E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলের বানভাসী এলাকায় বাড়ছে রোগ-বালাই, পর্যাপ্ত ত্রাণ নেই

২০১৭ জুলাই ১৭ ২৩:৪৪:০২
টাঙ্গাইলের বানভাসী এলাকায় বাড়ছে রোগ-বালাই, পর্যাপ্ত ত্রাণ নেই

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমতে শুরু করায় বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। রবিবার বিকাল থেকে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে।

সোমবার বিকাল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার ভূঞাপুর স্লুইসগেট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ১০০ মে.টন জিআর চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে- যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।

জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে প্রকাশ, টাঙ্গাইলের ছয়টি উপজেলায় এবার বন্যা হয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে, টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, দেলদুয়ার ও মির্জাপুর। এরমধ্যে ভূঞাপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে অর্জুণা ও গাবসারা এ দুইটি ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৫২টি, নদী বাঙনের শিকার হয়েছে এক হাজার ২৩৪টি পরিবার। কালিহাতী উপজেলায় গোহালিয়াবাড়ী, সল্লা ও দশকিয়া এ তিনটি ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৩৬টি পরিবার। মির্জাপুর উপজেলার বহুরিয়া ও ফতেহপুর এ দুই ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬৪টি পরিবার।

সূত্র আরো জানায়, এখানে শুধুমাত্র তিনটি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। এবারের বন্যা ও নদী ভাঙনে জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলার অন্তত: ২৮টি ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে, তালিকা করণের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি বিধায় তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা।

সূত্রমতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণায়ের ৬০ মে.টন জিআর চাল ও এক লাখ ৫ হাজার নগদ টাকা ছয়টি উপজেলায় বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ভূঞাপুর উপজেলায় ২০ মে.টন চাল ও ৩০ হাজার নগদ টাকা, গোপালপুরে ৫ মে.টন চাল ও নগদ ৫ হাজার টাকা, টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ১৫ মে. টন চাল ও ২৫ হাজার টাকা, কালিহাতীতে ১০ মে.টন চাল ও নগদ ২০ হাজার টাকা, দেলদুয়ারে ৫ মে.টন চাল ও নগদ ১০ হাজার টাকা এবং মির্জাপুরে ৫ মে.টন চাল ও নগদ ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, নাগরপুর উপজেলায় নদী ভাঙন ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় বা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের কোন তথ্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখায় পাঠানো হয়নি বলে প্রধান সহকারী মোখলেছুর রহমান জানান।

অপরদিকে, নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চল এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সেই সাথে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। যমুনার পানি কমতে থাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে এবং বানভাসী মানুষের মধ্যে নানা রোগ-বালাই দেখা দিচ্ছে।

যমুনা নদীর পানি কমার সাথে সাথে যমুনা সহ শাখা নদী পুংলী, এলেংজানী, ঝিনাই, ধলেশ্বরী, লৌহজং নদীর পানি কমে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমকীর মুখে পড়েছে। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনায় পানি কমতে থাকায় কোন কোন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হাতে না পাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে খুব দ্রুতই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।

(আরকেপি/এএস/জুলাই ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test