E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

২০১৭ জুলাই ২৫ ১৪:৪১:১৩
টাঙ্গাইলে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালসহ ২৬ নেতাকর্মীর নামে সোমবার (২৪ জুলাই) বিকালে মামলা দায়ের করেছে মডেল থানা পুলিশ। রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী এবং কমিটিতে পদবঞ্চিতদের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। মামলায় শুধুমাত্র বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের আসামী করা হলেও পদবঞ্চিত অংশের কাউকে আসামী করা হয়নি।

সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় অজ্ঞাত আরো এক-দেড়শ’ জনকে আসামী করা হয়েছে। টাঙ্গাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন বাদি হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যানবাহন ও বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর এবং জনমনে আতংক ও ভয়ভীতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বিবরণে বাদি উল্লেখ করেন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নির্দেশে তার ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের নেতৃত্বে রোববার (২৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ১০০-১৫০ নেতাকর্মী প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে সমবেত হয়। তারা টাঙ্গাইল শহরে কৃত্রিম সন্ত্রাস ও নাশকতা সৃষ্টির লক্ষে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা এবং ইটপাটকেল নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ ভাংচুর, জনমনে আতংক ও ভয়ভীতির সৃষ্টি করে।

মামলায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাদেকুল আলম খোকা ও আতাউর রজমান জিন্নাহ, যুগ্ম-সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান ও আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হামিদ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুল হক, জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার রাশেদুল আলম, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবেদ হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক রাশেদ খান, যুবদল কর্মী তানভির হোসেন, আমিনুল ইসলাম, মানিক মিয়া, রুবেলকে এবং রোববার (২৩ জুলাই) সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি কর্মী রজব মিয়া, মনিরুজ্জামান তুষার, সিরাজুল ইসলাম, সিফাত মিয়া, শহিদুল ইসলাম, আবুল হোসেন, ইকবাল হোসেন, আমির হামজা সিকদারকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আট বিএনপিকর্মীকে সোমবার (২৪ জুলাই) টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুুল আলম তোফা জানান, সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে পদবঞ্চিতরা জেলা বিএনপির কর্মী সংগ্রহ কর্মসূচিতে প্রশাসনের সহায়তায় হামলা করেছিল। হামলাকারী আলাল নামক একজনকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাকে ছেড়ে দেয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করার জন্য সরকারি দল ও প্রশাসন দলের পদবঞ্চিত একটি অংশকে ব্যবহার করে এই হামলা ও মামলা সাজিয়েছে।
এদিকে, পদবঞ্চিত অংশের নেতা এবং কমিটি থেকে পদত্যাগী সহ-সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন জানান, কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই তারা রোববার সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। তারা যেহেতু হামলা ও ভাংচুর করেছে মামলা তাদের বিরুদ্ধে হবে এটাই স্বাভাবিক।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মে শামসুল আলম তোফাকে সভাপতি এবং ফরহাদ ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা বিএনপির কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়। শামসুুল আলম সাবেক উপমন্ত্রী ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামী আব্দুস সালাম পিন্টু এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর ভাই। বিদ্রোহী(পদবঞ্চিত) গ্রুপের অভিযোগ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে তার ভাইকে সভাপতি ও তাদের অনুসারিদের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পরে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে চারজন কমিটি থেকে পদত্যাগ করে। বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ওই কমিটি যে কর্মসূচি নিবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন পদবঞ্চিত গ্রুপ।

(আরকেপি/এসপি/জুলাই ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test