E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নভেরা আহমেদের চিরপ্রস্থান

২০১৫ মে ০৭ ১৫:১৮:১৩
নভেরা আহমেদের চিরপ্রস্থান

নিউজ ডেস্ক : কয়েক দশক ধরে অন্তরালে থেকে বিদায় নিলেন ভাস্কর নভেরা আহমেদ। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্সে বসবাস করছিলেন নভেরা আহমেদ।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের নিকটবর্তী শথমেলে দ্বীপে নিজের বাড়িতে মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় ঘুমের মধ্যে নভেরা আহমেদ মারা গেছেন বলে তার অফিসিয়াল ফ্যান পেইজ উল্লেখকারী একটি পেইজে এক পোস্টে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, আগামী সোমবার সকালে শথমেলে সমাধিস্থলে নভেরার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী বুধবার রাতে জানান, খ্যাতনামা ভাস্কর নভেরার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম অগ্রদূত নভেরাকে ১৯৯৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।

দীর্ঘ চার দশক পর গত বছর জানুয়ারিতে প্যারিসে তার শিল্পকর্মের প্রদর্শনী হয়। তার আগে ১৯৭৩ সালে জুলাই মাসে প্যারিসে তার সর্বশেষ প্রদর্শনী হয়েছিল।

শিল্পী হাশেম খান এক লেখায় বলেছেন, নভেরার বাবা ছিলেন এক্সাইজ অফিসার। ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) কুমিল্লায় বদলি হন তিনি।

তার আগে কলকাতায় নভেরার শৈশব কাটার ইঙ্গিত পাওয়া যায় ওই লেখায়। তার পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে।

চারুকলার অধ্যাপক হাশেম খানের দেওয়া তথ্যমতে, ভাস্কর্য বিষয়ে পড়াশোনা করতে ১৯৫১ সালে লন্ডন যান নভেরা। লন্ডনের ক্যাম্বারওয়েল আর্ট স্কুলে লেখাপড়া করেন তিনি। সেখানেই শিল্পী হামিদুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় তার।

১৯৫৭ সালে হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু করেন।

“শহীদ মিনারের জন্য অনেক মডেল জমা পড়লেও হামিদ-নভেরার ডিজাইনটিই নির্বাচিত হয়। প্রায় একমাস খেটে দুজনে ডিজাইনটি তৈরি করেছিলেন। ’৫৭-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কাজ চলে ’৫৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু শেষ হওয়ার আগেই মার্শাল ল জারি হওয়ায় শহীদ মিনারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।”

১৯৫৯ কিংবা ৬০ সালে নভেরা পাকিস্তানের লাহোর চলে যান বলে হাশেম খান জানান।

১৯৬১ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল এক্সিবিশন অব পেইন্টিং স্কাল্পচার অ্যান্ড গ্রাফিক আর্টস নামে এটি প্রদর্শনীতে তার ছটি ভাস্কর্য স্থান পেয়েছিল। প্রদর্শনীতে ‘চাইল্ড ফিলোসফার’ নামে তার একটি ভাস্কর্য ‘বেস্ট স্কাল্পচার’ পুরস্কার পায়।

হাশেম খানের তথ্য অনুযায়ী, লাহোরে কয়েক বছর থাকার পর নভেরা চলে যান ভারতের মুম্বাইয়ে। সেখান থেকে প্যারিসে গিয়ে আবার ফিরেছিলেন লাহোরে। তবে বেশি দিন সেখানে থাকেননি তিনি।

বিভিন্ন দেশ ঘুরে শেষে প্যারিসেই স্থায়ী হন নভেরা আহমেদ।

নভেরার মৃত্যুর খবর জানানো ফেইসবুক পেইজে প্যারিসপ্রবাসী চিত্র সমালোচক ও নভেরা আহমেদের শেষ জীবনের ঘনিষ্ঠজন আনা ইসলামের একটি লেখা রয়েছে, যেখানে ১৯৩৯ সালে নভেরা আহমেদের জন্ম হয়েছে বলে বলা হয়েছে।

তবে হাশেম খানের লেখায় ১৯৩০ সালে নভেরার জন্ম হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

(ওএস/এএস/মে ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test