E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুই ঈদের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে খরা

২০১৯ জুলাই ২৪ ১৬:৩৭:৪৭
দুই ঈদের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে খরা

স্টাফ রিপোর্টার : হঠাৎ করে কমেছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের পরিমাণ। চলতি বছরের জুন মাসে দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা; যা মে মাসের চেয়ে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ বা সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা কম। জুনের মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন গত সাত মাসের সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকার লেনদেন করে। যে কারণে ঈদের আগে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেশি হয়। এ কারণে মে মাসে লেনদেন বেশি হয়েছিল। তাই পরের মাস জুনে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে এটা স্বাভাবিক। সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময় আবারও লেনদেন বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন এ খাতসংশ্লিষ্টরা।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বর্তমানে মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আলোচিত সময়ে এমএফএস’র লেনদেন কমলেও গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে এমএফএসে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার; যা মে মাসে ছিল ৭ কোটি ৪ লাখ ৫৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

এমএফএসে নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন না করলে তাদের হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সেই হিসাবে জুন শেষে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এমএফএসে গত জুনে প্রতিদিন গড়ে ৬৬ লাখ ৫১ হাজার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে আদান-প্রদান হয়েছে এক হাজার ৫৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জুনে মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা; যা আগের মাসের চেয়ে ১০ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ কম। গত মে মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৫।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে জুনে রেমিট্যান্স ছাড়া সব ধরনের সেবায় লেনদেন কমেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ৩২ শতাংশ কম। উত্তোলন করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা; যা মে মাসের তুলনায় সাড়ে ২৪ শতাংশ কম। এমএফএসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৭ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ প্রায় ৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩৭ কোটি টাকায়। আগের মাসে যা ছিল এক হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪৫ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৮৬ কোটি টাকা। সরকারি পরিশোধ ১৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৫৮৪ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংসেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমএফএস লেনদেনের সর্বশেষ ১৯ মে’র নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টে দিনে পাঁচ বারে ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন বা জমা করতে পারবেন। মাসে ২৫ বারে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ক্যাশ ইন করা যায়। আগে প্রতিদিন দুই বারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারতেন একজন গ্রাহক। মাসে ২০ বারে এক লাখ টাকা ক্যাশ ইন করা যেত।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test