সেই থেকে
সিদ্ধার্থ সিংহ
এক ছিল কুকুর। তার ছিল বিরাট জমিদারি। সেই জমিদারিতে অনেক পশুপাখি কাজ করত। প্রধান কর্মচারী, মানে ওই জমিদারের নায়েবমশাই ছিল এক বিড়াল।
একদিন কুকুর মনে মনে ভাবল, বয়স তো অনেক হল, সারাজীবন শুধু বিষয়-সম্পত্তি আগলেই বসে রইলাম। নিজের জমিদারির সীমানার বাইরে গেলামই না। এই দুনিয়ার কিছুই দেখা হল না। চলাফেরার শক্তি থাকতে থাকতে এ বার একটু দেশ-বিদেশ ঘুরে এলে কেমন হয়! সেই সঙ্গে তীর্থ-দর্শনও করে আসা হবে। বিড়ালের ওপরে সমস্ত জমিদারি দেখাশোনা করার ভার দিয়ে কুকুরমশাই বেরিয়ে পড়ল।
কুকুরমশাই চলে যেতেই বিড়াল ভাবল, এমন মনিবের কাছে চাকরি করি যে, একটা দিনও ছুটি পাওয়া যায় না। এত দিনে একটা সুযোগ পেয়েছি। জমিদারবাবু যখন নেই--- যাই, এই ফাঁকে কিছু দিন দেশের বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসি। কুকুরের প্রধান বরকন্দাজ ছিল একটা ইঁদুর। বিড়াল তাকে ডেকে বলল, এই শোন, আমি কয়েক দিনের জন্য একটু দেশে যাচ্ছি। আমি যে ক'টা দিন থাকব না, তুই কিন্তু সেই ক'টা দিন এ দিকটা একটু সামলাস। বলেই, বিড়াল দেশে চলে গেল।
এ দিকে এত বড় জমিদারি একার পক্ষে দেখভাল করা সত্যিই খুব কঠিন কাজ। ইঁদুরের ওপর ভীষণ চাপ পড়ে গেল। সে একদিন তিতিবিরক্ত হয়ে ভাবল, বাহ্! সবারই ছুটি আছে, শুধু আমারই নেই, না? ঠিক আছে, আমাকে থাকতে বলেছে তো, আমি থাকব। কিন্তু কোনও কাজ করব না। এই ক'টা দিন শুধু পড়ে পড়ে ঘুমব।
সত্যিই তাই করল সে। কেবল ঘুমিয়েই দিন কাটাতে লাগল। কোনও দিকেই নজর দিল না। এই সুযোগে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে খেতের সমস্ত ফসল খেয়ে যেতে লাগল। তার দেখাদেখি বাকি কর্মচারীরাও ফাঁকি দিতে শুরু করল। ফাঁকি মানে, হাজিরা দিতে লাগল ঠিকই, কিন্তু কেউই কোনও কাজে হাত লাগাল না। ফলে জমিদারবাড়িতে অন্য কাজ তো দূরের কথা, ঝাঁট পড়াও বন্ধ হয়ে গেল। যত রাজ্যের ধুলোবালি দিন দিন জমতে লাগল। আগাছায় ছেয়ে গেল গোটা বাগান। দামী দামী ফুলের গাছ শুধু একটু যত্নের অভাবে একেবারে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল।
দেখতে দেখতে বছর ঘুরতে লাগল। অবশেষে একদিন কুকুরমশাই দেশে ফিরে এল। বাড়িঘর, বাগান আর খেতের অবস্থা দেখে সে তো রেগে একেবারে অগ্নিশর্মা। হুংকার দিয়ে বলল, এ কী হাল হয়েছে আমার বাড়ির? বিড়ালকে সব দেখভাল করার ভার দিয়ে গিয়েছিলাম। তাকে তো দেখছি না! সে হতভাগা গেল কোথায়?
কুকুরমশাইয়ের চিৎকার শুনে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে এল ইঁদুর। তাকে দেখে কুকুরমশাই গর্জন করে বলল, এই হল আর এক হতভাগা। আমার বাড়িঘরের এ রকম হাল কেন হল রে? কোনও দিকে নজর দিসনি তোরা, না? বিড়াল কোথায়?
ইঁদুর কাচুমাচু মুখ করে বলল, আজ্ঞে, আপনি চলে যাবার পরেই তো নায়েবমশাই দেশে চলে গেলেন। আমাকে বলে গেলেন, ক'দিন বাদেই ফিরে আসবেন। কিন্তু কোথায়! বছর ঘুরতে চলল, অথচ এখনও তো তার ফেরার কোনও নাম নেই!
কুকুর বলল, যাও। এক্ষুনি তার বাড়িতে যাও। সে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থাতেই তাকে ধরে নিয়ে এসো। আমি তাকে মজা দেখাচ্ছি।
খানিক বাদেই তার বাড়ি থেকে বিড়ালকে ধরে নিয়ে এল ইঁদুর। বিড়াল আসতেই কুকুরমশাই হুংকার দিয়ে বলল, তোমার ওপরে আমার ঘরবাড়ি আর বিষয়-সম্পত্তি দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলাম। তুমি দেখছি, সেই দায়িত্ব চমৎকার ভাবে পালন করেছ। হতভাগা, তোমাকে আমি কঠিন শাস্তি দেব।
বিড়াল সঙ্গে সঙ্গে ইঁদুরের দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে বলল, কী রে? কী শুনছি আমি? তোর ওপরে দেখাশোনার ভার দিয়ে দুটো দিনের জন্য আমি একটু দেশে গিয়েছিলাম। আর তুই কোনও দিকে নজর দিসনি? শুধু ফাঁকি দিয়েছিস? দাঁড়া, আমি তোর ব্যবস্থা করছি। বলেই, ইঁদুরের দিকে তেড়ে গেল বিড়াল। ইঁদুর তো বেগতিক দেখে দে ছুট। বিড়ালও তার পিছনে ধাওয়া করল। কিন্তু তাকে ধরতে পারল না। সরু গর্তের মধ্যে ঢুকে ইঁদুর উধাও হয়ে গেল।
বিড়াল চিৎকার করে বলল, পালাবি কোথায়? একদিন না একদিন তো তোকে হাতের কাছে পাবই, তখন একেবারে মজা দেখিয়ে ছাড়ব।
ওর কীত্তি দেখে কুকুরমশাই বলল, শোনো, ইঁদুরকে তো আমি কোনও দায়িত্ব দিয়ে যাইনি। কাজেই ওকে আমি কিছু বলব না। আমি তোমাকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলাম, তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করোনি। ফলে ওকে নয়, আমি তোমাকেই সাজা দেব। কঠোর সাজা। বলেই, এক লাফে কুকুরমশাই ঝাঁপিয়ে পড়ল বিড়ালের ওপরে। ঘাড় মটকে দেবে বলে। সেটা টের পেয়েই নিজের প্রাণ বাঁচাতে পাইপাই করে বনের দিকে ছুটতে লাগল বিড়াল। কুকুরমশাইও তার পিছু ছাড়ল না। বিড়ালও দৌড়তে দৌড়তে শেষ পর্যন্ত একটা উঁচু গাছের মগডালে উঠে পড়ল।
কুকুরমশাই তখন হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, আচ্ছা, আমাকে ফাঁকি দিবি ভেবেছিস? ঠিক আছে, তুই তো আর চিরকাল গাছের ওপরে বসে থাকতে পারবি না। তোকে একদিন না একদিন নীচে নামতেই হবে। তখন?
সেই থেকে শুরু হল কুকুরের সঙ্গে বিড়াল আর বিড়ালের সঙ্গে ইঁদুরের শত্রুতা। সে শত্রুতা আজও সমানে চলেছে। তাই আজও ইঁদুরকে দেখলেই বিড়াল তাড়া করে। আর বিড়ালকে দেখলেই কুকুর। অথচ ইঁদুর আর কুকুরের মধ্যে কিন্তু কোনও শত্রুতা নেই। অন্তত আজ পর্যন্ত তো নেই-ই।
(এস/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- পাংশায় বিএনপির দু'পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার ১১
- বয়স বাড়িয়ে বাল্যবিয়ে, কনের মা ও কাজীকে জরিমানা
- ফরিদপুরে ৭১ টেলিভিশনের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
- খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ফরিদপুরে জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- বিশ্বাস বিল্ডার্সের পরিচালক নূরে আলম বিশ্বাসের সাথে ইসলামী আন্দোলনে বাংলাদেশ’র নেতাদের মতবিনিময়
- সাতক্ষীরায় সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- পেঁয়াজ সংরক্ষণ ঘরের জন্য আবেদনপত্র জমা দিতে আসা কৃষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ
- ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে সরকারি জায়গার গাছ কাটার অভিযোগ
- ‘শিক্ষা গ্রহণ না করায় বাঙালি মুসলমান সমাজ ১শ' বছর পিছিয়ে গেছে’
- বাগেরহাটে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
- বাগেরহাটে দুই শতাধিক রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা
- ‘যারা সৎ ও যোগ্য, মানুষের কল্যাণে কাজ করবে, তাদেরকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিবে কেন্দ্রীয় বিএনপি’
- মহম্মদপুরে গরু ব্যবসায়ীর উপর হামলা, ৪ লাখ ৬৫ হাজার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
- মহম্মদপুরে মায়ের সাথে অভিমান করে শিশু কন্যার আত্মহত্যা
- ফরিদপুরের কানাইপুর বর্ণমালা স্কুলে ফল উৎসব
- খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতার ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল
- ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে দেশে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছিল’
- বাংলাদেশের জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
- আলোকচিত্রী চঞ্চল মাহমুদ আর নেই
- বৃষ্টি বাধায় ড্রয়ের পথে গল টেস্ট
- বিচার বিভাগের জাতীয় সেমিনার রবিবার, থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা
- ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না জাতীয় মুক্তি হবে না’
- ‘আমরা চাই তিনি বিচারের মুখোমুখি হোন’
- আগারগাঁও এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
- ইরানের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রচারে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ
- চুয়াডাঙ্গার দুটি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে, ভোটার উপস্থিতি কম
- থেকে যাব না থাকাতে
- ঈদগাহ মাঠে পাওয়া গেলো ৩৪৩ ভরি স্বর্ণ
- ফরিদপুরের বইমেলায় পীযূষ সিকদারের ‘চান্দের হাট’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- ব্যাংক ডাকাতি: রুমা ও থানচিতে ৪ মামলা
- পেঁয়াজ সংরক্ষণ ঘরের জন্য আবেদনপত্র জমা দিতে আসা কৃষকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ
- বাগেরহাটে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
- ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে দেশে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছিল’
- নাটোরে খ্রিস্টানদের জমিতে সরকারী নির্মাণ কাজ, এসিল্যান্ড ও পৌর প্রশাসকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
- রূপকথার গল্প
- সোনাগাজীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
- ‘যারা সৎ ও যোগ্য, মানুষের কল্যাণে কাজ করবে, তাদেরকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিবে কেন্দ্রীয় বিএনপি’
- আড়াইহাজারে সড়ক নির্মাণে বাধা, চাঁদা না দেওয়ায় ৪ জনকে পিটিয়ে আহত
- ফসলি জমির মাটি কাটতে যমুনার বুকে নয়া সড়ক
- সাতক্ষীরায় সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- ঝিনাইদহে ট্রাকচাপায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু
- ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টির আভাস
- ৫২ বছরেও বিচার পায়নি গোপালগঞ্জের ৪ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার
- আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণে ব্যয় বাড়ল ৯ কোটি টাকা
- ‘অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে’