E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এবার চালের বাজারে অস্থিরতা

২০১৯ নভেম্বর ১৮ ১৭:০৫:১৭
এবার চালের বাজারে অস্থিরতা

স্টাফ রিপোর্টার : পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পর এবার চালের দামও বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা।

রাজধানীতে দাম বাড়ার আগে কুষ্টিয়া ও নওগাঁতেও চালের দাম কেজিতে ৫-৭ টাকা করে বাড়ে। কুষ্টিয়ায় কিছুদিন আগে যে মিনিকেট চালের দাম ছিল ৩৮ টাকা, এখন সেই চালের দাম ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা হয়েছে।

একই হারে কুষ্টিয়ায় বেড়েছে কাজললতা চালের দামও। ৩২ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে কাজললতা চাল। তবে আটাশ চালের দাম তেমন একটা না বাড়লেও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৩ টাকায়।

উত্তরাঞ্চলের ধান-চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁতে কিছুদিন আগে ৩৬ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া জিরাশাইল’র দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আটাশ চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে ৩৪-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩০ টাকা, কাটারিভোগ ৫০-৫২ টাকা, পাইজাম ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকারভেদে মোটা চালের দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে।

হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দায়ী করছেন। তারা বলছেন, মিল মালিকরা দাম বাড়ানোর কারণে তারা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে রশিদের মিনিকেটের দাম বাড়ানোর কারণে, সবাই চালের দাম বাড়িয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কার্যকর নজরদারি না থাকার কারণে একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট চালের দাম বস্তায় (৫০ কেজি) বেড়েছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগে ৪২-৪৪ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মিনিকেট চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি।

চিকন চালের পাশাপাশি বেড়েছে মোটা চালের দামও। এক সপ্তাহ আগে ৩৪-৩৬ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আটাশ চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮-৪০ টাকা। ৩০-৩২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া স্বর্ণা চালের দাম হয়েছে ৩৪-৩৬ টাকা।

খুচরার পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাইকারিতেও। পাইকারিতে প্রতিবস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২২৫০-২৩০০ টাকায়। আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০-১৮০০ টাকা, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০-২৭০০ টাকায়।

চালের এই দাম বাড়ার আগে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে পেঁয়াজের দাম। ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম দেখতে দেখতে ২৫০ টাকায় পৌঁছে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বিমানে করে পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এরপরও এখনও রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের পর চালের দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মানিক বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে এক বস্তা মিনিকেট চাল ২০৫০ টাকা দিয়ে কিনি। আজ (সোমবার) সেই চালের বস্তা চাচ্ছে ২৪০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিবস্তায় চালের দাম বেড়েছে ৩৫০ টাকা। বাজারে কার্যকর মনিটরিং না থাকার কারণে এভাবে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘চালের দাম বাড়ার আগে হু হু করে পেঁয়াজের দাম বাড়ল। ৪০ টাকার পেঁয়াজের কেজি দেখতে দেখতে ২৫০ টাকা হয়ে গেল। এরপরও যেন কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। এক কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা-এটা কীভাবে মেনে নেয়া যায়! এখন আবার চালের দাম বাড়া শুরু হয়েছে। এই দাম বৃদ্ধির হার কোথায় গিয়ে থামে এখন সেটাই দেখার বিষয়।’

খিলগাঁও তালতলা বাজারের মেসার্স আল্লারদান রাইস স্টোরের মালিক মো. জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘ভাই, আমাদের কিছু করার নেই। সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা করে বেড়েছে। মিনিকেট চালের দাম প্রতি বস্তায় বেড়েছে ৩০০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে রশিদের মিনিকেটের দাম বাড়ে। এরপর সবাই একে একে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে তিন দফায় চালের দাম বেড়েছে। প্রথম দুই দফায় বস্তায় ৫০ টাকা করে দাম বাড়ে। আর তৃতীয় দফায় একবারে বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকা।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test