E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বন্যার প্রভাব রাজধানীর কাঁচাবাজারে

২০১৯ জুলাই ২৬ ১৩:০৮:০৫
বন্যার প্রভাব রাজধানীর কাঁচাবাজারে

স্টাফ রিপোর্টার : কাঁচা মরিচের কেজি আড়াইশ টাকা। পাকা টমেটো ১৩০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা। বেগুন, শসা ঝিঙের কেজি একশ টাকার কাছাকাছি। হঠাৎ বন্যার প্রভাবে রাজধানীর বাজারে এমন বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। তবে বাড়তি দামের বাজারে তুলনামূলক কমে পাওয়া যাচ্ছে পেঁয়াজ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মরিচের। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কাঁচ মরিচ এখন আমদানি করতে হচ্ছে। যে কারণে কাঁচা মরিচের দাম সব থেকে বেশি বেড়েছে। এ ছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

রামপুরা বাজারে দেখা যায়, কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম পড়ছে ২০০-২২০ টাকা। খিলগাঁও তালতলা বাজারে কাঁচা মরিচের পোয়া ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ হিসাবে বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৬০ টাকা।

মরিচের দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন বলেন, বন্যার কারণে এবার মরিচের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন বাজারে যে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে এর বেশিরভাগই আমদানি করা। আমদানি করা এসব মরিচ থেকে দেশি মরিচের মান অনেক ভালো। কিন্তু বাজারে দেশি মরিচের ঘাটতি থাকায় দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ আগেও ভালো মানের কাঁচা মরিচের পোয়া ২০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। বন্যা বন্ধ হয়ে ভালো মানের দেশি মরিচ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

এদিকে মরিচের পাশাপাশি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো, গাজর, শসা, বেগুনসহ সব ধরনের সবজি। গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো।

বাজার ভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি। গাজার বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা এবং শসা ৬০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে এ তিনটি পণ্য এমন দামে বিক্রি হচ্ছে।

বন্যার প্রভাবে সবজির মধ্যে সব থেকে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম। দুই সপ্তাহ আগে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৬০-৮০ টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের মধ্যে বেগুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

বেগুনের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী জহির বলেন, মরিচের মত বেগুন খেতেও পানি জমলে নষ্ট হয়ে যায়। গত কয়েকদিনের বন্যা ও বৃষ্টিতে বেগুনের অনেক খেত নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে বেগুনের দাম বেড়ে গেছে।

বেগুন, শসা, টমেটো ও গাজরের মতো করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, উসি ও ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। ককরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। এ সবজিগুলো গত এক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত থাকা সবজির মধ্যে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। আর বরবটির ৬০-৭০ টাকা কেজি, কচুর লতি ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা পিস।

মালিবাগের ব্যবসায়ী জুয়েল বলেন, বন্যার কারণে গত ১০-১৫ দিনে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত এবার দাম কমার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।

বন্যার প্রভাবে কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম বড়লেও প্রভাব পড়েনি পেঁয়াজের ওপর। কারওয়ান বাজারে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের পাল্লা গত সপ্তাহের মত বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৩২-৩৪ টাকা। আর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা।

পেঁয়াজের দামের বিষেয়ে কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ী মিলন বলেন, বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষতি হয়নি। কারণ এখন পেঁয়াজ চাষের মৌসুম না। বাজারে যে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে তা বেশ আগেই ওঠা। বন্যার কারণে এসব পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি।

এদিকে মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বয়লার মুরগির গত সপ্তাহের মতো ১৩৫-১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল লেয়ার মুরগি। গরুর মাংস বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test