E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘ভারত বয়কট’ ডাক দিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে বিএনপির ইফতার

২০২৪ মার্চ ২৬ ২২:৪৭:৫৫
‘ভারত বয়কট’ ডাক দিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে বিএনপির ইফতার

স্টাফ রিপোর্টার : ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিলেও ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার পার্টি করেছে বিএনপি। বয়কট ডাক দিয়েও ভারত সংশ্লিষ্টতা বয়কট করতে পারেনি দলটি। ইফতার পার্টিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন না দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। যিনি নিজের গায়ের ভারতীয় চাদর মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

অনেকদিন ধরেই দেশের একটি জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। আর তাতে সংহতি জানিয়ে বয়কটের ডাক দেয় বিএনপি। তাদের মতে, দেশকে স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে ভারত। এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে গত ২০ মার্চ ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেন রুহুল কবির রিজভী।

তবে এই কাণ্ডের কয়েকদিন আগে দলের নীতি নির্ধারক স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান ভারতের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে’ পাশে থাকেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যে ভাবে ভারতকে পাশে পাওয়া গিয়েছিল, ‘গণতন্ত্রের লড়াই’-য়েও ভারতের সেই ভূমিকা চান মঈন খান।

এমন পরিস্থিতি রবিবার কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ইফতারে জাতিসংঘ, এনডিআই, আইআরআই এবং ৩৮টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আছেন, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন ল্যাফেইব, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্দির সিম্পসন, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আখিম ট্রোসটার, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ প্রমুখ। ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ছাড়াও হাইকমিশনের আরও কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ভারত বয়কট প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন- এগুলো হিপোক্রেসি (ভণ্ডামি) ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভারতের পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের গরুর মাংস দিয়ে সেহরি খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। তারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চিরাচরিত পাকিস্তানি কায়দায় ভারতের বিরোধিতা শুরু করেছে বিএনপি। তারা যখন কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না পায়, তখনই এই একটা ইস্যু সামনে নিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও করেছে, এখন শেখ হাসিনার আমলে এবারও তাই করছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। কিন্তু এখনো তারা এবং তাদের সংগঠন রাজনীতি করে চলেছে। এখন আবার তারা সম্প্রতি সময়ে নতুন করে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ স্লোগান তুলেছেন তারা। এই স্লোগান দিয়ে তারা কার্যত ওই পাকিস্তানি আমলের রাজনীতিকেই আবার বাংলাদেশে চালু করার চেষ্টা করছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test