E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আবার বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

২০২০ জানুয়ারি ৩১ ১৬:০৮:৩৭
আবার বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

স্টাফ রিপোর্টার : পেঁয়াজের দামে স্বস্তি মিলছেই না। হঠাৎ কিছুটা দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও দাম বাড়ছে। দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখন রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।

পেঁয়াজের বাড়তি দামের সঙ্গে স্বস্তি দিচ্ছে না সবজিও। শিম, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমে বাজার ভরপুর থাকলেও বেশিরভাগ সবজির দাম বেশ চড়া। এমনকি সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে দাম বাড়ার ঘটনাও ঘটেছে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

গত বছরের শেষের দিকে ভারত রফতানি বন্ধ করায় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। রেকর্ড ২৫০ টাকায় পৌঁছে যায় পেঁয়াজের কেজি। তবে দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমে। নতুন পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা মধ্যে চলে আসে।

কিন্তু ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে হঠাৎ করেই দেশি নতুন পেঁয়াজ কেজি ১৮০ টাকায় ওঠে যায়। পরে কয়েক দফায় দাম কমে চলতি মাসের প্রথমদিকে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকায় নামে। প্রায় দুই সপ্তাহ স্থির থাকে পেঁয়াজের দাম। তবে আজ সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলম বলেন, দাম বেশি হওয়ায় চাষিদের একটি অংশ নির্ধারিত সময়ের আগেই মুড়ি পেঁয়াজ তোলা শুরু করে। এ কারণে বাজারে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কম। ফলে দাম কমার বদলে এখন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। দেদারসে মুড়ি পেঁয়াজ তোলা না হলে এখন পেঁয়াজের দাম অনেক কম থাকতো।

মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী জহির বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে শুধু ক্রেতারা না আমরাও বেশ অস্বস্তিতে আছি। হঠাৎ হঠাৎ দাম বাড়ছে আবার কমছে। বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনে আমি দুই দফা ধরা খেয়েছি। হঠাৎ করে এখন আবার পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। বুঝতে পারছি না সামনে কি হবে?

এদিকে পেঁয়াজের দাম আবার বাড়ায় বিরক্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাজারে কার্যকর নজরদারি না থাকায় সিন্ডিকেট চক্র এভাবে দাম বাড়াচ্ছে।

খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা সাইফুল বলেন, এখন পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। আবার ভারতও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তাহলে পেঁয়াজের কেজি কেন ১৫০ টাকা হবে। এটা কিছুতেই স্বাভাবিক না। এখন পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার নিচে থাকা উচিত। মূলত বাজারে দায়িত্বশীলদের কোনো নজরদারী না থাকায় এভাবে দাম বাড়ছে।

রামপুরার বাসিন্দা আরাফাত বলেন, এখন আস্তে আস্তে পেঁয়াজের দাম কমার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দাম কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়ছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি ছিল ১০০ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকা হয়েছে। শুধু পেঁয়াজ নয়, সব ধরনের সবজির দামও চড়া। বাজারে গেলে কোনো কিছুর দাম স্বস্তি দিচ্ছে না।

বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৪০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শসার মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি।

গত সপ্তাহে ৫০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম বেড়ে এখন কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। আগের সপ্তাহের মতো বাজার ও মানভেদে পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা। দেশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা ও গাজরের। ভালো মানের শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। ফুলকপি পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। মুলা পাওয়া যাচ্ছে ২০-২৫ টাকার মধ্যে।

নতুন গোল আলু ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শালগম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। বেগুন পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে। মাঝারি আকারের প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকায়।

রামপুরা বাজার থেকে বাজার করা মনির হোসেন বলেন, এখন সবজির ভরা মৌসুম তারপরও বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার কাছাকাছি। সাধারণত এমন সময় শিমের কেজি ২০-২৫ টাকার মধ্যে থাকার কথা অথচ বাজারে শিমের কেজি ৫০ টাকা। শুধু শিম নয় সব ধরনের সবজির দাম এমন চড়া। ছোট একটি লাউয়ের দাম ৮০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকা। বাজারের এ চিত্রকে কিছুতেই স্বাভাবিক বলা যায় না।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ৩১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test