E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতালে হাটু পানি

২০১৭ আগস্ট ১৬ ১৭:১৭:৫৬
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতালে হাটু পানি

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : করতোয়া নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধিতে গোবিন্দগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বুধবার করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।  গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পশ্চিম চত্বরের বিভিন্ন অফিস, বাসাবাড়ি সহ উপজেলা হাসপাতালে হাটুপানি বিরাজ করায় জনগণ ও রোগীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিনিয়ত গোবিন্দগঞ্জের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ-পলাশবাড়ী সীমান্তে কিসামত চেরেঙ্গা ও ছোট দূর্গাপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে উভয় উপজেলার বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে কাইয়াগঞ্জ নামক স্থানে গোবিন্দগঞ্জ- দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এই সড়কে হালকা যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলাচল করলেও ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা পরিষদের পশ্চিম চত্বরের প্রাণীসম্পদ অফিস, পাবলিক হেলথ অফিস, বিএডিসি অফিসসহ বিভিন্ন অফিস বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। গোবিন্দগঞ্জ হাসপাতালে হাটু পানি বিরাজ করায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতাল থেকে চলেও যাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রওনাক আকতার জানান উপজেলার ৬০ টি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে ২৫টি বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান বন্যার পানি প্রবেশ করায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ভাঙনের ফলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, নদী তীরবর্তী সাপমারা, গুমানীগঞ্জ, মহিমাগঞ্জ, দরবস্ত , রাখালবুরুজ, হরিরামপুর, তালুককানুপুর, হরিরামপুর, মহিমাগঞ্জ, শালমারা ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩ টি ওর্য়াডের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলোর বাড়িঘর পানিতে প্রায় ৮০ ভাগ তলিয়ে যাওয়া সহ অনেক বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়ে ৪ সহাস্্রাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার পানিতে তলিযে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে স্কুল-কলেজ, বাঁধ, সড়ক ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র দরবস্ত ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৫ শতাধিক পরিবার।

এছাড়া অনেক এলাকার রাস্তাঘাট নিন্মাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেসব এলাকায় নৌকাই এখন চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হয়েছে। ক্ষেতের আখ, কলা, পটল, বেগুন সহ সদ্য লাগানো আমনের চারা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। কৃষি অফিসার সাহেরা বানু জানান মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৬হাজার ৫৫০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে পানি বৃদ্ধিতে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকায় নদী তীরবর্তী এলাকার লোকজন আতংকিত হয়ে পড়েছে।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে করেছেন গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, পৌরসভার মেয়র মোঃ আতাউর রহমান সরকার , উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীলাব্রত কর্মকার, গাইবান্ধা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম সহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ১ লক্ষ টাকা ও ৩৫ মেঃ টন চাল বরাদ্দ করে বিতরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(এসআরডি/এসপি/আগস্ট ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test