E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত

বড়লেখায় ১২টি মাধ্যমিক ও ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি

২০১৭ জুলাই ০২ ১৩:৩৮:৩২
বড়লেখায় ১২টি মাধ্যমিক ও ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় ১২টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। হাকালুকি হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সকল বিদ্যালয়ের অনেকটিতে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকটির চারদিকে পানি। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর স্কুলে আসা-যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রোজার ছুটির পর শনিবারই (১ জুলাই) ছিল স্কুল খোলার প্রথম দিন। কিন্তু বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর পারের স্কুলগুলোতে পানি উঠায় শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয়নি। স্কুল চারপাশ পানিতে ডুবে আছে। এতে ছাত্র-শিক্ষক সবার পক্ষে স্কুলে আসা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।

উপজেলার হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়, কানসাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, টেকা আলী উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাতলা উচ্চ বিদ্যালয়, মাইজগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, ইটাউরি হাজী ইউনুছ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম বর্নি উচ্চ বিদ্যালয়, বর্নি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পাকসাইল উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী শামছুল হক উচ্চ বিদ্যালয় ও সিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়-এই ১২টি স্কুল বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে হাকালুকি ও সিদ্দেক আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র।

পশ্চিম বর্নি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র সিংহ শনিবার বলেন, ‘স্কুলে পানি উঠেছে। পার্শ্ববর্তী এলাকার রা¯Íাঘাটও পানির নিচে। নৌকা দিয়ে আসছি। আসবাবপত্রের নিচে ইট দিয়ে রাখছি। কিন্তু বোঝতে পারছি না। কতটুকু ভালো রাখা যাবে।’

এদিকে ৬ জুলাই থেকে বড়লেখা উপজেলা মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক্ নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। বন্যার কারণে ৬ জুলাইয়ের বাংলা পরীক্ষা পিছিয়ে ২৩ জুলাই এবং ৮ জুলাইয়ের ইংরেজি পরীক্ষা ২৪ জুলাই পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বড়লেখা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দেব শনিবার বলেন, ‘স্কুল ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ছাত্র-শিক্ষক কারো আসার উপায় নেই। দুটি পরীক্ষার তারিখ পেছানো হয়েছে।’

অপরদিকে বড়লেখা উপজেলার ৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩টির ক্লাসরুমে পানি ঢুকে পড়েছে। ১৫টি চারদিকে পানি এবং সাতটিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলার হাকালুকি সংলগ্ন বর্নি ইউনিয়নের ১৬টির মধ্যে ১৬টিতেই পানি ঢুকেছে। তালিমপুর ইউনিয়নের ১৫টির মধ্যে ১৪টিতে। সুজনাগর ইউনিয়নের ১৩টির মধ্যে ১৩টিই পানিবন্দী। এছাড়া দাসেরবাজার, নিজবাহাদুরপুর, উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে।

অন্যদিকে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের কবিরা হাজী ও সায়পুর; তালিমপুর ইউনিয়নের হাকালুকি; দাসেরবাজার ইউনিয়নের দাসেরবাজার ও দক্ষিণ বাগীরপার; সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ এবং দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের রাঙাউঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বর্নি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কায়েদে আজম শনিবার বলেন, ‘এলাকার সব রাস্তা পানির নিচে। স্কুলেও পানি। ছোট বাচ্চাদের স্কুলে আসার উপায় নেই। আমরা পানিবন্দী অবস্থায় আছি।’

বড়লেখা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ শনিবার বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৫৩টির শ্রেণিকক্ষে পানি, ১৫টির চারদিকে পানি ও সাতটিতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।’

(এলএস/এসপি/জুলাই ০২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test