E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রুখো লুটেরা বাঁচাও স্বদেশ

২০২০ মার্চ ০৩ ১৮:২৪:৪৮
রুখো লুটেরা বাঁচাও স্বদেশ

চৌধুরী আবদুল হান্নান


অবশেষে বেপরোয়া অর্থ পাচারকারীদের আটকাতে নতুন উদ্যোগ আসছে। জানা গেছে, ব্যাংক ঋণের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী এমন ২০০ জনের একটি তালিকা ধরে এদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার কাজ হাতে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। পলাতক এসব পাচারকারীদের ধরতে ইন্টারপোল ও এফবিআইয়ের সহাতায় এদের দেশে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

ব্যাংক নিজ উদ্যোগে, নিজ ব্যবস্থাপনায় ব্যবসায়ীদের (অব্যবসায়ীদেরও) ঋণ দিয়েছে, কিন্তু তা আদায় করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রক আছে, এমনটি এখন আর ভাবনায় আসে না। প্রকৃতপক্ষ, নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণেই তো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে হাজার, চার হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ ত্যাগ করার, বিদেশে আবাস গড়ার। প্রসান্ত-বাচ্চুরা তো একদিনে তিন হাজার, চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন, সময় লেগেছে কয়েক বছর।

ব্যাংকিং কার্যক্রম সঠিকভাবে চলছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব যাদের তারা কি ঘুমিয়ে ছিলেন, নাকি ঘুম পাড়ানো হয়েছিল? তাই তো বলি বিড়াল কেনো ইঁদুর ধরে না?

ঋণ নেবে, শোধ করবে না। খেলাপি হলে পুনঃতফসিল করবে। আবার খেলাপি হবে, ব্যাংক মামলা করবে, অবলোপন করবে। ওরা রিট করে আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেবে-খেলাপি বলা যাবে না। অর্থাৎ খেলাপি ঋণগ্রহিতাকে খেলাপি বলা যাবে না। কে থামাবে এ সকল দুর্বৃত্ত, জনগণকেই তো এগিয়ে আসতে হবে। কতিপয় দুর্বৃত্তের কাছে দেশের মানুষ জিম্মি হতে পারে না।

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রদিষ্ঠানের জন্য নতুন আইন হচ্ছে, যেখানে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের সামাজিকভাবে বয়কট করার প্রস্তাব রয়েছে। তাদের রাষ্ট্রীয় বা সামাজিকভাবে কোনো সম্মাননা পাওয়াার বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বাদ রাখার কথা বলা হয়েছে।

ঋণখেলাপিদের যানবাহনের কাগজপত্র নবায়নে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া যায়, ব্যাংকের ছাড়পত্র ছাড়া নবায়ন করা যাবে না। যেমন খেলাপিরা জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না। প্রবাসে নিজের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন অনেকে এবং তাদের দলে ভিড়ে যাচ্ছে দেশের অর্থ পাচারকারীরা। প্রবাসীরাই তাদের চিহ্নিত করে দিতে পারেন। কানাডায় এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে “প্রবাসী বাংলাদেশ, টরেন্টো, কানাডা” নামক একটি সংগঠন।

এ সকল অর্থনৈতিক সন্ত্রাসী দেশের শত্রু, সমাজে ওদের উচ্চ আসন নয়, নিচের আসন প্রাপ্য। তাদের চিহ্নিত করে দিতে হবে, এতো জৌলুস নিজের অর্থে নয়, চুরি-ডাকাতির অর্থে।

যেহেতু দেশটা জনগণের আর ব্যাংকগুলোও চলে জনগণের অর্থে, তাই “রুখো লুটেরা, বাঁচাও স্বদেশ” এ দাবী আগাতে হবে।

লেখক : সাবেক ব্যাংকার।

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test