E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রানীশংকৈলে এডিপির কাজ না করেই বিল তোলার অভিযোগ

২০১৭ জুলাই ২৯ ১৫:২৯:৪১
রানীশংকৈলে এডিপির কাজ না করেই বিল তোলার অভিযোগ

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরে (এলজিইডি) বাষিক উন্নয়ন কর্মসূচী(এডিবির-১ম,২য়,৩য়৪থ কিস্তির) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও মেরামতের কাজ না করেই নিয়োগকৃত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের কাজের বিল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলামের বিরুদ্বে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি সরজমিনে উপজেলার বিভিন্নস্থানে টেন্ডারকৃত কাজগুলো ঘুরে  দেখা যায়,এডিবির অধিকাংশই কাজ হয় নি।

উপজেলার ৪ নং লেহেম্বা ইউপি’র নিয়ানপুর আর্দশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সংস্কারের কাজ করার জন্য ১ লক্ষ ৫০হাজার টাকার টেন্ডার হয়। কিন্তু সে বিদ্যালয়ে কোন কাজই হয়নি। অন্যদিকে গত জুন মাসেই এ কাজের বরাদ্দকৃত টাকার বিল দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান প্রতিবেদককে জানান,আমার বিদ্যালয়ে কাজের জন্য কোন ঠিকাদার আসেননি। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম একদিন এসে বলেন তোমার প্রতিষ্ঠানের নামে একটি বরাদ্দ নিয়েছি। তাই তোমার প্রতিষ্ঠানে আমি ৭ হাজার ইট দিচ্ছে । ইচ্ছে হলে ইট নিতে পারো নাও নিতে পারো তবে এর থেকে বেশি দিতে পারবো না।

১ নং ধর্মগড় ইউপির চেকপোষ্ট জুনিয়র বিদ্যালয়ের গৃহ মেরামতের জন্য ১ লক্ষ টাকা টেন্ডার হয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয় নি। ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন,একদিন আমার কাছে একজন ঠিকাদার এসে বলেন আপনার বিদ্যালয়ের টেন্ডারকৃত কাজের বরাদ্দের ১ লক্ষ টাকার মধ্যে আপনাকে ৪৮ হাজার টাকা দিচ্ছি আপনি কাজ করে নিয়েন,এ টাকার উপর আমি আপত্তি জানালে ঠিকাদার বলেন এই টাকা না নিলে কিছু করার নাই। পরিশেষে বাধ্য হয়ে আমাকে টাকা নিতে হয়েছে।

উপজেলার আরাজী চন্দন চহট কমিউনিটি ক্লিনিকে ল্যার্টিন নির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা টেন্ডার হয় কিন্তু কাজ হয় নি। ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী বেলাল জানান,ঠিকাদার এসেছিলো ইট বালু নিয়ে এসে কাজ না করেই অজ্ঞাত কারনেই তিনি চলে গেছেন। এরপরে আর কোন কাজ হয়নি । এভাবে করে উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ বরাদ্দ হলেও সিডিউল অনুযায়ী অধিকাংশই কোন কাজ হয় নি।

স্থানীয় এলজিইডি সুত্রে জানা যায়,বাষিক উন্নয়ন কর্মসুচি(এডিবি) মোট ৪১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দে চলতি বছরের ১২ র্মাচ টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে যথা নিয়মে ৬ এপ্রিল লটারীরর মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় এবং কাজ শেষ করার জন্য সময় দেওয়া হয় ৪৫ দিনের।

নিয়োগকৃত ঠিকাদাররা নিয়মনুযায়ী কাজ করবে আর সে কাজ সরজমিনে দেখে বিল দিবে উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এ নিয়মের পুরোটাই ব্যর্তায় ঘটেছে রানীশংকৈল উপজেলায়। কাজ না করে বিল নিয়েছেন ঠিকাদাররা আর কাজ না দেখেই বিল দিয়ে দিয়েছেন প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা। কাজ নাদেখে বিল দেওয়া নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের উপর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের।

বক্তব্য নিতে উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলামের সাথে শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায় নি।

উপজেলা চেয়ারম্যান ও এডিবি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আইনুল হক জুন মাসেই কাজের বিল দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কাজ না করে বিল দেওয়া যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, বিষয়টি আমি জানি না,বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আগামী কাল থাকবে মসজিদ মন্দির নিয়ে।

(কেএএস/এসপি/জুলাই ২৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test