E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

২০১৭ জুলাই ১০ ২২:১৯:০৭
গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

হেদায়েতুল ইসলাম বাবু, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সোমবার আরও অবনতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য অনুযায়ি গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে জেলা শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ১ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বিপদসীমা অতিক্রম করলে জেলা শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যে  বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এছাড়া তিস্তা, যমুনা ও করতোয়া নদীর পানি এখনও বিপদসীমার নিচে রয়েছে।

অপরদিকে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৪ উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দী। ওইসব এলাকার নিম্ন ও চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, ফসলী জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

ইতোমধ্যে ফুলছড়ি উপজেলার ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ চরাঞ্চল বেষ্টিত ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে বন্যার পানি উঠায় পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ১৩০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। ভাঙনের সম্মুখিন হয়ে পড়েছে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

এরেন্ডাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান জানান, কয়েকদিনের ভাঙনে এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের জিগাবাড়ি, পশ্চিম জিগাবাড়ি, হরিচন্ডি, পাগলারচর এলাকায় নদী ভাঙনের কারণে ১৩০টি পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে। হুমকির মূখে রয়েছে জিগাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিগাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ও জিগাবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক। তিনি বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এখনও সরকারি কোন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয় নাই।

ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হেমায়েত আলী শাহ জানান, ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত ৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে বন্যার পানি প্রবেশ করায় এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে কক্ষে পানি উঠায় ঝানঝাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গলনা কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কটকগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সাঘাটার জুমারবাড়ি থেকে সুন্দরগঞ্জের তারাপুর পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশকিছু এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন। চিহ্নিত এলাকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, হচ্ছে সাঘাটার বসন্তের পাড়া, গোবিন্দী, ফুলছড়ির রতনপুর, সিংড়িয়া, কাতলামারি, সদর উপজেলার কামারজানি, কাজলঢোপ, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছয়ঘড়িয়া, সাদুল্যাপুর উপজেলার কামারপাড়া।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ি অস্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হবে।

জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন নিচু এলাকার মানুষ এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে আসার মত পরিস্থিতিতে পড়েননি। তবে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও তৈরী রাখা হয়েছে। প্রশাসনের হাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে। সুতরাং কোথাও কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, ফুলছড়ি ও সাঘাটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কাছাকাছি পানি চলে আসায় সেই এলাকায় বসবাসকারি পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরীভাবে ১শ’ ২৫ মে. টন চাল ও ১০ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

(এইচআইবি/এএস/জুলাই ১০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test