E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বালিয়াঘাট সীমান্তে চোরাই কয়লা জব্দ

২০১৭ আগস্ট ২৫ ১৫:৩২:২৮
বালিয়াঘাট সীমান্তে চোরাই কয়লা জব্দ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ওপেন পাচার করা হচ্ছে কয়লা, চুনাপাথর, মদ, গাজা, হেরোইন ও ইয়াবা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় নানা নাটকীয়তার পর লাকমা এলাকার দিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে পাচাঁর করা ৪০০ বস্তা কয়লার মধ্যে ৫৬ বস্তা চোরাই কয়লা আটক করেছে বিজিবি।

এ ব্যাপারে টেকেরঘাট ও বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনের বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবাধে কয়লা পাচার করে পাচারকৃত চোরাই কয়লার প্রতি বস্তা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে ৭০টাকা, টেকেরঘাট কোম্পানী কমান্ডারের নামে ৩০টাকা, থানার নামে ৫০টাকা, কাস্টমসের নামে ৫০টাকা, দুই সাংবাদিকের নামে ২০টাকা ও রাস্তা মেরামতের নামে ৫০ টাকাসহ মোট ২৮০ টাকা চাঁদা নিচ্ছে চাঁদাবাজি মামলার (জিআর-১৬৩/০৭ইং) জেলখাটা আসামী বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া ও তার একান্ত সহযোগী বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী লাকমা গ্রামের চোরাচালানী আব্দুল হাকিম ভান্ডারী, তিতু মিয়া ও রতন মহলদার, মানিক মিয়া গং।

এছাড়াও এই লাকমা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে চুনাপাথর পাচাঁর করে প্রতিট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবির ২ ক্যাম্পের নামে ২৫০টাকা, থানার নামে ১২০টাকা,সাংবাদিকদের নামে ৮০টাকা, কাস্টমসের নামে ১০০ টাকাসহ ৫৫০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করাসহ টেকেরেঘাট ও লাকমাছড়া দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শত ট্রলি বল্ডার ও সিংগেল পাথর পাচাঁর করার জন্য প্রতিট্রলি পাথর থেকে বিজিবির ২ ক্যাম্পের নামে ১০০টাকা, থানার নামে ৭০টাকা,সাংবাদিকের নামে ২০টাকাসহ ২০০টাকা চাঁদা নিচ্ছে তারা। অন্যদিকে এই বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট গ্রামের হাছান আলীর নেতৃত্বে তার বাড়ির পিছনে অবস্থিত ভারতীয় চোরাই পথ দিয়ে অবাধে কয়লা পাচাঁর করা হচ্ছে।

একই গ্রামের বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী মাদক,হুন্ডি,চাঁদাবাজি ও বিজিবির ওপর হামলার মামলাসহ মোট ৬টি মামলার জেলখাটা আসামী কালাম মিয়ার নেতৃত্বে ভারত থেকে ট্রলি ও ঠেলাগাড়ি দিয়ে প্রতিদিন ওপেন চুনাপাথর,বল্ডার সাদা পাথর,কয়লা ও মদ,গাজা,হেরুইন পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে নদীপথে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোসহ প্রতি নৌকা থেকে বিজিবি,থানা,সাংবাদিক ও কাস্টমসের নামে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে।

গত ২৩ আগস্ট (বুধবার) দুপুর ১টায় ভারত থেকে চোরাই কয়লা পাচাঁর করার সময় লালঘাট গ্রামের মতিউর রহমান (৪৫) নামের এক চোরাচালানীকে ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় বিএসএফ। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিকাল ৩টায় ওই চোরাচালানীকে ফেরত এনে তার বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ছেড়ে দেয় বিজিবি।

গত বছরের এই সময় বালিয়াঘাট(নতুন বাজার) গ্রামের চোরাচালানী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে লালঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করার সময় চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে বশির মিয়া (২৮) নামের এক চোরাচালানীর মৃত্যু হয়।

তার আগে লাকমা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করার সময় চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে আরো ২ চোরাচালানীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে চোরাচালানীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের লাকমা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ঠেলাগাড়ির মাধ্যমে বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনে নিয়ে মজুদ করে। আর চুনাপাথর ও বল্ডার,সিংগেল পাথর পাচাঁর করে ট্রলি দিয়ে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত পাটলাই নদীতে নিয়ে নৌকা বোঝাই করে। কিন্তু এসব অবৈধ মালামাল আটক করেনা বিজিবি।

এ ব্যাপারে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার ফিরোজ বলেন,কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁরের ব্যাপারে আপনারা আমাদের সাথে কথা না বলে ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেন। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন বলেন,সীমান্ত চোরাচালানের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(জেএভি/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test