E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মোহামেডানকে বিধ্বস্ত করে আবাহনীর প্রতিশোধ

২০২১ জুন ২০ ২২:৫৫:৫০
মোহামেডানকে বিধ্বস্ত করে আবাহনীর প্রতিশোধ

স্টাফ রিপোর্টার : ঘটনাবহুল প্রথম পর্বের ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ৩১ রানে জিতেছিল মোহামেডান। প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর বিপক্ষে পাঁচ বছরের মধ্যে সেটিই ছিল মোহামেডানের প্রথম জয়। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা আর ধরে রাখতে পারল না তারা।

সুপার লিগের মুখোমুখি সাক্ষাতেই প্রতিশোধ নিয়ে নিলো আবাহনী। তাও যেনতেনভাবে নয়, রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে মোহামেডানকে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে গড়েছে চলতি আসরে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। পরে বল হাতে মোহামেডানকে দাঁড়াতেই দেয়নি আবাহনীর বোলাররা।

চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয়বারের মতো ১৮০ ছাড়ানো ইনিংসে আবাহনী দাঁড় করায় ১৯৩ রানের সংগ্রহ। বিপরীতে মোহামেডান করতে পেরেছে ১৩৩ রান। ৬০ রানের বিশাল জয়ের সুবাদে শিরোপা দৌড়ে প্রাইম ব্যাংকের সমান্তরালে চলে এলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

আবাহনীর করা ১৯৩ রানের বিশাল সংগ্রহের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারায় মোহামেডান। প্রথম ওভারটিতে কোনো রান খরচ না করেই উইকেট দুইটি নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন অভিষেক মিত্র ও শামসুর রহমান শুভ।

নিজের পরের ওভারে আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ইরফান শুক্কুরের লোপ্পা ক্যাচ ছেড়ে দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। একই ওভারের শেষ বলে ডিপ মিড উইকেট বাউন্ডারি ক্যাচ ধরতে পারেননি মেহেদি হাসান রানা। ফলে একই ওভারে দুইবার জীবন পান শুক্কুর।

এক ওভারে দুইবার বেঁচে যাওয়ার পর প্রাথমিক চাপটা দূর করার চেষ্টা করেন শুক্কুর। তৃতীয় উইকেটে আব্দুল মাজিদের সঙ্গে মাত্র ২৬ বলে যোগ করেন ৩৭ রান। কিন্তু ইনিংসটি বড় করতে পারেননি শুক্কুর।

মোসাদ্দেক সৈকতের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে আন্ডার এজে বোল্ড হওয়ার আগে ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ১৮ বলে ২৭ রান করেন তিনি।একই ওভারের চতুর্থ বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান নাদীফ চৌধুরী।

এর পরের ওভারে আবারও পতন ঘটে জোড়া উইকেটের। আরাফাত সানির করা সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে রানআউট হন ১০ রান করা মাজিদ আর পঞ্চম বলে ইনিংসের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে শূন্য রানে আউট হন শুভাগত।

মাত্র ৪২ রানের ছয় উইকেট হারিয়ে অল্পেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে মোহামেডানের। তবে সপ্তম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে আবাহনীর জয়ের অপেক্ষা বাড়ান মাহমুদুল হাসান লিমন ও আবু হায়দার রনি। এদের জুটিতে আসে ৭৮ রান। যার সুবাদে বড় লজ্জার হাত থেকে রেহাই পায় মোহামেডান।

ইনিংসের ১৯তম ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদুল লিমন। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৩৭ রান। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন আবু হায়দার রনি। ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটিতে ৫৩ রান করেন তিনি।

এর আগে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ঝড়ো ফিফটির সঙ্গে তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার, নাজমুল হোসেন শান্ত ও নাইম শেখদের মাঝারি ইনিংসে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় আবাহনী। চলতি আসরে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

এ ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নেমেছিলেন লিটন দাস। কিন্তু ৪ রানের বেশি করতে পারেননি। টস হেরে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর পক্ষে ইনিংস চতুর্থ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৭ বল খেলে ৪ রান করেন লিটন।

তবে আগের ম্যাচগুলোর ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন মুনিম। আজকের ম্যাচে তিনি খেলেন ২৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। যেখানে ছিল ৫ চার ও ২ ছয়ের মার। তিন নম্বরে নামা নাজমুল শান্ত তিন ছয়ের মারে করেন ১৭ বলে ২৭ রান আর নাইমের ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ২৪ রান।

আবাহনীকে দুইশ ছোঁয়া সংগ্রহ এনে দেয়ার মূল কৃতিত্ব মুশফিকের। শুরুতে খানিক রয়েসয়ে খেললেও ক্রমেই খোলস ছেড়ে বের হন তিনি। মোহামেডানের বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করে মাত্র ২৮ বলে তুলে নেন চলতি প্রিমিয়ার লিগে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি।

শেষ পর্যন্ত ৮ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩২ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া আফিফ হোসেন ধ্রুব ৯ বলে ১০ ও মোসাদ্দেক সৈকত ৭ বলে ১৪ রান করতে সক্ষম হন।

অন্যান্য বোলারদের বেধড়ক পিটুনি খাওয়ার দিন ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচ করেন বাঁহাতি পেসার রুয়েল আহমেদ, নেন ৩টি উইকেট। সমান ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হাসানও, কিন্তু খরচ করেন ৪৭ রান। আরেক বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি ৪ ওভারে দেন ৫০ রান।

(ওএস/এসপি/জুন ২০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test