E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নতুন ব্যাংকগুলো গ্রামীণ জনগণকে সুবিধা দিতে পারছে না

২০১৪ এপ্রিল ৩০ ১২:৫৩:১৪
নতুন ব্যাংকগুলো গ্রামীণ জনগণকে সুবিধা দিতে পারছে না

স্টাফ রিপোর্টরা : শর্ত অনুযায়ী গ্রামীণ জনগণকে সুবিধা দিতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে দেশের ব্যাংকিং খাতে যুক্ত হওয়া নতুন ৯ ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এমনকি প্রবাসীদের মালিকানায় করা ব্যাংকগুলোর মাধ্যমেও আসছে না বিদেশি বিনিয়োগ। ফলে এসব ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার সময় যেসব উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছিল তা পূরণও হচ্ছে না।

বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদে ৯টি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর সকল প্রক্রিয়া শেষ করে এসব ব্যাংক কার্যক্রমে এসেছে বছর খানেক আগে। তবে ব্যাংকগুলো যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল তার কিছুই হচ্ছে না বরং এসব ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করতে অসম প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। অবশ্য যখন এসব ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তখনই অর্থনীতিবিদদের অনেকেই বিরোধিতা করেছিল। এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ) বিরোধিতা করে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বলেছিল নতুন ব্যাংক অনুমোদন দিলে ব্যাংকিং খাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বাড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সে আশঙ্কাই এখন সত্য হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, কার্যক্রমে আসার পর চলতি মার্চ পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ছয়টি ও প্রবাসীদের তিনটি ব্যাংকের মোট চার হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ হয়েছে। আর ঋণ বিতরণ করেছে তিন হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। অর্থাত্ আমানতের প্রায় ৬৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে এসব ব্যাংক। এরমধ্যে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮২১ কোটি টাকা। ঋণ রয়েছে ৬৮১ কোটি টাকা। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের আমানত দাঁড়িয়েছে ৭৫৯ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ হয়েছে ৪৪৭ কোটি টাকা। মেঘনা ব্যাংকের আমানত রয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। ঋণ দিয়েছে ২৫৩ কোটি টাকা। মিডল্যান্ড ব্যাংকের আমানত রয়েছে ৪০৩ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা। ফার্মার্স ব্যাংকের আমানত ২৪১ কোটি টাকা। ঋণ দিয়েছে ১০২ কোটি টাকা। ইউনয়ন ব্যাংক ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ১ হাজার ৬১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড ২৯১ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করেছে ১০৩ কোটি টাকা। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ২৩২ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে ৩৬১ কোটি টাকা। আর মধুমতি ব্যাংক ২৮১ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ৫৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে একমাত্র ইউনিয়ন ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও নতুন ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত এই ৯টি ব্যাংক ৮৭টি শাখা খুলেছে। এরমধ্যে এনআরবি ব্যাংক ৬টি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ১২, এনআরবি গ্লোবাল ৩, ইউনিয়ন ব্যাংক ১৭, সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক ১৩, ফার্মার্স ব্যাংক ১২, মিডল্যান্ড ব্যাংক ১২ এবং মধুমতি ও মেঘনা ব্যাংক ছয়টি করে শাখা খুলেছে। নতুন ব্যাংকগুলো গ্রামীণ এলাকায় যে বাড়তি সুবিধা দেয়ার যে কথা বলেছিল তা মানেনি ব্যাংকগুলো। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুযায়ী শহর ও গ্রামের শাখার আনুপাতিক হার ১:১ হওয়ার কথা থাকলেও সব ব্যাংক এখন পর্যন্ত তা মানেনি।

আবার প্রবাসী বাংলাদেশি বা এনআরবি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এমনটাই মনে করা হলেও তা হয়নি। এনআরবি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের আমানতের প্রায় সবটাই দেশীয়।

(ওএস/এটি/এপ্রিল ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test