E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পেকুয়ায় ৪০কিলোমিটারের অধিক বেঁড়িবাধ বিধ্বস্থ

২০১৪ জুন ২২ ১১:১৪:১১
পেকুয়ায় ৪০কিলোমিটারের অধিক বেঁড়িবাধ বিধ্বস্থ

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজারের পেকুয়ায় ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০কিলোমিটারের অধিক বেড়িঁবাধ বিধ্বস্থ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাউবো নিয়ন্ত্রিত এসব বেঁড়িবাধের মধ্যে সমুদ্র উপকূলবর্তী মগনামা উজানটিয়া ও রাজাখালীসহ ৩ইউনিয়নে প্রায় ৩৭কি.মি. বেঁড়িবাধ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এদিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিনাংশে পাউবো নিয়ন্ত্রিত ৩কিলোমিটার বেঁড়িবাধ বিধ্বস্থ রয়েছে। এ ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীর অববাহিকায় নেমে আসা ঢলের পানির আঘাতে ছিরাদিয়া, বাঘগুজারা ও সৈকত পাড়া পয়েন্টে তিন কিলোমিটার বেঁড়িবাধ চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

অপরদিকে, উপকুলবর্তী মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নে প্রায় ৩২কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেঁড়িবাধ অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসবের মধ্যে উজানটিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করিয়ারদিয়ায় তিন পার্শ্বে বেঁড়িবাধ এর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। যেকোন মুহুর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে বলে আশংকার কথা জানিয়েছেন, ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. শহিদুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, টেকপাড়া এলাকায় ইতিমধ্যে ভাঙ্গন ধরেছে। মাতামুহুরী নদীর পানির করাল গ্রাসে করিয়াদিয়ার পূর্ব পার্শ্বের তিন কিলোমিটার বেঁড়িবাধের মধ্যে পুরো দুকিলোমিটার বিধ্বস্থ।

মাতারবাড়ি চ্যানেলের ধাক্কায় দক্ষিন অংশের ৫কিলোমিটারের মধ্যে ৪কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

পশ্চিম অংশের উজানটিয়া চ্যানেলের জোয়ারের পানির প্রচন্ড ঢেউয়ে ৬কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত সাড়ে ৫কিলোমিটার বেঁড়িবাধের অবস্থা খুবই নাজুক। এছাড়া এ ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া সুন্দরীপাড়া, টেকপাড়া, মধ্যম উজানটিয়া মিয়াজীপাড়া, ফেরাসিংগা পাড়া পয়েন্টেসহ বিভিন্ন স্থানে বেঁড়িবাধ অরক্ষিত। মগনামা ইউনিয়নের কাঁকপাড়া থেকে ভোলা খালের পয়েন্ট শরত ঘোনা পর্যন্ত প্রায় ৯কিলোমিটার পাউবো নিয়ন্ত্রিত ৬৪/২বি ফোল্ডারের বেঁড়িবাধের চরম ঝুকিঁপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলের প্রচন্ড স্রোতের আঘাতে কাঁকপাড়া মাজার পয়েন্ট অংশ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

পশ্চিমকুল রাইত্যারপাড়া ও শরতঘোনা অংশে বেঁড়িবাধের চিত্র খুবই ভয়াবহ। অপরদিকে উপকুলবর্তী রাজাখালী ইউনিয়নে প্রায় ৭কিলোমিটার বেঁড়িবাধ চরম ঝুঁকির মধ্যে। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে এ ইউনিয়নে আমিন বাজার, বকশিয়া ঘোনা ও সুন্দরীপাড়াসহ কয়েক স্থানে ছনুয়া নদীর রক্ষা বেঁড়িবাধ বিধ্বস্থ হয়েছে। এর ফলে আমিন বাজারের দক্ষিন অংশের বেঁড়িবাধ বিলীন হয়ে অনেক দোকান পাট ও ঘরবাড়ি ছনুয়া নদীর মধ্যে মিশে গেছে।

বর্তমানে বর্ষা মৌসুম শুরুতেই বেঁড়িবাধের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় ওই চার ইউনিয়নের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ১৯৯২সালে উপকুলবর্তী মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় বেঁড়িবাধ সংস্কার হয়েছিল। এরপর বিগত ২২ বছরের মধ্যে এসব বেঁড়িবাধে আর কোন সংস্কার করা হয়নি। ফলে বেঁড়িবাধের সংস্কার না হওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, গত ২০১২-২০১৩ইং অর্থ বছরে মগনামা উজানটিয়া ইউনিয়নে বেঁড়িবাধ সংস্কারের জন্য পৃথক দুকোটি টাকা বরাদ্দ করেন। এছাড়া চলতি অর্থ বছরে মগনামা রাজাখালী ও উজানটিয়া ইউনিয়নে বেঁড়িবাধ সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট পানি সম্পদ অধিদপ্তরে প্রজ্ঞাপন পাঠিয়েছেন। এরই মধ্যে উপকুল ভাগের বেঁড়িবাধ সংস্কারের জন্য সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ১৪কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।

জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক বৈঠকে গত দুমাস আগে এ টাকা বেঁড়িবাধ নির্মান খাতে বরাদ্ধ দিয়েছেন বলে পাউবো নিশ্চিত করেছেন। টেকসই বেঁড়িবাধ সংস্কার করতে জাপান আর্র্ন্তজাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা অর্থ সরবরাহ ছাড়াও টেকনিক্যাল সহযোগিতা করবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এম.শহিদুল ইসলাম জানান, দ্রুত সময়ে বেঁড়িবাধ সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে। মগনামার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল মোস্তফা জানান, আমার ইউনিয়নে বেঁড়িবাধের অবস্থা সবচেয়ে বেশি নাজুক। গত বছর থেকে প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে বাঁধ সংস্কারের জন্য।

রাজাখালীর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল বলেন, পশ্চিম অংশে এক কিলোমিটার খোলা অংশ রয়েছে। এটি দিয়ে জোয়ারের পানি প্রায় সময় লোকালয়ে প্রবেশ করে।

(এমকেইউ/জেএ/জুন ২২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test