E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাজারো মানুষের চোখের জলে চির বিদায় নিলো ফুটবলার রাজিব

২০১৫ অক্টোবর ২১ ১৫:৫০:২১
হাজারো মানুষের চোখের জলে চির বিদায় নিলো ফুটবলার রাজিব

মাগুরা প্রতিনিধি : হাজারো মানুষের চোখের জল আর বুকফাটা আর্তনাদের মধ্যে দিয়ে  শেষ বিদায় দিলেন তরুণ ফুটবলার রাজিবকে। মাগুরার মহম্মদপুর সদরের বাসিন্দা ঢাকা মোহামেডানের কৃতি ফুটবলার ছিলেন রাজিব হোসেন (১৮)।

মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জে খেলেতে যাওয়ার সময় রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দে মাহেন্দ্র টেম্পু-বাস মুখোমুখি সংঘর্ষে রাজিবসহ দুইজন নিহত হন। বুধবার সকালে জানাজা শেষে উপজেলা সদরের পূর্বনারায়নপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজিবের লাশ মহম্মদপুর সদরের বাড়িতে আনলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শতশত মানুষ তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় সদরের পূর্বনারায়নপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে নামাাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বন্ধু শুভাকাঙ্খি,খেলোয়াড়, ক্রীড়াসংগঠকসহ স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।

জানাজা শেষে তাকে পূর্বনারায়নপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। রাজিবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

জানা গেছে, ‘মাঠ কাঁপানো ফুটবলার ছিলেন তরুণ রাজিব (১৮)। পুরোনাম রাজিবুল হোসেন মুসল্লী। চারদিক ছড়িয়ে পড়েছিল রাজিবের নাম। ঢাকা মোহামেডানের জুনিয়র টিমে খেলত সে। জাতীয় দলে খেলা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র । সড়ক দূর্ঘটনা তাঁর সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে পিরোজপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে ফরিদপুর থেকে ছেড়ে আসা মাহেন্দ্রের (তিন চাকার যান) রাজবাড়ী সদর উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের সাইনবোর্ড এলাকায় বাইপাস সড়কে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাহেন্দ্রের চালক সাগর বিশ্বাস নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাজীব মারা যান।

মাহেন্দ্র যাত্রি রাজিবের বন্ধু ফুটবলার বিজয় (১৮) ও বিপুল (২৫) গুরুতর আহত হয়। মাহেন্দ টেম্পুতে চড়ে তারা মানিকগঞ্জে ফুটবল ম্যাচ খেলতে যাচ্ছিল। নিহত রাজিবের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার সদরে। সে ওই এলাকার তোতা মুসল্লীর ছেলে।
রাজিবের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, শতশত নারী পুরুষের ভিড় করছেন। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাশ বারি হয়ে উঠছে। মা বেবি খাতুন কিছুক্ষণ পর জ্ঞান হারাচ্ছেন। আবার সজ্ঞা ফিরে পেয়ে রাজিবকে নিয়ে অনবরত বিলাপ করছেন।

ঝুপড়ি টিনের ছোট ঘর রাজিবদের। বাবা তোতা মুসল্লী চা বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালান। এই ছেলে একদিন বড় ফুটবলার হবে তোতা মিয়ার আশা ছিল। তিন ভাই তিন বোনের সংসারে রাজিব দ্বিতীয়। স্থানীয় আমিনুর রহমান কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল রাজিব। ফুটবলই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান।

মহম্মদপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাবুল বলেন, রাজিব তরুণ সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় ছিল। সে ঢাকা মোহামেডান ক্লাবের জুনিয়র টিমে কয়েক মৌসুম নিয়মিত খেলছিল। সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল রাজিব। বাফুফের হয়ে স্কুল ও বয়েস ভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সে অংশ নেয়।

রাজবাড়ি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির জানান,‘বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(ডিসি/এএস/অক্টোবর ২১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test