E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পোশাক কারখানার মালিক-শ্রমিকরা অস্বস্তিতে

২০১৪ এপ্রিল ১৮ ১৪:২৭:৩৭
পোশাক কারখানার মালিক-শ্রমিকরা অস্বস্তিতে

স্টাফ রিপোর্টার : উত্তর আমেরিকার পোশাক ব্যবসায়ীদের জোট অ্যালায়েন্স ফর ওয়ার্কার্স সেফটি বলছে, বাংলাদেশের প্রায় ৪০০ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে পরিদর্শন করে তারা দেখেছেন মোট তিনটি কারখানায় শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন।

অ্যালায়েন্স বলছে, এসব ঝুঁকি চিহ্নিত করে তারা সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে। তারা বলছে, এই কারখানা তিনটিতে কর্মপরিবেশ উন্নত করার জন্য সরকার দু'মাসের জন্য উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দিলে শ্রমিকদের বেতন-ভাতার অর্ধেক মার্কিন ক্রেতারা বহন করতে রাজী।


বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যালায়েন্স কর্মকর্তারা এই বক্তব্য রাখেন। অ্যালায়েন্স ফর ওয়ার্কার্স সেফটি বলছে যে তিনটি কারখানায় ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো ছোট এবং মাঝারি মানের। সেখানে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ।


কর্মকর্তারা বলছেন কারখানা গুলোর ত্রুটি চিহ্নিত করে সেটি রিভিউ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। অ্যালায়েন্স –এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিন মেসবাহ বলেন, “রিভিউ প্যানেল তাদের মতামত সরকারকে জানানোর পরেই সিদ্ধান্ত জানা যাবে।”


এর আগে ইউরোপীয় ক্রেতাদের উদ্যোগে গঠিত ফায়ার সেফটি এ্যাকর্ড বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শনের সময় দশটি কারখানায় নিরাপত্তাজনিত বিভিন্ন ধরনের ত্রুটির সন্ধান পেয়েছে। বিজিএমইএ বলছে এরপর সে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।


এতে প্রায় দশ হাজারের মতো শ্রমিক বেকার হয়েছে বলে বিজিএমই-এ জানিয়েছে। এখন আমেরিকার ক্রেতাদের উদ্যোগ অ্যালায়েন্স আরও তিনটি কারখানাকে ঝুঁকি পূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।


ঢাকায় বৃহস্পতিবার অ্যালায়েন্স –এর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা এবং অ্যালায়েন্স – এর উপদেষ্টা ডা: ওয়াজেদুল ইসলাম খান। তিনি জানালেন, ভবনের মান যাচাইয়ের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় স্বস্তি আসলেও শ্রমিকদের চাকুরী হারানোতে তারা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন সরকারের গঠিত নয় সদস্যের একটি কমিটিতে চারজন প্রকৗশলী রয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের, একজন প্রকৌশলী এ্যাকর্ডের এবং আরেকজন প্রকৌশলী অ্যালায়েন্সের।


কারখানার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে এই চারজন একমত হলেই সেটি বন্ধ করা যাবে। খান বলেন, ‘কিন্তু সে নিয়মকে উপেক্ষা করেই অনেকে কারসাজি করে কারখানা বন্ধ করছে। আমরা অবশ্যই এটাকে প্রতিহত করবো।’ কারখানার মান যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়ে মালিকপক্ষ সন্তুষ্ট থাকলেও কারখানা বন্ধের বিষয়টিতে মালিকপক্ষও উদ্বিগ্ন।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো যাতে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করতে পারে সেজন্য সরকারের উচিত মালিকদের সহযোগিতা করা। ইসলাম বলেন, “অনেকের হয়তো জমি আছে কিন্তু তারা কারখানা রিলোকেশন (স্থানান্তর) করতে পারছেনা। কারণ এতে অনেক বিনিয়োগের প্রয়োজন।”


এজন্য সরকার যদি মালিকদের স্বল্প সুদে এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেয় এবং অন্যান্য নীতিগত সহায়তা দেয় তাহলে মালিকদের জন্য কারাখানা স্থানান্তর করা সহজ হবে বলে বিজিএমই সভাপতি উল্লেখ করেন। অ্যালায়েন্স বলছে তারা মান যাচাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করেছে ।কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সরকারের।


অ্যালায়েন্স – এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রবিন মেসবাহ বলেন, ‘আমরা প্রথমে চেষ্টা করবো ঝুঁকিপূর্ণ কারখানা ভবনকে রেট্রোফিটিং (ভবনে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার) করে নিরাপদ করা যায় কিনা । সেক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা দেব ।’


মেসবাহ বলেন সংস্কার কাজ চলার সময় দুই মাস কারখানা বন্ধ থাকলে সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের মজুরীর অর্ধেক অ্যালায়েন্স দেবে এবং বাকি অর্ধেক মালিকরা দেবে ।

(ওএস/এটি/ এপ্রিল ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test