E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তারেক রহমানের বক্তব্য নিয়ে তিন মন্ত্রীর গরম বক্তৃতা

২০১৪ এপ্রিল ১২ ১৬:১১:৪৪
তারেক রহমানের বক্তব্য নিয়ে তিন মন্ত্রীর গরম বক্তৃতা

স্টাফ রিপোর্টার : শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথম 'অবৈধ প্রধানমন্ত্রী' বলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার দাবি উঠলেও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, রাষ্ট্র কোনো মামলা করবে না।

শনিবার সকাল ১১টার দিকে মাদারীপুর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

লন্ডনে তারেক জিয়ার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে শাজাহান খান বলেন, "উন্মাদরা অনেকে কিছুই বলে, অনেক কিছুই করে। তাই তারেকের বক্তব্য নিয়ে রাষ্ট্র কোনো মামলা করবে না, তবে কোনো নাগরিক যদি কিছু করে এটা তাদের ব্যাপার।"

তিনি অভিযোগ করেন, "যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের বাঁচানোর ষড়যন্ত্র করে গোটা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এতে বাংলাদেশকে ধ্বংসের মুখোমখি দাঁড় করিয়েছে। সেই একই উদ্দেশে তারেক এসব কথা-বার্তা বলছে।" মন্ত্রী আরো বলেন, তার এ বক্তব্যের মধ্যদিয়ে গোটা জাতির স্বাধীনতাকে নসাৎ করা হয়েছে। তারেক জিয়ার চরিত্রই হলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা। তার চরিত্রই হলো অবৈধ অর্থ আত্মসাত করা, দুর্নীতি করা।

এদিকে, বিএনপি চেয়ারর্পারসন বেগম খালেদা জিয়াকে 'শয়তানের বংশধর' এবং তার ছেলে তারেক রহমানকে 'শয়তানের বাছুর' বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেছেন, "খালেদা শয়তানের বংশধর। তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত এদেশে কোনো শান্তি আসবে না। এখন তাকে সাংগঠনিকভাবে শায়েস্তা করতে হবে।"

শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘পহেলা বৈশাখ, ১৫ এপ্রিল কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস’ উপলক্ষে এক প্রস্তুতি বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। মায়া বলেন, "শয়তানের বাছুর তারেক রহমান। তারেক তো মুক্তিযুদ্ধের সময় শয়তানের সঙ্গে ক্যান্টনমেন্টে ছিল। সে তো মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। এই বাছুর কোনো পাগল না। বাছুর যা বলেছে তা হলো সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা বুঝতে পেরেছে আন্দোলন করে শেখ হাসিনার কিছু করা যাবে না। তাই তারা মিথ্যাচার শুরু করেছে। তাই মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের লড়াই শুরু করতে হবে।"

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "এমন কোনো শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে। আমরা পাঁচ বছরের আগে ক্ষমতা থেকে নামব না। আওয়ামী লীগের ইতিহাস ধৈর্যের ইতিহাস। মহানগরের ইতিহাস কলঙ্কমুক্ত ইতিহাস। তারেক লন্ডনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে জাতির ওপর যে কলঙ্ক লেগে দিয়েছে তা থেকে মুক্তি পেতে হলে এ বাছুরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।"

অন্যদিকে, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, পাকিস্তানিরা একবার বাঙালিদের পাকিস্তানি বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আবার ৭৫‘র পর জেনারেল জিয়াসহ অন্য সামরিক শাসক এবং সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের নাম পাল্টানোর চেষ্টা করছেন, ইতিহাস পাল্টানোর চেষ্টা করছেন। শনিবার সকাল ১১টায় জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে কুষ্টিয়ার মিরপুরে দু’দিনব্যাপী শিশুমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতীয় সংসদে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারি দল সমালোচনা করে নিজেদের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছে- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু দাবি করেন, তারাই সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য জাতীয় সংসদ নেতৃত্ব দিচ্ছে। সুতরাং সঠিক ইতিহাস, সঠিক তথ্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের একশ' ভাগ অধিকার রয়েছে।

ইনু খালেদা জিয়াকে 'ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ের লোক' আখ্যা দিয়ে বলেন, আপনি আস্তাকুঁড়ে বসে ইতিহাস নিয়ে যত ঘাঁটাঘাটি করবেন তত দুর্গন্ধ ছড়াবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনকে সতর্ক করে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি যদি এ পথ পরিহার না করেন তাহলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ তিনি ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, "শেখ মুজিব যেভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, একইভাবে তার মেয়েও বর্তমানে অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন।"

ওই মন্তব্যের পর থেকেই তারেক রহমানের তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রাখছেন সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা। গতকাল সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারেক রহমানকে আহাম্মক, অর্বাচীন ও অর্ধশিক্ষিত বলেছেন মন্ত্রী ও এমপিরা। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে বিচার দাবি করেন তারা।

(ওএস/এটি/ এপ্রিল ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test