E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

২০২১ আগস্ট ২৮ ১৯:৪৩:০১
কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী আর নেই

নিউজ ডেস্ক : ক্যানসারে আক্রান্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শনিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকায় নিজ বাসায় তিনি মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুলবুল চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন চিত্রগ্রাহক কামরুল মিথুন।

গত ছয় মাস আগে বুলবুল চৌধুরীর ক্যানসার ধরে পড়ে। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেন। কিন্তু ক্যানসার তার শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। কেমো নেওয়ার মতো তার শারীরিক অবস্থাও ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় চলছিল তার চিকিৎসা। সবশেষ ক্যানসারের কাছে পরাজিত হলেন তিনি।

অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত বুলবুল চৌধুরীর ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়ালেখা করেছেন তখনকার জগন্নাথ কলেজে।

জগন্নাথ কলেজে গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় ‘জোনাকি ও সন্নিকট কেন্দ্র’ গল্পের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তার প্রথম লেখা বের হয় ১৯৬৭ সালে। আর তার প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ `টুকা কাহিনী`।আত্মপ্রকাশের শুরুতেই এ গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্য জগতে সাড়া ফেলতে সক্ষম হন।

তিনি নিজের অধিকাংশ লেখায় গ্রামীণ জীবনকে নানা আঙ্গিকে যেমন উপস্থাপন করেন, তেমনি নগরায়নের জটাজালও তার লেখালেখিতে অনন্য বিচিত্রতায় উঠে আসে। নগরের নানা রেখা-উপরেখা ছুঁয়ে গেলেও গ্রামীণ অভিজ্ঞতায় তার প্রধান অবলম্বন খোলা চোখে প্রবহমান জীবন দেখা। সেই জীবনের ভেতর দিয়ে বুলবুল চৌধুরী ঢুকে পড়েছেন মানুষের অন্দরমহলে। প্রাণস্পর্শী দরদে বিন্যস্ত করেছেন সাহিত্যে।

লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে বুলবুল চৌধুরী সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বহুদিন। কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন দৈনিকে।

তার প্রকাশিত ছোট গল্পগ্রন্থগুলো হলো `টুকা কাহিনী`, `পরমানুষ`, `মাছের রাত` ও `চৈতার বউ গো`।

তার উপন্যাসগুলোর তালিকায় রয়েছে-`অপরূপ বিল ঝিল নদী`, `কহকামিনী`, `তিয়াসের লেখন`, `অচিনে আঁচড়ি`, `মরম বাখানি`, `এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে`, `ইতু বৌদির ঘর` এবং `দখিনা বাও`। তার আত্মজৈবনিক দুটি গ্রন্থের নাম `জীবনের আঁকিবুঁকি` ও `অতলের কথকতা`।

`গাঁওগেরামের গল্পগাথা`, `নেজাম ডাকাতের পালা`, `ভালো ভূত` আর `প্রাচীন গীতিকার গল্প` নামক কিশোর গ্রন্থের রচয়িতাও তিনি।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে বুলবুল চৌধুরী একুশে পদক লাভ করেন। আর বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান ২০১১ সালে। এছাড়া তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।

(ওএস/এএস/আগস্ট ২৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test