E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘীরে চলছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাপ!

২০১৭ জুন ১৫ ১৫:৫৬:৫৯
মৌলভীবাজারে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে ঘীরে চলছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাপ!

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : সর্বশেষ ২০০৬ সালের জুলাইয়ের দিকে হয়েছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির কাউন্সিল। এর পর অভ্যন্তরিন কোন্দলসহ নানা কারণে দীর্ঘ সময়েও হতে পারেনি দলের কাউন্সিল। অবশেষে ১১ বছরের লম্বা সময় পার হওয়ার পর বিগত মে মাসের ২০ তারিখে কেন্দ্রের নির্দেশনা মতে, জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও রমজান সমাগত হওয়ায় নির্দিষ্ট সময় মত কাউন্সিল করতে পারেননি দলটির নীতিনির্ধারকরা। এদিকে সূত্রে জানা গেছে, আগামী ঈদের পর দলের কাউন্সিল হওয়ার সম্ভাবনার কথা। দীর্ঘ সময় ধরে অনির্বাচিত কমিটি থাকায় স্থবির সংগঠনে এরই মধ্যে সম্ভাব্য কাউন্সিলকে ঘীরে নির্বাচনী আবহ সৃষ্টি হয়েছে।

কাউন্সিলকে ঘীরে ক্ষমতাসীন দলটির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে জোর লবিংয়ের জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশীরা। দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামীলীগের জেলা সংগঠনের তৃণমূল থেকে বার বার কাউন্সিলের দাবি করা হলে এর প্রেক্ষিতে দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চলতি বছরের মে মাসের ২০ তারিখে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায়। তবে রমজান আসন্ন থাকায় আবারো পিছিয়ে পরে দলের কাউন্সিলের সম্ভাব্য তারিখ। এদিকে এরই মধ্যে জেলার সকল ইউনিয়নে দলের কাউন্সিল সম্পন্ন হওয়ায় মূল অভিভাবক সংগঠনের কাউন্সিল এর ব্যাপারে সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে আস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। আসন্ন কাউন্সিলকে ঘীরে সভাপতি পদে জোর লবিং তদবির করছেন বলে যাদের নাম এরই মধ্যে শুনা যাচ্ছে তারা হলেন, প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর সহধর্মীনি, মৌলভীবাজার রাজনগর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সেয়দা সায়েরা মহসিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ,বর্তমান সহ-সভাপতি মোঃ ফিরোজ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ বজলুল করিম (বি করিম) বর্তমান সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার রয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে যাদের নাম আলোচনায় আছে তারা হলেন, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেম্বার সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন, প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মালিক তরফদার ভিপি শোয়েব, সদর থানা আওয়ামীলের সভাপতি ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মসুদ আহমদ, সাবেক জেলা যুবলীগ সভাপতি ও বর্তমান মৌলভীবাজার পৌর মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে,২০০৬ সালের ২৭ জুলাই সর্বশেষ মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল হয়েছিল। কাউন্সিলের ৪ বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১০ সালের শেষ দিকে কেন্দ্র থেকে পূর্নাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। ৩ বছর মেয়াদী কমিটি নিয়ে চলে জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যক্রম। এর পর থেকে সম্মেলন কেন্দ্রিক অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে জেলা আওয়ামীলীগ দু ভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন। মাসকয়েক পূর্বে বিবাদমান দুই গ্রুপে নেতাদের নিয়ে ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। বৈঠকে উভয় গ্রুপের নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয় মৌলভীবাজার জেলার সব সাংগঠনিক থানার সম্মেলন শেষ করে ২০ মে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন শেষ করার জন্য। এদিকে দলীয় নির্দেশনা পেয়ে উভয় গ্রুপের নেতাদের অংশগ্রহনে গত ২৪ মার্চ বর্ধিত সভা করে সব সাংগঠনিক থানার সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও এরপর কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা আসে থানা সম্মেলন স্থগিত করে নির্ধারিত তারিখে জেলা সম্মেলন করার জন্য । নির্দেশনায় জানানো হয় সম্মেলন পরবর্তী সময়ে নতুন জেলা কমিটি জেলার সকল সাংগঠনিক থানা কমিটির সম্মেলন করবে।

তবে এখনো সম্মেলন আয়োজনের কোন তৎপরতা নেই বলে জানান,জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল,তিনি বলেন, ২০০৬ সালের জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল সম্পন্ন হওয়ার পর প্রথম বারের মত ডাকায় জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা হয় গত ১২ মার্চ ২০১৭ তারিখে দলীয় কার্যালয়ে । তিনি বলেন মূলত প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী মারা যাওয়ার পর থেকে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগে অভিভাবক শূন্যতা বিরাজ করছে। সূত্র জানায়, যথাক্রমে কেন্দ্র থেকে ২০১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ও ২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করার তাগিদ দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ অবস্থায় কেন্দ্র নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন সম্পন্ন করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে। অন্যদিকে অনেকের আশংকা শেষ পর্যন্ত কি বহু প্রত্যাশিত জেলা আওয়ামীলীগের আসন্ন সম্মেলন হবে? না দলীয় কোন্দল নতুন ভাবে মাথাছাড়া দিয়ে উঠবে! যেহেতু সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলগকে ভোটের হিসেবটি মাথায় রেখে কৌশলী হয়ে নতুন কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদের সাথে। তিনি বলেন, আগামী ঈদের পর দলের বর্ধিত সভা ডেকে সম্মেলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

(একে/এএস/জুন ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test