স্মৃতিঘেরা একাত্তর, ভীতি-আনন্দের দিনগুলি : ০১
রণেশ মৈত্র
আমি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির কথা বলছি। একাত্তরের নয়মাসের পাবনার কথা বলছি আনন্দ-বেদনার স্বাসরুদ্ধকর মুহুর্তগুলির কথা বলছি। মানুষের, বাঙালি জাতির একটি অংশের, একটি ক্ষুদ্র জেলার কথা বলছি।
সারা দেশের মতই পাবনা তখন উত্তপ্ত। অন্য অনেক জেলা থেকেই পাবনা একটু বেশী উত্তপ্ত ছিল-তৎকালীন গোপন পূর্ববাংলার কমিউনিষ্ট পার্টি নামধারী সশস্ত্র নকশালপন্থীদের টার্গেট হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-পাকিস্তানের সেনাশাসকের নয়। অথচ দেশ তখন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের দাবীতে টালমাটাল। তাই ন্যাপ-আওয়ামী লীগ যৌথভাবে লড়ছিল পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী এবং নকশালপন্থী-উভয় শক্তির বিরুদ্ধে। প্রতিদিন সকলা-বিকেল পাবনা শহরে উত্তাল মিছিল বের হতো আওয়ামী লীগ-ন্যাপ-ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের। কখনও যৌথভাবে-কখনও বা পৃথকভাবে। সময়টা ছিল ১৯৭২ এর মার্চ মাস-বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে অসহযোগ আন্দোলনের মাস। মিছিলগুলি চলতো ক্লান্তিহীন পদচারণায় বঙ্গবন্ধুর হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীতে।
টালমাটাল পাবনা শহর ২৫ মার্চ গভীর রাতে চুপিসারে ঢুকে পড়ে অস্ত্রপাতিসহ প্রায় ২০০শত পাকসেনা। দ্রুত তারা শহরের নানাপ্রান্তে আস্তানা গাড়লেও পাবনার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ যথা ডি.সি. এবং এস.পি. সহযোগিতা না করায় ঘুমন্ত পাবনা শহরে তারা বেসরকারি মাইক এক দোকান খুলে বের করে রিকসায় তুলে কারফিউ ঘোষণার প্রচার করলো যদিও শহরবাসী তা শুনতে পান নি ঘুমিয়ে থাকার কারণে।
এত কিছুর খবর না জানায় সেই কাক ডাকা ভোরে কেউ কেউ রাস্তায় বের হলে তাদেরকে ধরে আর্মির হেডকোয়ার্টারে ওয়াপদা অফিসের একটি কক্ষে তাদেরকে আটকে রাখে-সকলেই নির্য্যাতনের শিকারে পরিণত হন। এ ছাড়াও তারা দখল করে নেয় পাবনার পুরাতন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবন। সেখানে এসেই তারা সকল সরকারি- বেসরকারি টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। শহরের পূর্ব দিকে একটি বিশাল মাঠে অবস্থিত শ্যালোটিউবওয়েল পাহারা কক্ষেও ঢুকে পড়ে। এভাবে নানা দিক থেকে পাবনা শহরটিকে ঘিরে ফেলে যদিও স্থানীয় জনগণ বা প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মী-পুলিশ-আনসার তাদেরকে সামান্যতম সহযোগিতাও দেন নি।
আমার ঘুম ঘাঙলো ভোরে হঠাৎ বাসায় ঢুকে পাবনা জেলা স্কুলের হেড মওলানা-মওলানা কছিম উদ্দিনের ডাকে জেগে উঠে দরজা খুলতেই দেখি তাঁর বাই-সাইকেল ঠেস দিয়ে মওলানা সাহেব দাঁড়িয়ে। তিনি ঝড়ের বেগে বললেন “শহরে মিলিটারী এসে গেছে শহরের কারফিউ। বিলম্ব না করে নিরাপদ আশ্রয়ে সপরিবারে চলে যাও” বলেই সাঁ করে সাইকেলে চড়েই দৌড়। এক পেয়ালা চা খেয়ে যেতে বললাম। জবাবে মওলানা সাহেব বললেন, “না রণেশ। কেউই মনে হয় খবরটি জানেন না। তাই ক্যাপ্টেন মনসুর সহ সকল নেতাকে খবরটি পৌঁছাতে হবে” বলেই তিনি সবেগে চলে গেলেন।
মওলানা সাহেব আওয়ামী লীগ সমর্থক কিন্তু অসাধারণ কর্তব্য পরায়ন এবং দায়িত্ববোধ সম্পন্ন। তাই তিনি ছুটে গিয়ে সকলকে খবর পৌঁছে সম্ভবত: অনেকেরই জীবন রক্ষা করলেন।
২৫ মার্চ কাটলো সকলে এখানে সেখানে আশ্রয় নেওয়া ও প্রস্তুতি গ্রহণের কাজে। ২৬ মার্চ ছাত্রনেতারা বেরিয়ে পড়লো বাড়ী বাড়ী গিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করতে । কেউই অস্ত্র দিতে না করেন নি বরং সাগ্রহে দিয়ে দিয়েছেন।
কিন্তু ঐ ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় পাবনা বাজারের কাবুলিওয়ালা পাহারাদারদেরকে সঙ্গে নিয়ে নেতাদের বাড়ী বাড়ী যায়। ঐ অভিযানে তারা ধরতে সক্ষম পাবনা সদর মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পাবনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আমিন উদ্দিনকে, ভাসানী ন্যাপের সভাপতি ডা. অমলেন্দু দাক্ষী এবং পরিবহন ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতা আর সাইদ তালুকদার সহ কয়েকজনকে। তাঁদেরকে ধরে নিয়ে আটকে রাখে তাদের হেড কোয়ার্টার ওয়াপদা ভবনের একটি কক্ষে এবং চালায় নির্মম নির্য্যাতন। এঁদেরকে ২৯ মার্চ তারা হত্যা করে পাক আর্মি পাবনা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
২৭ মার্চ সন্ধ্যায় পাক-সেনারা পাবনার “বেয়াড়া ও অবাধ্য” পুলিশ বাহিনীকে বশে আনার লক্ষ্যে পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুলিশের অস্ত্রাগার দখলের লক্ষ্যে দু’তিনটি ট্রাকে অস্ত্র সজ্জিত অবস্থায় পুলিশ লাইনের নিকটস্থ জজকোর্টের সামনা-সামনি এসে পৌঁছা মাত্র পাবনার অসম সাহসী তরুণেরা, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা নিকটস্থ সকল দালানের উপর থেকে সমানে গুলিবর্ষণ করতে থাকলে বিপর্য্যন্ত পাক-বাহিনীর ৩/৪ জন নিহত ও বেশ কিছু আহত অবস্থায় তাদের হেড কোয়ার্টারে পালিয়ে যায়।
পুলিশের অস্ত্রাগার দখল অভিযানে ব্যর্থ হলে ২৮ তারিখ ঐ অস্ত্রাগার খুলে সকল অস্ত্র যুবকদের মধ্যে হাজার হাজার গুলিসহ বিলিয়ে দেওয়া হয়। অপর পক্ষে ঐ ২৮ মার্চ তারিখেই সকালে পুরাতন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভবনটির নানাদিকের দালানের ছাদ থেকে তাদের পরিকল্পনা মাফিক পাবনার পুলিশ ও তরুণেরা অজ¯্র গুলিবর্ষণ করতে থাকে টেলিফোন এক্সচেঞ্জে অবস্থানরত ২৮ জন পাক-সেনাকে লক্ষ্য করে। কিন্তু তারা ভবনটির দরজার জানালা বন্ধ করে তার নানা ফাঁক ফোঁকড় দিয়ে লক্ষ্যহীনভাবে সমানে গুলিবর্ষণ করতে থাকে প্রতিরোধ ভাঙ্গার লক্ষ্যে। এক পর্য্যায়ে পাক-বাহিনীর গুলি বর্ষণ বন্ধ হয়। বুঝা গেল-তাদের গুলি ফুরিয়ে গেছে। কয়েকশ যোদ্ধা ঐ দরজা জানাল ভেঙ্গে ভবনটিতে ঢুকে মৃতদেহ দেখতে পান ২৮টি সেনার ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ। তাদের চাই নিজ রাইফেলগুলি প্রতিরোধ-বাহিনীর হাতে এলো।
সূচিত হলো পাবনার আর এক দফা বিজয়। এই দফায় বিজয়টি ছিল তাৎপর্য্যপূর্ণ কারণ পাক-সেনাদের এই দফাতেই পাবনায় ভয়াবহ বিপর্য্যয় ঘটে। তখন থেকেই তারা পাবনা থেকে পালানোর পথ খুঁজতে সুরু করে। ২৮ মার্চ সারাদিন পাবনা শহর ও আসা পাশের গ্রামগুলি থেকে হাজার হাজার মানুষ এসে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে দিগি¦দিক প্রকম্পিত করে তোলে। কাঁপন ধরায় ওয়াপদা ভবনস্থ তাদের হেড কোয়ার্টারে অবস্থানরত বাদ-বাকী সেনা সদস্যদের মনে।
এই আতংক তাদের মনে আরও গভীর হয় যখন তারা জানতে পারে যে পাবনা-নগরবাড়ী রোড পাহারারত চারজন সেনাও গ্রামবাসীদের হাতে নিহত এবং অপর তিনজন পালাতে গিয়ে অপর একটি গ্রামে গ্রামবাসীদের হাতে নিহত হয়। পরিণতিতে প্রতিরোধ যোদ্ধারাও অধিকতর সংখ্যায় নিহত পাক-সেনাদের অস্ত্রগুলিকেও দখল করে নেয়।
এবার ২৯ মার্চ সকাল ১০টার দিকে পাবনার আকাশে একটি বিমান উড়তে দেখা যায়। বিমানটি থেকে নীচে অসংখ্য গোলা বর্ষণ করে আবার উড়ে চলে যায় জনমনে আতংক সৃষ্টি করে। আবারও মুহুর্তের মধ্যে ফিরে এসে শুধুই উড়তে থাকে কিন্তু আতংকে হাজার হাজার মানুষ ওয়াপদা ভবনের চারপাশে সৃষ্ট অবরোধ ভেঙ্গে কিছুটা পিছিয়ে গেলে ১০/১২ টি ট্রাক বিপরীত দিকে থেকে সাদা পতাকা উড়িয়ে ভাঙ্গ গলায় “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে ওয়াপদা ভবনের সামনে এসে দাঁড়ানো মাত্র প্রায় ১৫০ পাক-সেনা দ্রুতই ট্রাকগুলিতে উঠে পড়া মাত্র ট্রাকগুলি একই পথে ফিরে যেতে শুরু করে। তাদের সাদা পতাকা ও জয় বাংলা শ্লোগান তা গ্রামবাসীদের বুঝতে বিলম্ব হয় নি। তাই সারা রাস্তা তারা নানা ভাবে ব্যারিকেড রচনা করে নিয়ে ঘরের চালে, গাছের ডালে বা জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থেকে ট্রাকগুলিকে লক্ষ্য করে অবিশ্রান্তগুলি বর্ষণ করতে থাকে।
ঈলায়ন পর পাক-সেনারাও দিগবিদিগ জ্ঞানশূন্য হয়ে এদিক সেদিকে গুলি ছুড়তে থাকে চলন্ত ট্রাগুলি থেকে। এভাবে ঐ কনভয় নাটোরের গোপালিপুর পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকল পাক-সেনা ড্রাইভারসহ খতম হয়। সেই থেকে ২৯ মার্চ পাবনার প্রথম বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।
পাবনায় প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন সরকারি প্রশাসন তদানীন্তন জেলা প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা নূরুল কাদের খানের নেতৃত্বে। কাবাব কেটে বাংলাদেশের টাকা বানিয়ে তা চালু করা হয় মুদ্রা হিসেবে এবং তাই দিয়ে কেনাবেচাও সুরু হয় হাটে বাজারে সর্বত্র।
অপরদিকে শহরের অধিবাসীদেরকে শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে কিভাবে সম্ভাব্য দ্বিতীয় দফা হামলা প্রতিরোধ করা যাবে তাই নিয়ে আলোচনায় যা যা স্থির হয় তার মধ্যে প্রতিবেশী ভারত থেকে কিছু সামরিক প্রশিক্ষক ও ভারী অস্ত্র এনে স্থানীয় যুবকদের উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাটা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাবনার আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা এডভোকেট আমজাদ হোসেনকে ও ন্যাপের পক্ষ থেকে রনেশ মৈত্র (নিবন্ধের লেখক) কে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
যতদূর মনে পড়ে ২ এপ্রিল আমরা কলকাতা এসে পৌঁছাই শিকরপুর সীমান্ত হয়ে। কিন্তু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতে আসার ব্যাপারটি নিরাপত্তামূলক গোপনীয়তার স্বার্থে কাউকে জানানো হয় নি-করছিলেন চারটি শিশু সন্তানসহ সহধর্মিনী পূরবী, শ্যালিকা গৌরী ও ভাই ব্রজেশ। পূরবীকে বলে এসেছিলাম দিন কয়েকের জন্য বাইরে যেতে হচ্ছে সবাইকে নিয়ে সাবধানে থেকো। ফিরে আসতে বেশী দেরী হবে না।
কলকাতা আমাদের অচেনা শহর। অতীতে ২/৩ বার বাবার সাথে বাল্যকালে এলেও আমজাদ সাহেব তা-ও আসেন নি। উভয়েরই পকেটে একটি করে পাকিস্তানী ৫০ টাকার নোট-যা পাবনা থেকে দু’জনকেই একটি করে দেওয়া হয়েছিল।
অনেক ভেবে চিন্তে উঠলাম গিয়ে কালীঘাটে আমার খুড়তাত ভাই (দাদা) পরিমল মৈত্রের বাসায়। আগ্রহ সহকারেই তিনি আমাদেরকে থাকবার ব্যবস্থা করলেন। সেখানে পরদিন থেকেই ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ২/৩ দিনের মাথায় কমরেড রমেন মিত্র ও কমরেড ইলা মিত্রের মাধ্যমে পশ্চিম বাংলার প্রাদেশিক সি পি আই সাধারণ সম্পাদক কমরেড বিশ^নাথ মুখার্জীর সাথে সাক্ষাত করে দেশের বিস্তারিত জানিয়ে আমাদের উদ্দেশ্য পূরণে তাঁদের সর্বাত্মক সহযোগিতা চাইলাম।
তিনি তৎক্ষণাৎ আমাদের দু’জনকে তাঁর গাড়িতে উঠিয়ে নিজেই বর্ধমান হাউসে মুখ্যমন্ত্রীর কার্য্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখার্জীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে পাশের রুমে গিয়ে বসলেম। অজয় মুখার্জী তৎকালীন “বাংলা কংগ্রেস” দলের নেতা। তিনি ডেপুটি চিফ মিনিষ্টার কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা বিজয় সিংহ নাহারকেও ডেকে আনলেন। উভয়ে আমাদের কাছে থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং আমাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত হলেন।
অজয় মুখার্জী আমাদের লড়াই এবং আমাদের মিশনের সাফল্য কামনা করে বললেন, তাঁরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে জানাবেন কারণ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ এখতিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের। তবে যেহেতু মাত্র দুদিন আগে তাঁরা শপথ নিয়েছে এখনও দিল্লীর সাথে হটলাইন চালু হয় নি। তবে সত্বরেই হবে। হওয়ামাত্র তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের বিষয়টি জানাবেন।
আমাদের কলকাতার কোড নং তাঁকে দিয়ে যেতে বললে আমরা বাসার ফোন নম্বর তাঁকে দিলে তিনি বললেন কথা হওয়া মাত্র তিনি আমাদেরকে ফোনে জানাবেন। তাই ২/১ দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
ঠিকই দু’তিন দিন পর খবর এলো মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখার্জী ডেকেছেন। আবার বিশ^নাথ মুখার্জী নিয়ে গেলেন। এবারে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, প্রধান মন্ত্রী আমাদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী। যেতে চাইলে তিনি তৎক্ষণাৎ আমাদের জন্যে দিল্লীর দুটি রিটার্ন টিকেটের ব্যবস্থা করবেন। বিকল্প হিসেবে তিনি বললেন, ঐদিনই দিল্লী থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত কলকাতা পৌঁছাবেন সদ্য আসা তাজউদ্দিন আহমেদের সাথে আলোচনা করতে। আমরা কোলকাতাতেও ঐ বিশেষ দূতের সাথে কথা বলতে পারি।
আগের দিন তাজউদ্দিন সাহেব কলকাতা পৌঁছেছেন এটা জানতাম না। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রী অজয় বাবুকে জানালাম, তাউদ্দিন সাহেব এসেছেন তিনিই বাংলাদেশের প্রতিনিধি। কাজেই আমাদের দিল্লী যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। তাঁকে পাবনা পরিস্থিতি জানাব। তবে তাঁর সাথে আমজাদ সাহেবকে দেখা করিয়ে দিলে ভাল হয়। ঠিকানা নিয়ে আমজাদ হোসেন বললেন, রনেশ বাবু, আপনি বাসায় যান। আমি দেখা করে আসছি।
আমজাদ সাহেব ওখানেই আটাকে গেলেন। কমরেড ইলা মিত্রের বাসায় যেতেই কমরেড মনি সিং এর সাথে সাক্ষাত। রাজশাহী জেল ভেঙ্গে বেরিয়ে তিনি আগরতলা যান। সেখানে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক করে এসেছেন। আমার কাছে পাবনার খবর শুনলেন এবং পাবনার যে সকল ন্যাপ-সিপিবি নেতা, কর্মী এসেছেন তাঁরা পাবনার নিকটতম সীমান্ত এলাকায় যুবশিবির প্রতিষ্ঠা করে দেশ থেকে আসা তরুণদের রিক্রুটিং শুরু করতে বললেন। আর বললেন, ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ পরদিন কলকাতা পৌঁছালে তাঁকে সহ তাঁরা দিল্লী গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে আলাপ করে সার্বিক বিষয়াদি স্থির করে জানাবেন।
অত:পর দেখা হলো পাবনার কম: অমূল্যল লাহিড়ীর ও শামছুজ্জামান সেলিম এবং কামাল আহমেদের সাথে। শেষোক্তি দু’জন ঈশ^রদীর ছাত্র ইউনিয়ন নেতা-অমূল্যদাকে নিয়ে এসেছেন তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে। দুজনেই পার্টির কর্মী অমূল্য দা গোপনে পাবনা জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সম্পাদক ও প্রকাশ্যে ন্যাপের সভাপতি।
কামাল ও সেলিম গিয়ে নদীয়ার করিমপুরে (পদ্মানদী দিয়ে ঈশ^রদীর পাকসীর সাথে সংযুক্ত) বাসা ভাড়া নিলে সেখানেই অস্থায়ীভাবে পাবনা জেলার ন্যাপ-সিপিবি যৌথ রিক্রুটিং ক্যাম্প বা যুব শিবির স্থাপন করা হয়।
স্থান সংকুলান না হওয়ায় শীঘ্রই একটি বড় কাঁচাবাড়ী ভাড়া নিয়ে সেখানে ক্যাম্প স্থানান্তর করার কিছু কালের মধ্যে আমাদের প্রথম ব্যাচে কামাল, সেলিম, জাহিদ হাসান সহ চারজন বিশেষ গেরিলা প্রশিক্ষণে চলে গেলে আমি সার্বি দায়িত্বে থাকলাম পূরো নয় মাস ব্যাপী ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্বে।
এর যথেষ্ট আগেই দ্বিতীয় দফা পাবনার পতন ঘটে গিয়েছিল প্রবল শক্তিতে ১০ এপ্রিল পাক-সেনার বিশাল বাহিনী নগরবাড়ী ঘাট হয়ে পাবনার পথে রাস্তায় দু’ধারে আগুন দিয়ে গ্রামগুলি পোড়াতে পোড়াতে এবং গুলি করে সকলকে হত্যা করতে করতে তাদের পরাজয়ে প্রতিশোধ স্পৃহায় উন্মাত্ত হয়ে। আকাশবানীতে ঐ খবর পাওয়ায় দেশে ফেরা সম্ভব হলো না।
তাই ভারতে থেকেই দীর্ঘ মেয়াদী প্রস্তুতি নিয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার কাজে নিযুক্ত থাকতে হয়।
পাবনার পরিজনের কোন হদিস দীর্ঘকাল পাওয়া যায় নি।
আপাতত: স্মৃতিকথার প্রথম অংশের এখানেই সমাপ্তি।
লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত।
পাঠকের মতামত:
- সালথায় ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে নির্বাচনী পথসভা
- আগৈলঝাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
- কাপাসিয়ায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
- গোপালগঞ্জে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী নিহতের ঘটনায় মামলা
- ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরাইলের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে’
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করেছে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ
- সাতক্ষীরায় ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যান চালকের মৃত্যু
- মিথ্যা অভিযোগ ও পরিকল্পিত মানববন্ধনের প্রতিবাদে সোনারগাঁয়ে সংবাদ সম্মেলন
- বিষ্ণুপুর পিকেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে উত্তেজনা, প্রধান শিক্ষক হাসপাতালে
- মোনালি ঠাকুরের মাতৃবিয়োগ
- ময়মনসিংহে ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ১
- ফরিদগঞ্জে বসতঘর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- লোহাগড়ায় ৩ দিনের ব্যবধানে চেয়ারম্যানসহ ৩ খুন, জনমনে আতঙ্ক
- ‘সরকারি একটি ঘর পেলে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারতাম’
- রিকশা চালককে কুকুরের সঙ্গে শিকলে বেঁধে নির্যাতন, অভিযুক্ত গ্রেফতার
- শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আজকের এই অদম্য বাংলাদেশ
- রামপালে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনে ৫০০ রোগী বাছাই
- ‘সব বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নেব’
- বৃষ্টির পর দ্রুত বেড়ে উঠছে পাট, কৃষকের মুখে হাসি
- ‘আমের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে’
- সাভারে পিটিয়ে রিকশা চালকের পা ভেঙে দিলেন পুলিশ সদস্য
- ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক গড় আয়ু বাড়বে ৫ বছর
- সাভারে অসুস্থ প্রবীণ সাংবাদিকের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
- অকৃষি খাতের আয় এখন কৃষকের ভরসা
- ফুলপুরে জমি সংক্রান্ত জেরে শিক্ষক নিহত
- কাশিয়ানীর শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক দেলওয়ার আহমদ
- ‘দিল্লি ও লন্ডনে দেখা করতে চেয়েছিলেন জিয়া-খালেদা’
- দীর্ঘ বিরোধের জেরে খুন হন নড়াইলের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল
- ‘শেখ হাসিনার স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়’
- সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে জাদুঘরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- ভারতে নির্বাচন
- ‘কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি আওয়ামী লীগ’
- ময়মনসিংহের বিলুপ্ত জেলা যুব মহিলা লীগের স্বপ্না খন্দকারের সংবাদ সন্মেলন
- তারাকান্দায় নির্যাতিত ও অসহায় পরিবারের পাশে ওসি ওয়াজেদ
- ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
- বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র
- যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল
- ‘বিএনপির সময় ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বড় ছিল’
- ‘ইট মারলে পাটকেল খেতে প্রস্তুত থাকবেন’
- গণভবনে ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত শেখ হাসিনা
- চৌদ্দগ্রামে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫, আহত ১৫
- নাইজেরিয়ায় নামাজের সময় মসজিদে তালা দিয়ে আগুন, নিহত ১১
- ইংল্যান্ডে স্কুলে লিঙ্গ পরিচয় শিক্ষা দেওয়া যাবে না
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩৯
- ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন’
- সৌদিতে পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী
- ‘৬ জুন বাজেট দেব, বাস্তবায়নও করব’
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
- শান্তি কমিটির নাম পরিবর্তন করে ‘শান্তি ও সংহতি কমিটি’ রাখা হয়
- রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মাইক মার্কার ব্যাপক প্রচারণা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !