‘আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক এ দেশের বাস্তবতা বোঝে না’
স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দেওয়ার বাস্তবতা আছে। কিন্তু এ দেশের বাস্তবতা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক বোঝে না।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ব্যাংকিং অ্যালমানাক-এর ৫ম সংস্করণ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড হলো ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান। হার্ট ভালো থাকে রক্ত সঞ্চালনের কারণে। আজ আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভালো অবস্থানে নেই। বাংলাদেশের ঋণমানে আন্তর্জাতিকভাবে যে অবনতি হয়েছে তা আর্থিক খাতের কারণেই হয়েছে।
তিনি বলেন, একটা সময় ব্যাংকে রোডম্যাপ ছিল কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে সেগুলো সব চলে গেছে। এখন আবারও কেন সেই বিধি-বিধানের কথা বলা হচ্ছে, ঋণখেলাপির সংজ্ঞা আরও আন্তর্জাতিক মানের পর্যায়ে নিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে? রোডম্যাপ যে করা হচ্ছে, সেই রোডম্যাপ দিয়ে আমরা কতদূর আসলাম, কী কারণে সেখান থেকে বিচ্যুত হলাম, কখন হলাম তার যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। তার যৌক্তিক কারণ না বুঝে আবারও রোডম্যাপ করলে কোনো কাজ হবে না।
দেশের প্রখ্যাত এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয় নিয়ে খুবই আলোচনা হচ্ছিল। এই সুদহার এক জায়গায় বেঁধে দেওয়া হবে কি না, সেটা ছয় বা নয় শতাংশ হবে ইত্যাদি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে নাকি সম্পূর্ণ উদার করে দেওয়া হবে, ঋণ ও আমানতের চাহিদা অনুযায়ী সুদের হার নির্ধারণ হবে ইত্যাদি। এটা একসময় করা হয়েছিল, তখন এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছিল এর পক্ষে-বিপক্ষে। আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলেছিল এটা (সুদহার) উদারিকরণ করা হোক। সেই উদারিকরণ করার পরে নয়-ছয়ে আবারও বেঁধে দেওয়া হলো। অনেক দিন ধরে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, উচিত ছিল তার আগেই ছেড়ে দেওয়া। আবার যখন সম্পূর্ণ ছেড়ে দেওয়া হলো তখন আগের সব যুক্তি আমরা ভুলে গেছি।
তিনি বলেন, শুধু আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বাস্তবতা বোঝে না। একবারে সম্পূর্ণ ছেড়ে দিলে যেগুলো ছোট ছোট ব্যাংক, যারা নাজুক অবস্থায় আছে, যারা আমানত পায় না, তারা তো গ্রাহককে আমানতের জন্য বেশি সুদহার দিয়ে আকৃষ্ট করতে চাইবে। যারা খুব নিরপাদ ঋণ গ্রহীতা না, রিস্কি ঋণ গ্রহীতা, তাদের ঋণ দিয়ে আপাতত বেঁচে থাকতে চাইবে। সেখানেও সমস্যা তৈরি হবে। এটার আপাতত একটা সীমা থাকা দরকার। কারণ ঋণের সুদহারে যদি ঊর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে ওই ঋণ গ্রহীতারা যারা ঋণ নিচ্ছেন তারা হয় খুব ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ নেবেন অথবা যারা মনে করেন ঋণ নিচ্ছি আর ফেরত দেবো না তাদের কাছে তো সুদের হার কোনো বিষয় না। আমাদের বাস্তবতায় ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করে দেওয়ার বাস্তবতা আছে। কিন্তু এই বাস্তবতা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক বোঝে না।
নতুন প্রজন্মের ব্যাংক নিয়ে তিনি বলেন, তিন বছর আগে যে ব্যাংকগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল প্রভাবশালীদের, সেই ব্যাংকগুলো যে খুব বেশি আমানত সংগ্রহ করতে পারিনি এটা ঠিক। এক হাজার কোটি টাকার আমানতও অনেকে সংগ্রহ করতে পারেনি বা নেই। এভাবে তারা টিকে থাকতে পারবে না। এখন প্রশ্ন উঠেছে ওই ব্যাংকগুলো আবার একত্রিত করা হোক বা কমিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু এই ব্যাংকগুলোকে যখন অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল তখন বহুবার আমরা বলেছি বাংলাদেশের মার্কেটে এত বেশি জায়গা নেই। এটা এতদিন পর বুঝতে পারলো কর্তৃপক্ষ এবং ব্যাংকের সংখ্যা বেশি হয়েছিল বলে মনে করলো তারা।
আমানতকারী নিয়ে তিনি বলেন, একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, যে ব্যাংকগুলো আমানত ও ঋণরে দিক থেকে বড় সেগুলোতে বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারি হয়েছে। তারপরও এগুলোতে আমানত কমেনি। তার মানে এগুলোতে আমানতকারীরা কোন ব্যাংকে কেলেঙ্কারি হচ্ছে সেটা দেখেন না। একটা অলিখিত নিয়ম দেখেন আমানতকারী যে, ব্যাংকে টাকা রেখেছি সরকার আছে, বাংলাদেশ ব্যাংক আছে তারা রক্ষা করবে। এখন ব্যাংকে রক্ষা করতে হয় কারণ আমাদের মতো দেশে দু’একটা ব্যাংক উঠে গেলে আমানতকারীর বিরাট ক্ষতি হবে ও ব্যাংকের ওপর থেকে আস্থা চলে যাবে। এতে পুরো ব্যাংক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো না কোনোভাবে ব্যাংক টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করা হয়। তবে এটা সবসময় টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে অনেকগুলো দুর্বল ব্যাংক আছে সেগুলোকে একত্রিত করা যায় কি না দেখতে হবে। জোর করে করতে গেলে অন্য বেসরকারি ব্যাংক এর দায় নেবে না। সরকারি ব্যাংকের ওপর চাড়িয়ে দেওয়া হলে শেষ পর্যন্ত ক্ষতির বোঝাটা সুদহারের যে ফারাক সেটা বেড়ে গিয়ে পুরো অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবেই হোক সাহায্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে, সেই ক্ষতি তো সারাদেশকেই কোনো না কোনোভাবে নিতে হয়। আশির দশকে যখন বেসরকারি ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল তখন যে ভুলটা করা হয়েছিল, এখনো সেই ভূল করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আএএমএফ-বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে বেসরকারি খাতের ব্যাংকে অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু নিয়ম-কানুন দরকার সেই নিয়মের কথা চিন্তা করিনি। সেজন্য তারা (বেসরকারি ব্যাংক শেয়ারধারী। বলেছিল ব্যাংক দিয়েছি টাকা নেওয়ার জন্য। সেই ভুল আবারও যেন না করি। কিছু বছর ধরে বলা হচ্ছে যে মুক্ত অর্থনীতির যুগে যেকোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে শেয়ার কিনে তো অধিগ্রহণ করতে পারে। কাজেই সেটা করাই যায়, ব্যাংকের শেয়ার কিনে মালিকানা দখল করা যায়। কিন্তু আমরা যে ভুলটা করছি বা করে ফেলছি সেটি হলো ব্যাংকের মতো একটা সংবেদনশীল খাতে কয়েকটি কারণে একটি পরিবারের হাতে মালিকনা চলে যাচ্ছে একাধিক ব্যাংকের। তবে অবশ্যই ব্যাংক খাত উন্নত হচ্ছে, ডিজিটাল হয়েছে এটাও ঠিক।
(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- বাগেরহাটে হ্যামকো কোম্পানির কোটি টাকার লুন্ঠিত মালামালসহ ৯ ডাকাত গ্রেফতার
- মাইটিভি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নগরকান্দায় দোয়া ও মিলাদ
- টাঙ্গাইলে ম্যাটস ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- সুবর্ণচরে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা ধ্বংসে অভিযান
- মহম্মদপুরে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের মাঝে এয়ার-ফ্লো মেশিন বিতরণ
- রাজবাড়ীতে নেই করোনা পরীক্ষার কিট
- ফরিদপুরে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ
- বর্ষায় জলাবদ্ধতা: কারণ, প্রভাব ও টেকসই প্রতিকার
- টিকে থাকতে ধুঁকছে ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমগুলো, সরকারি বিজ্ঞাপনই শেষ ভরসা
- গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে বিরোধী শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচী
- ধামরাইয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফটো মিয়া মারা গেছেন
- দুধ দিয়ে কালসাপ পুষছে টাঙ্গাইল এলজিইডি
- এক দফা দাবিতে ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন স্মারকলিপি প্রদান
- কুষ্টিয়ায় ভাবিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ, কিশোর কারাগারে
- ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল পথসভা
- কালীগঞ্জে ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন
- নড়াইলে পুকুরে ডুবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু
- উন্নয়নের পূর্বশর্ত পরিকল্পিত জনসংখ্যা
- তিস্তা নদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশু নাজিমের লাশ উদ্ধার
- জাতিসংঘ অফিস: মানবাধিকার না কূটনৈতিক নজরদারি?
- এবার যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচ দেশে ভোটার কার্যক্রমের অনুমোদন পেল ইসি
- ‘আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবে নয়, নিজস্ব উদ্যোগেই আর্থিক খাতে সংস্কার’
- ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার পালানোর আর কোনো পথ নেই’
- ‘ফাঁস হওয়া অডিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, উপযুক্ত বিচার অবশ্যই হবে’
- এনসিপিকে শুভেচ্ছা জানাতে সড়কে শিক্ষার্থীরা, ক্ষোভ ঝাড়লেন সারজিস
- লক্ষ্মীপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন
- তামাক নয়, জীবনের পক্ষে দাঁড়ান
- লক্ষ্মীপুরের দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে
- মঙ্গল আলো
- হবিগঞ্জে ডোপ টেস্ট জটিলতায় আটকে আছে ড্রাইভিং লাইসেন্স
- হবিগঞ্জে ট্রাক-প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
- চিড়া-মুড়ি-কম্বল নিয়ে তিনদিন আগেই হাজির বিএনপি সমর্থকরা
- জামালপুর চেম্বার অব কমার্সের ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা
- বেলকুচিতে আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- দেখা গেছে শাবানের চাঁদ, শবে বরাত ২৫ ফেব্রুয়ারি
- টাঙ্গাইলে ঢাকা প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
- প্রার্থীর সাথে গোপন বৈঠকের অভিযোগে ৫ প্রিজাইডিং অফিসারসহ আটক ৬
- কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস আজ
- নৌকায় চড়ে বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছেন শেরপুরের কর্মীরা
- সাবেক এমপি লায়লা পারভিন সেঁজুতির জামিন আবেদন নামঞ্জুর
- টাঙ্গাইলে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে একটি কার্গোর ধাক্কায় অপর কার্গো জাহাজ ডুবি
- ঘাটাইলে নানা কর্মসূচির মধ্যে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- বর্ষায় জলাবদ্ধতা: কারণ, প্রভাব ও টেকসই প্রতিকার
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ