E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বীথি চট্টোপাধ্যায় এর কবিতা

২০১৫ সেপ্টেম্বর ০১ ১৫:১৭:১৯
বীথি চট্টোপাধ্যায় এর কবিতা






 

নিজস্ব দিনলিপি

দেখেছি রাত্রি, আকাশে ফুটছে তারা
আসছে যাচ্ছে, ঝরেও পড়ছে কতো,
জন্মের ঠিক থাকে না, আমার-ও নেই
একটা ছোট্ট তেঁতুলচারার মতো।

পথের কুকুর যেভাবে তাকায়; যদি,
বিস্কুটভরা কোনো হাতে থাকে
চায়ের দোকান ঘেঁষে যেভাবে সে শোয়
সেভাবেই আমি নিয়েছি জীবনটাকে।

দু-চারটি মেঘ, কয়েকটি বাজে কথা
অনেক মেরেছে, ভয়-ও পেয়েছে কতো-
এসেছে গিয়েছে; থেকে গেল শুধু প্রেম
মাথায় আলতো আশীর্বাদের মতো।

ছেঁড়া খাতা থেকে কাটাকুটি, মুখে রক্ত
মুখের খাবার দু-চারটি থাপ্পড়
বিস্কুটভরা ঠোঙা পাশে সকরুণ
পথের কুকুর, ফুটপাতে হোলও ভোর।

ফুটপাত জুড়ে বেঁচে আছি আশ্চর্য
রোদ, জল, ঝড়, পোস্টার পলিথিন,
দু-চারটি মেঘ, আকাশের কিছু তারা
ঝরেও প্যড়েছে প্রতিদিন একদিন।

সবুজ বিপ্লব

বসন্তের গাছে সবুজ বিপ্লব
রাত্রে জ্বলে কত ছোট তারা,
কিছু থাকবে না, শুধুই পড়ে পাওয়া
দু-তিনখানা ঘোর চুমু ছাড়া।

চাঁদনী রাত নামে, সঙ্গে প্রেম নিয়ে
পাবকশিখা হয়ে উঠছে মন,
নেভাতে পারবে না, বাতাস সরে আসে
আমার ভেঙে পড়া এই জীবন।

একটু তাপ বাড়ে, আকাশ মাঠে মেশে
আকাশ আরো নীলাভ হয়,
দখিন হাওয়া নিয়ে রঙের কামকলা
কেউতো পৃথিবীতে কারুর নয়।

কোথাও কিভহু নেই, কয়েকদিন পর
সবাই যাবে সে তো জানা কথা,
কিন্তু প্রতিবার অবাক করে দেয়
একটি চুম্বন ব্যাকুলতা...

গীতাঞ্জলী

একটি কথা সবাই জানি, মুখেও বলি
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন গীতাঞ্জলী।
গীতাঞ্জলী ছাড়লে লোকে কোথায় যাবে?
জীবনদায়ী এমন লেখা আর কি পাবে?
সত্যি ক-জন মনের জোরে বলবে বলো?
দুঃখ থেকে শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলো।
ভয় পেয়ো না, যা বলছে টা বলুক লোকে
নিজের জীবন দেখতে শেখো নিজের চোখে।
পদ্মাপারে গাছের ছায়া নদীর জলে;
সূর্য উঠে নতুন করে লিখতে বলে-
ধুলো উড়িয়ে ঝড়ের মতো দু-চারটি গান
দিনের শেষে ফেরত দেবে সব অপমান,
পুরোনো কথা; নতুন করে আবার বলি
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন গীতাঞ্জলি।


দাঁড়াও পথিকবর

[ফ্রান্সের মার্সেই শহরে অভুক্ত থেকেছেন কবি মধুসূদন ও তাঁর সংসার]

এস্টেট থেকে টাকা আসছে না হাতে
বাচ্চারা প্রায় কিছুই খায়নি রাতে,
না-পেলে খাবে কী? শুধু কটা বাসি রুটি...
পড়ে আছে দেখে, শুতে গেছে গুটিগুটি।

রাত শেষ হয়ে সূর্য ওঠার পরে
কী করে উনুন জ্বলবে কবির ঘরে?
তারা ঝিকমিক করে ফ্রান্সের রাতে
টাকা নেই শুধু সনেট আছে হাতে।

হিন্দু কলেজ বিলেতে ব্যারিস্টারি
রক্তে লুকোনো যশোরের জমিদারি,
বাংলা কবিতা তোলপাড় করে দিয়ে
যিনি বসবেন মেঘনাদবধ নিয়ে।

অভুক্ত তিনি ফ্রান্সের উপকূলে
একটা লাইনে দুনিয়া উঠছে দুলে,
চিঠি লিখেছেন প্রিয়তম বন্ধুকে
সাগরদাঁড়ির ছেলেটি শুকনো মুখে।

-বাচ্চারা প্রায় কিছুই খায়নি রাতে
টাকা নেই শুধু সনেট আসছে হাতে...


পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test