E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে প্রথম ওয়ানডে আজ

২০১৪ আগস্ট ২০ ১১:২২:৩৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে প্রথম ওয়ানডে আজ

স্পোর্টস ডেস্ক : দেশের বাইরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার জন্য বাংলাদেশের প্রথম পছন্দ কোথায় হওয়া উচিত? খুব ভাবনা-চিন্তা না করে কেউ যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম বলে দেন, তাতে ভুল হবে না। বরং আদর্শ উত্তরও বলা যেতে পারে।

বছরের শুরু থেকে অধোগতির ক্রিকেটের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়া, এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে ভরাডুবি, জুনে দ্বিতীয় সারির ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজেও ব্যর্থতার জয়গান।

নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই যেন ভুলতে বসেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। এমন নাভিশ্বাস পরিস্থিতিতে আবারও মাঠের ক্রিকেটে ফেরার জন্য মুশফিকুর রহীম-তামিম ইকবালদের কাছে প্রিয় জায়গা হতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজই।

জিম্বাবুয়ের মাটিতে অনেক সাফল্য থাকলেও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ বাংলাদেশের জন্য সবসময় পয়মন্ত জায়গা। কারণ এই দ্বীপ দেশে পাওয়া সাফল্যগুলোর অন্য উচ্চতায় আসীন। একটু স্মৃতিকাতর হলেই মনে পড়বে ক্যারিবিয়ানে বাংলাদেশ দলের সফলতার তালিকা।

২০০৪ সাল বাংলাদেশের প্রথম ওয়েস্ট সফর। ব্রায়ান লারার দলের বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে টেস্ট ড্র করল হাবিবুল বাশারের দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ।

পরে দক্ষিণ আফ্রিকাও শিকার হয় টাইগারদের। ২০০৯ সালে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে, টেস্ট সিরিজ হারায় বাংলাদেশ। সেটিই ছিল দেশের বাইরে টাইগারদের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের ঘটনা।

২০১৪ সালের দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজ হতে পারে টাইগারদের বড় অবলম্বন। আর এখন সেই অবলম্বন আঁকড়ে ধরেই আছে বাংলাদেশ দল। ৩৭ দিনের সফরে ক্যারিবিয়ানে আছে মুশফিকুর রহীমের দল।

সফরের মূল লড়াইয়ে আজই মাঠে নামছে সফরকারীরা। উইন্ডিজদের বিরুদ্ধে টাইগারদের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ। প্রায় দুই মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ।

গ্রেনাডার ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটে দুদলের ২৬তম লড়াইটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। ম্যাচটি সম্প্রচার করবে জিটিভি ও টেন ক্রিকেট।

ওয়ানডে ক্রিকেটে অতীতে দুদল মুখোমুখি হয়েছিল ২৫ বার। তার মাঝে ১৬ বার জিতে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের পকেটে রয়েছে ৭টি জয়। দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে লড়াইয়ের হিসাব করলে অবশ্য বাংলাদেশের জন্য আশা জাগানিয়া চিত্রই প্রতিফলিত হয়।

এই ক্ষেত্রে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সমানতালেই রয়েছে বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানে ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ৩-০ তে হেরেছিল। আর ২০০৯ সালে ৩-০ তে জিতেছিল টাইগাররা। পরিসংখ্যানের খাতা অনুপ্রেরণার মঞ্চ হলেও আসল লড়াই হবে মাঠে। সেখানে বাহ্যিক দৃষ্টিতেই স্বাগতিকরা অনেক শক্তিশালী।

ড্যারেন ব্র্যাভোর নেতৃত্বাধীন দলে মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়াইন স্মিথ না থাকলেও ক্রিস গেইলরা রয়েছেন। নারিন, রামদিন, পোলার্ড, লেন্ডল সিমন্স, ড্যারেন ব্র্যাভো, কেমার রোচ ও ড্যারেন স্যামিরা আছেন উইন্ডিজ দলে। শক্তিমত্তা, প্রতিভা, হোম কন্ডিশনের কারণে গেইলরা সত্যিই এগিয়ে।

কিন্তু তারপরও ব্র্যাভোদের চিন্তার বিষয় রয়েছে। সর্বশেষ হোম সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই সিরিজে ছন্দে ফিরে আসার চ্যালেঞ্জও রয়েছে তাদের সামনে। প্রস্তুতির ঘাটতিও নেই পোলার্ডদের। দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই খেলেছেন সদ্যসমাপ্ত সিপিএলে।

চলতি বছরে টানা নয়টি ওয়ানডে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে মুশফিক বাহিনী। ভারতের বিরুদ্ধে ১০৬ রানের টার্গেট পাড়ি দিতে পারেননি তামিমরা। উল্টো ৫৮ রানে অলআউটের লজ্জা সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের।

তাই এই সিরিজ টাইগারদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ, প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার উপলক্ষ। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাজে সময়কে পেছনে ফেলে ছন্দে ফিরে আসা। নিজেদের সহজাত ক্রিকেট খেলা।

২০১৩ সাল পর্যন্ত টিকে থাকা ধারাবাহিকতাকে ফিরিয়ে আনা। মুশফিকুর রহীমের দলে সেটি করার রসদও রয়েছে। প্রস্তুতি ম্যাচেই তামিম, মাহমুদউল্লাহরা যার ইঙ্গিত দিয়েছেন। গ্রেনাডা একাদশকে ৯৫ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

তিনশর বেশি রান করেছেন ব্যাটসম্যানরা, যা আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে সফরকারীদের। তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, নাসির সবাই কমবেশি রান করেছেন। মাশরাফি, তাসকিনরাও উইকেট পেয়েছেন।

স্পিন বিভাগে সাকিব আল হাসান না থাকায় বড় দায়িত্ব থাকবে অভিজ্ঞ রাজ্জাক ও সোহাগ গাজীর ওপর। পেস বিভাগে মাশরাফির সঙ্গে তাসকিন, আল-আমিন জুটি ভয়ঙ্কর হতে পারে কন্ডিশন সহায়ক হলে।

এই সিরিজে বিজয়, তাসকিনদের মতো তরুণরা হতে পারেন অধিনায়ক মুশফিকের আস্থার বড় আশ্রয়। পুরো দলটা সম্মিলিতভাবে পারফর্ম করতে পারলে হোম কন্ডিশনেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর সামর্থ্য রাখে মুশফিক বাহিনী।

বাংলাদেশ দলের মতোই সফরটা কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ কিছু। ভারত সিরিজে থাকলেও কাগজে কলমে টাইগারদের হয়ে এই লঙ্কানের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট এটি। টাইগার শিবিরে এসেই বেশকিছু পরিবর্তন এনেছেন হাথুরুসিংহে।

পেশাদার এই কোচের কাজের একাগ্রতা, সিরিয়াসনেস সবই দলের অনুশীলনেই দেখা গেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে হাথুরুসিংহের নতুন যুগের শুরুটা কেমন হয় সেটি দেখতে মুখিয়ে আছে কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।

(ওএস/এইচআর/আগস্ট ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test