাল আনতে পাঠিয়েছিলেন মা সাজু খাতুন। মায়ের কথামতো চালের খোঁজে বাজারের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে ইনামুল। এরপর দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচার হয়ে যায় ভারতে। চার বছর পর ভারতের সেফ হোমে কাটাতে হয় তাকে। সেখান থেকে ফিরে আসা পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের সিহাব উদ্দিনের ছেলে ইমানুল। ইনামুল হকের পরিবারকে পুনর্বাসন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেহেলী লায়লা।

ইউএনও বেগম শেহেলী লায়লা মঙ্গলবার তাঁর দপ্তরে ইনামুল ও তার মা-বাবাকে নিয়ে আসেন। ইউএনও শেহেলী লায়লা একটি ভিজিডি’র কার্ড তুলে দেন এনামুলের মা সাজু বেগমের হাতে। এ সময় ফৈলজানা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ, পিআইও সহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তার বাবা সিহাব উদ্দিনকে নিয়োগ করে সরকারে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীর শ্রমিক হিসেবে। একই সাথে সদস্য করা হয় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের। এজন্য বার্ষিক সঞ্চয়ের ২ হাজার ৪শ’ টাকা জমা দেন ইউএনও নিজেই।

আগামী জুলাই মাসে তাকে ঋণ দেওয়া হবে ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া সরকারের প্রকল্প হিসেবে প্রদান করা হবে বাড়ির করার জন্য জমি ও ঘর। একই সাথে ইনামুলকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শর্ত ইনামুল কোনভাবেই পড়া-লেখা বাদ দিতে পারবে না। ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করানো হলে সরকারের সকল সহায়তা বন্ধ করা হবে বলে সাবধান করে দেন।

অসহায় পরিবারকে পুনর্বাসন করতে পেরে ইউএনও সহ সকলেই খুশী। নতুন ভাবে বাঁচার আশা খুঁজে পেয়ে এ সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন ইনামুল ও তার পরিবার এবং উপস্থিত সবাই। এ যেন নতুন ঠিকানা পেল ইনামুল।

ইউএনও বেগম শেহেলী লায়লা জানান, ছেলেটি (ইনামুল) অত্যন্ত মেধাবী। আমি তার সাথে কথা বলেছি। মানুষ চাইলে মানুষের উপকারে আসতে পারে। পুরোটাই ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর করে।

উল্লেখ্য, ৪ বছর আগে ৮ বছরের শিশু ইনামুল হক বেরিয়েছিল চালের খোঁজে। স্টেশনে গিয়ে ট্রেন দেখে ভুলে গিয়েছিল ক্ষুধার কথা। খেলার ছলে উঠে পড়েছিল সেই ট্রেনে। দালালের খপ্পরে পড়ে পাচার হয়েছিল ভারতে। সীমান্তে ভারতীয় পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলেটির আশ্রয় মেলে শিলিগুঁড়ির একটি সেফ হোমে। এরপর সেখানেই কেটে যায় চার বছর। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেষ্টায় খোঁজ মেলে ইনামুলের। পরিচয় মিলতেই ভারতীয় সেফ হোম কর্তৃপক্ষ তাকে বাংলাদেশে পাঠায়। গত ৩১ মার্চ মায়ের কোলে ফিরে আসে শিশু ইমামুল।

(এসএইচএম/এএস/এপ্রিল ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test