E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রাণে বাঁচল ১৭৫ বছরের ২ হাজার গাছ

২০১৭ জুলাই ২৩ ১২:২৪:৫৬
প্রাণে বাঁচল ১৭৫ বছরের ২ হাজার গাছ

যশোর প্রতিনিধি : গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করায় প্রাণে বেঁচেছে ঐতিহাসিক যশোর রোডের ১৭৫ বছর বয়সী দুই হাজার ৩৩২টি প্রবীণ বৃক্ষ। যশোর-বেনাপোল সড়ক প্রশস্ত করার জন্য গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গাছগুলোকে বাঁচাতে ‘আকুতি’ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে গাছগুলো রেখেই সড়ক প্রশস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানা যায়, ১৭৫ বছর আগে ১৮৪২ সালে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন যশোরের জমিদার কালী পোদ্দার। কালীর মা গঙ্গা স্নানে যাওয়ার জন্য বজরায় ওঠেন। কিন্তু মাঝি তাঁর মাকে ফিরিয়ে দিয়ে বলে, ‘তোমার ছেলে হাড়কিপটে। তোমাকে বজরায় তুললে কড়ি পাওয়া যাবে না। মা বাড়ি ফিরে এসে কালীকে এ কথা জানান। তিনি এ-ও বলেন, ‘তোকে পেটে ধরে ভুল করেছি। একজন গরিব কৃষককে পেটে ধরলে আজ এই অপমান সইতে হতো না। ’

কালী পোদ্দার মায়ের কথা শুনে আবেগতাড়িত হন। ১৮৪০ সালে তিনি যশোরের মুড়লি থেকে ভারতের নদীয়ার গঙ্গা ঘাট পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে হাত দেন। ১৮৪২ সালে সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়। মা ছায়ায় ছায়ায় গঙ্গা স্নানে যাবেন এ জন্য তিনি বিদেশ থেকে অতি বর্ধনশীল রেইনট্রি বৃক্ষের চারা এনে রাস্তার দুই ধারে রোপণ করেন।

যশোরের ঝিকরগাছা এলাকার যশোর-বেনাপোল সড়কের (ভারতে যশোর রোড) কিছু অংশে কিছুসংখ্যক গাছ আজও ছায়া দিচ্ছে। কালীবাবুর স্মৃতিধন্য গাছগুলোকে কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোর শহরের দড়াটানা থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়ক আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটির জন্য সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। একনেক গত মার্চ মাসে সড়ক সম্প্রসারণে ৩২৮ কোটি ৯২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয় ঐতিহাসিক গাছগুলো না কেটে সড়ক প্রশস্ত করার।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল বলেন, গাছ না কেটে মহাসড়কটি পুননির্মাণের জন্য সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সহসাই আমরা টেন্ডার আহ্বান করব। এরপর শুরু হবে রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test