কলকাতার বুকে রাইডার্সদের জমকালো সংবর্ধনা

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : মঙ্গলবার ইডেন ময়দানে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (কেকেআর) জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হল। এ নিয়ে কলকাতার বুকে নাইট রাইডার্সের দ্বিতীয় বিজয় উত্সব উদযাপিত হল৷ পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ সময় বলেন, ‘এই জয় আমাদের জয়, গোটা বাংলার জয়৷’ নতজানু হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানায় শাহরুখের নাইটবাহিনী৷

সোমবার উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে দুপুরে কলকাতা বিমানবন্দরে এবং পরে শিলিগুড়িতে নাইটদের সংবর্ধনার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ-৭ জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিজয় উত্সবে শামিল হতে মঙ্গলবার ভোর থেকেই উত্তেজনায় টগবগ করছিলেন লক্ষ লক্ষ ক্রিকেট প্রেমী মানুষ৷

কলকাতা পুলিশ ও সিএবির উদ্যোগে কেকেআরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজ্যবাসীর ‘ক্রেজ' ছিল চোখে পড়ার মতো৷ মমতা বলেছিলেন, রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর, কলকাতা পুলিশ এবং সিএবি যৌথভাবে সংবর্ধনা দেবে৷ ইডেনে ঢুকতে কোনও টিকিট লাগবে না, বিনামূল্যে পাস পাওয়া যাবে৷

এদিন কলকাতার আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় শুধু নাইটদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার হুড়োহুড়ি৷ ট্রেন-বাস-ট্রাম, গোটা শহরে উত্সবের মেজাজ৷

বেলা বাড়তেই মাঠে আসতে শুরু করেন টলি থেকে বলি স্টাররা৷ তাঁদের দেখতে ফ্রি পাসের জন্য ছিল হাহাকার৷ শহরের ৬৯টি থানা থেকে সোমবার রাত থেকেই দেওয়া হচ্ছিল মাঠে ঢোকার ফ্রি পাস৷ তারপর সকাল থেকেই যেভাবে ফ্রি পাসের জন্য লাইন উপচে পড়েছে তা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে৷

কলকাতার বেশ কয়েকটি থানার সামনে নিজেরাই দাঁড়িয়ে থেকে ফ্রি পাস বিলি করেন রাজ্যের মন্ত্রীরা৷মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নেতা-মন্ত্রীরা ফ্রি পাস বিতরণ করেন সকাল থেকেই৷ বিশেষ তত্পরতা দেখান নগরপাল সুরজিত্‍ করপুরকায়স্থ, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷

মঙ্গলবার সকালের চিত্রটাই ছিল অন্যরকম৷ জোগানের চেয়ে বেশি চাহিদায় হিসাবের বাইরে চলে যায় সব পরিকল্পনা৷ বাধ্য হয়ে ইডেনের গেট খুলে দেওয়া হয় সবার জন্য৷ শাহরুখ-জুহিদের দেখার জন্য মানুষ পাগল৷ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় আইপিএল জয়ীদের সংবর্ধনা৷

এদিন বেলা বারোটায় শুরু হয়ে যায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান৷ প্রথম মঞ্চে আসেন উষা উত্থুপ৷ তাঁর. গানের তালে মাতোয়ারা হয় গোটা ইডেন৷ এরপর একে একে মঞ্চ মাতাতে আসেন উজ্জ্বয়িনী, অনীকরা৷ মাঠে তখন নাইটপ্রেমীদের চিত্কার৷

এরপর আসেন সৌমিত্র রায় এবং ইন্দ্রনীল সেন৷ জুন মালিয়া, জিত্-সহ একাধিক তারকা৷ মাঠের বাউন্ডারি লাইনের পাশ দিয়ে শাহরুখ-গম্ভীরদের ভিকট্রি ল্যাপকে কাছ থেকে দেখার জন্য পুলিশের বেষ্টনী এড়িয়ে চলে আসেন বহু মানুষ৷

দর্শনীয় ছিল শাহরুখের বিখ্যাত সেই সামারসল্ট৷


তারপর তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় আলফানসো আম, লিচু, মিষ্টি, দই, সন্দেশ-কেক, উত্তরীয়, হস্তশিল্পের স্মারক ও পুষ্পস্তবক৷ ছিল ব্যাট-বলের প্রতিকৃতিও৷

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাইটবাহিনীর হাতে তুলে দেন নীল-সাদা শার্ট, ঘন নীল স্যুট-টাই, সুগন্ধী৷ সিএবির তরফ থেকে খেলোয়াড়সহ কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় এক ভরি করে সোনার আংটি৷ কলাকাতা পুলিশের তরফ থেকে নাইটদের দেওয়া হয় রুপোর স্মারক৷ ক্লাব হাউসের সামনের লনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়৷ সেই মঞ্চে দুপুর থেকেই গানের ছন্দে পায়ে পা মেলান শাহরুখ-জুহি-সহ অন্যান্য টলি তারকারা৷

দর্শকরা যাতে মাঠে না গিয়েও সরসারি অনুষ্ঠান দেখতে পান সেজন্য রেড রোডে বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে এবং বাবুঘাটে জায়াণ্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷

(ওএস/পি/জুন ০৩,২০১৪)