E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বঞ্চিত শরণখোলার সলেমান

২০১৭ জুন ০৩ ১৩:৫৪:২১
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বঞ্চিত শরণখোলার সলেমান

বাগেরহাট প্রতিনিধি : একাত্তরে দেশ রক্ষায় জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেও ভাতা পাচ্ছেন না বাগেরহাটের শরণখোলার সলেমান হাওলাদার (৬০)। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও এখন অবহেলায় দিন কাটছে তার। আওয়ামী লীগ করার কারণে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বে থাকা বিএনপি পন্থী কমান্ডার ভাতার তালিকা থেকে তার নাম কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করলেন অসহায় এ মুক্তিযোদ্ধা।

উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী গ্রামে নিজের ঘরবাড়ি সবকিছু নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে যায় সলেমানের। কোনো জমিজমা, সহায় সম্পদ না থাকায় পার্শ্ববর্তী খুড়িয়াখালী গ্রামে শ্বশুর বাড়ির কাছে ভোলা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে পরিবার পরিজন নিয়ে ঠাঁই হয় তার। সেখানে কোনো মতে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন চলছে প্রকৃত এ মুক্তিযোদ্ধার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সনদপত্র এবং মুক্তিযোদ্ধা গেজেটেও তার নাম রয়েছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকেও তাকে প্রত্যয়ন পত্র দেওয়া হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। তবুও ভাতা জোটেনি তার ভাগ্যে।

শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বগী গ্রামের মৃত লেহাজ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সাবেক মৌজা আওয়ামী লীগের সাধারণ (৩টি ওয়ার্ড মিলে ১টি মৌজা) সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সলেমান হাওলাদার জানান, মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে এবং কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল গফ্ফার সুবেদারের অধীনে তিনি যুদ্ধ করেছেন। তার মুক্তিবার্তা নম্বর- ৩৮৪৭ এবং জেলা স্মারক নম্বর বাগেরহাট- ৪৬। এছাড়া ২০১৪ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষরিত সনদ পত্রও রয়েছে তার। মন্ত্রনালয়ের সনদপত্র নম্বর- ২০০৭১৯। এতোসব তথ্য প্রমানাদি থাকা সত্তেও তিনি ভাতা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ক্ষুব্ধ এ মুক্তিযোদ্ধা আরো জানান, আওয়ামী লীগ করার অপরাধে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে শরণখোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বে থাকা বিএনপি পন্থী কামান্ডার ইউসুফ আলী শিকদার ভাতার তালিকা থেকে তার নাম বাদ দিয়েছেন। অথচ তার নামের সাথে মিল থাকা বিএনপি সমর্থক ভূঁয়া মুক্তিযোদ্ধা অন্য এক সলেমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করে গেছেন। প্রকৃত মক্তিযোদ্ধা হয়ে এখন না খেয়ে মরতে হচ্ছে তাকে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পাওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মীর আলিফ রেজা বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। ওই মিটিংয়ে তার কাগপত্র দেখে সঠিক মনে হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান কমান্ডার এমএ খালেক খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সলেমানের অবদান রয়েছে। তবে, কী কারণে তিনি ভাতা পাচ্ছেন না তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

এ ব্যাপারে সাবেক কমান্ডার ইউসুফ আলী শিকদারের কাছে জানতে চাইলে বলেন, সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ওই সময় তাকে ভাতার তালিকাভুক্ত করা হয়নি।

(একে/এএস/জুন ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test