E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি ২১৪৬৪ কোটি টাকা

২০২৩ অক্টোবর ০৩ ১২:৪৪:১২
ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি ২১৪৬৪ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার : খেলাপি ঋণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে সার্বিক প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। তিন মাস আগে পুরো খাতে প্রভিশন ঘাটতি ছিল ১৬ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হাল নাগাদ প্রতিবেদনে প্রভিশন ঘাটতির এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

তথ্য বলছে, আট ব্যাংকের মোট প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৬ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা। কয়েকটি ব্যাংক বেশি প্রভিশন সংরক্ষণ করার কারণে ব্যাংক খাতের মোট প্রভিশন ঘাটতি কিছুটা কমেছে। প্রভিশন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকের সংখ্যা আগের প্রান্তিকের মতই আটটি রয়েছে। তবে নতুন করে একটি ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। আর নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রভিশন সংরক্ষণ করে ঘাটতির তালিকা থেকে বের হয়েছে একটি ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের মধ্যে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে থাকে, তার বেশিরভাগই আমানতকারীদের অর্থ। আমানতকারীদের অর্থ যেন ঝুঁকির মুখে না পড়ে, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে। এর একটি হলো- প্রভিশন সংরক্ষণ।

সাধারণত খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। তিন ধরনের খেলাপি ঋণ রয়েছে। ১) সাব স্ট্যান্ডার্ড (এসএস) বা মন্দ মানের খেলাপি ঋণ; ২) ডাউট ফুল (ডিএফ) বা সন্দেহজনক মানের ঋণ এবং ৩) ব্যাড অ্যান্ড লস (বিএল) বা কু ঋণ। তিন ধরনের খেলাপি ঋণের বিপরীতে যথাক্রমে ২০ শতাংশ, ৫০ শতাংশ এবং ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

এছাড়া অশ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে পরিচালন মুনাফার শুন্য দশমিক পাঁচ থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। প্রভিশন ঘাটতি থাকলে শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করা যায় না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে সর্বোচ্চ প্রভিশন ঘটতি রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকে। ব্যাংকটির ঘাটতির পরিমাণ ১১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের চার হাজার ৪৬৫ কোটি, বেসিক ব্যাংকের চার হাজার ৩১০ কোটি, রূপালী ব্যাংকের চার হাজার ৯৭ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৫১৬ কোটি, ঢাকা ব্যাংকের ৪৩৯ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ২০৪ কোটি ও এনসিসি ব্যাংকের ৪১৯ কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে।

প্রভিশন ঘাটতি থেকে বের হয়ে গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। আর নতুন করে প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে বেসরকারি এনসিসি ব্যাংক।

করোনা মহামারীর অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি সংকটে পড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। আগের একই পরিমাণ জ্বালানি ও খাদ্য পণ্য আমদানি করতে ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ ছাড় দেওয়ার পরও এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। এপ্রিল–জুন তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা; যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ। খেলাপি ঋণের হারও ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test