E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিশু অপহরণ : এসআইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

২০১৭ আগস্ট ২৪ ১৪:৫৭:২৮
শিশু অপহরণ : এসআইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : ছেলের কিডনির জন্য সাত বছরের এক শিশুকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কুড়িগ্রামের উলিপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিখোঁজের ১৭ দিন পর রংপুর শহরের মুন্সীপাড়ায় অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাড়া বাসা থেকে শিশু আরজিনাকে উদ্ধার করা হয়।

আরজিনার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কর্মকর্তার সন্তানের দেহে আরজিনার কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তাকে অপহরণ করা হয়। আয়শা বেগম নামের এক নারী শিশুটিকে কৌশলে রংপুরে নিয়ে যান এবং এসআই আবু বক্করের ভাড়া বাসায় দিয়ে আসেন।

আরজিনার স্বজনদের দাবি, এসআইয়ের ছেলের দুটি কিডনিই নষ্ট। আরজিনার শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তা ওই পুলিশ কর্মকর্তার ছেলের শরীরে প্রতিস্থাপনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।

শিশুটির চুল কেটে ছোট করে দেয়া হয়েছিল বলেও আরজিনার পারিবারের অভিযোগ।

শিশু আরজিনা জানায়, তাকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। দু’বেলা খাবার দেয়া হতো, চুলও কেটে দেয়া হয়। একদিন তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই আবু বক্কর বলেন, আমার পরিবার সম্পর্কে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আমরা ওই মেয়েকে কাজের মেয়ে হিসেবে বাসায় রাখি। তার হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না।

‘আমি রংপুরে থাকি না। কর্মসূত্রে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় আছি’ বলেন তিনি।

শিশুটির চুল কেটে ফেলা প্রসঙ্গে আবু বক্কর বলেন, আরজিনার মাথায় উকুন থাকায় আমার স্ত্রী তার চুল ছোট করে দিয়েছিল।

‘আমার ফ্লাটের নিচে এক চিকিৎসকের সঙ্গে কিছুদিন আগে ঝগড়া হয়েছিল। সেই চিকিৎসকের গ্রামের বাড়িও তার (শিশু আরজিনা) বাড়ির পাশে। তিনিই মূলত গুজবটি রটিয়েছেন। সবকিছুই সাজানো। তারা যেহেতু মামলা করেছে, তাই আমি আদালতের মাধ্যমেই মোকাবেলা করব’ যোগ করেন তিনি।

শিশু আরজিনার পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিশুটির বাবা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার হাজিপাড়া গ্রামের আক্কাছ আলী এবং মা কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের রুপার খামার গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে মরিয়ম বেগম। আরজিনাকে তার নানার কাছে রেখে দরিদ্র এ দম্পতি ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন। গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় শিশুটিকে তার নানী পাশের বাড়ির বৃদ্ধা বিবিজানের কাছে একটি কাজে পাঠান। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সারারাত না পাওয়ায় পরের দিন শিশুটির নানা উলিপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিশুটি নিখোঁজের ১২ দিন পর গত ১৮ আগস্ট রাত ৮টার দিকে উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলু শিশুটির পরিবারের কাউকে না জানিয়ে মাইক্রোবাসে করে রংপুরে যান এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে শনিবার ভোরের দিকে এলাকায় পৌঁছান। রংপুর শহরের মুন্সীপাড়ায় অভিযুক্ত পুলিশের ভাড়া বাসা থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে পরে পরিবারকে বুঝিয়ে দেন তিনি।

শিশুটির পরিবারকে না জানিয়ে রংপুর যাওয়া প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলু বলেন, ক্লিনিক থেকে যে চিকিৎসক তাকে ফোন দেন তিনি শিশুটির পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না। তাই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই রংপুরে যাই।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এস কে আব্দুল্লা আল সাইদ অপহরণ মামলা দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test