বেকারত্ব, সামাজিক অবক্ষয়; অতঃপর সরকারের করণীয় কি?
মাহাবুব রহমান দুর্জয়
গত একযুগে বাংলাদেশ যে এগিয়েছে একথা চোখ বন্ধ করেও স্বীকার করা যায়। যাকেই প্রশ্ন করবেন সেই বলবে বাংলাদে উন্নত হয়েছে, অবকাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে, জীবনমান পরিবর্তন হয়েছে বহুগুণ, শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, অর্থনৈতিক চক্র বড় হয়েছে এবং গড় আয়ু বেড়েছে। এতকিছু বৃদ্ধি পেয়েছে তাহলে নিশ্চই দেশে আর কোন সমস্যাই থাকে না? আমরা সভা-সমাবেশে এসব মুখস্ত গল্প করতে করতে শিক্ষিত তরুণ সমাজ যে বেকারত্বের যাতাকলে পিষ্ঠ হচ্ছে সে খবর কেউ রাখে নি। শিক্ষিত তরুণদের বিশাল একটা অংশ বেকারত্বের কারণে হতাশাগ্রস্ত। সদ্য লেখাপড়া শেষ করা নাগরিকদের মাঝে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা বেকারত্ব নামক মহামারী’র শিকার হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। বেকারত্ব একটি সামাজিক ব্যাধি অথবা সংকট। ইংরেজি আনএমপ্লোয়মেন্ট (Unemployment) শব্দটি থেকে বেকারত্ব শব্দটি এসেছে। একজন মানুষ যখন তার পেশা হিসেবে কাজ খুজে পায় না তখন যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাকে বেকারত্ব বলে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনি মেনিফেস্টো প্রকাশ করে, তাতে যেসব বিষয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়, সেগুলোর মধ্যে একটি ছিল কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং বেকারত্বের হার কমিয়ে আনা। এতে ২০১৩ সালের মধ্যে বেকার জনসংখ্যা ২৪ লাখে এবং ২০২১ সালের মধ্যে তা ১৫ লাখে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করা হয়। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনগুলোয়ও দারিদ্রতার হার হ্রাসের একটি উপায় হিসাবে আওয়ামী লীগ তাদের মেনিফেস্টোতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে। কিন্তু গত একযুগে বেকারত্বের হার, বিশেষ করে তরুণ বেকারত্বের হার না কমে বরং বেড়েছে। এ বিষয়ে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষত তরুণসমাজ দিনদিন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হতে থাকবে। সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এই মহাসমস্যাটি বিবেচনায় নিয়ে তরিৎ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হলে তরুণরা জীবনের গতি ফিরে পাবে।
শিক্ষিত মানুষ চাকরি পাবেন, অর্থ উপার্জন করবেন এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশে শিক্ষিত মানুষের মধ্যেই বেকারত্বের হার বেশি। তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ পান না। অন্যদিকে যারা কখনো স্কুলে যাননি, শিক্ষার সুযোগ পাননি; তাদের মধ্যেই বেকারত্বের হার সবচেয়ে কম। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ শ্রমশক্তির জরিপে বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পাস তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। উচ্চমাধ্যমিক পাস করাদের মধ্যে সাত লাখ ১৬ হাজার বেকার। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ বেকার। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ৯৪ হাজার লোক এখনো পছন্দ অনুযায়ী কাজ পাননি।
অন্যদিকে অশিক্ষিতদের বেকারত্বের হার সবচেয়ে কম, ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। তাদের সংখ্যা চার লাখ ১৩ হাজার। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে যেসব প্রতবিন্ধকতা রয়েছে বেকার সমস্যা তার মধ্যে অন্যতম। পারবিারকি, সামাজকি ও জাতীয় জীবনে পড়ছে এর নেতিবাচক প্রভাব। প্রচলিত অর্থে শ্রমশক্তির সেই অংশই বেকার, যারা কর্মক্ষম, কাজ করতে ইচ্ছুক, কিন্তু কাজের সুযোগ নেই। অন্যদিকে, কাজের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যারা শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে কাজ করতে সক্ষম নয় তাদেরকে বেকার বলা যায় না। গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের এক জরিপে উঠে এসেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ বেকার।
বেকারত্বের ধরন ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বেকারত্বকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- আর্থ-সামাজিক কাঠামোগত কারণে অর্থাৎ মূলধনের অভাব, প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কর্মক্ষেত্রের অভাবজনিত কারণে সৃষ্টি হওয়া বেকারত্বকে বলা হয় কাঠামােগত বেকারত্ব। হঠাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে সৃষ্ট বেকারত্বকে বলা হয় আকস্মিক বেকারত্ব। প্রযুক্তিগত ও কারিগরি উন্নয়নের জন্য কর্মক্ষেত্রে যে পরিবর্তন আসে এর ফলে সৃষ্টি হয় প্রযুক্তিজনিত বেকারত্ব। কিছু কিছু উৎপাদন খাতে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজ হয়। এ অবস্থাজনিত বেকারত্বকে বলা হয় মৌসুমি বেকারত্ব। বাংলাদেশে মূলত কাঠামোগত বেকারত্বই বিরাজমান। তবে আমাদেও অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক হওয়ায় কৃষিক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন বেকারত্বও বিরাজ করে।
বেসরকারি হিসাব মতে, বাংলাদেশে মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেকার। এ বেকারত্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। স্বল্পশিক্ষিতদের তুলনায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং তার চেয়েও একটু বেশি পর্যায়ের শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। সঠিক কর্মসংস্থানের অভাবে বাধ্য হয়ে অনেকে নি¤œমানের কাজ করছে। কর্মহীনতার হতাশায় কেউ কেউ নানারকম অসামাজিক অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বেড়ে গেছে ছিনতাই, চোরাচালান, মাদক কারবার, মাদকাসক্ত এবং দুর্নীতি। শিক্ষিত যুবকদের অনেকেই এসব অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে। পারিবারিক-সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে দেখা দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য। সর্বোপরি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে দেশের শ্রমসম্পদ চরম হতাশায় নিমগ্ন হচ্ছে। আমার পরিচিত অধিকাংশ অনেক দিন ধরে সরকারি চাকুরীর জন্য চেষ্টা করছে। জানিনা এরা সরকারি চাকুরীর বয়স শেষ হলে কি করবে। সরকারি চাকুরীর জন্য এরা যে পরিশ্রম করে তার কিছু অংশ প্রাইভেটে চাকুরীর জন্য করলে ভালো চাকুরী হতে পারে। অনেক প্রাইভেটে কোম্পানিতে দক্ষ জনবলের অনেক অভাব। আশাকরি একদিন সরকারি চাকুরীর পেছনে ছোটা বেকাররা বাস্তবতাটা বুজবে! যেসব দেশের অধিকাংশ মানুষ উপার্জনশীল হয়, নিজের খরচ নিজে চালাতে পারে, তদুপরি দেশের উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে, সেসব দেশে জনসংখ্যা জনশক্তিতে পরিণত হয়। আবার যেসব দেশের একটা বিরাট অংশের কর্মক্ষম মানুষ কাজ পায় না তথা বেকার থাকে, সেসব দেশে বাড়তি জনসংখ্যা একটি বোঝা হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় শ্রেণির অর্ন্তভুক্ত, যেখানে বেকারত্ব এক অভিশাপের নাম। তবে বাংলাদেশে বেকারের প্রকৃত সংখ্যা যে আসলে কত, তা নিয়ে বরাবরই ধোঁয়াশা রয়েছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে সারা বিশ্বে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ১৪.৬ শতাংশ। ২৫-এর বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৫.২ শতাংশ। সংস্থাটি বলছে, মহামারিতে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর তরুণরা সবচেয়ে বেশি বেকার হয়েছে। আইএলওর তথ্যে আরো দেখা যায়, মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পুরুষের বেকারত্বের হার যেখানে ২৩.৭ শতাংশ, সেখানে নারীদের ক্ষেত্রে তা ২৯ শতাংশ। বিবিএসের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, শ্রমশক্তি জরিপের আওতায় ১৭ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, দেশে মোট শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার, জনসংখ্যার তুলনায় কর্মসংস্থানের অনুপাত, কর্মসংস্থানের হার, কোন খাতে কত শ্রমিক কাজ করেন, কত ঘণ্টা কাজ করতে হয়, খন্ডকালীন শ্রমিকের সংখ্যা, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিকের সংখ্যা, যুব শ্রমশক্তির হার, দীর্ঘমেয়াদি বেকারের হার, নিরক্ষরতার হার, মাসিক মজুরি, শ্রমিক উৎপাদনশীলতা ও সার্বিক বেকারত্বের হার।
পৃথিবীর উন্নত অনেক দেশই প্রতি মাসে বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত জনগোষ্ঠীর হার প্রকাশ করে থাকে। এমনকি প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও পাকিস্তানের মতো দেশও শ্রমবাজার নিয়ে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এ রকম জরিপের ফল প্রকাশ করে। বিবিএসের মহাপরিচালক (ডিজি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে শ্রমশক্তি জরিপের কাজ শুরু করেছি। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আমরা মূল তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করব। ২০২৪ সাল নাগাদ আমরা সামগ্রিকভাবে বেকারত্বের হার জানাতে পারব।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখন থেকে আমরা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জিডিপির হার কত, তা জানাতে পারব। এ জন্য বিবিএস কাজ করছে।’ বিবিএসের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, নতুন শ্রমশক্তি জরিপ করতে ব্যয় হবে ১৫ কোটি টাকা। চার বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে ২০২৪ সালে। মূল জরিপের কাজ শুরু হবে আগামী বছর।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যখন আমাদের জানা খুব জরুরি যে দেশের বেকারত্বের হার কত, দেশের অর্থনীতি কোন দিকে যাচ্ছে ঠিক তখনই আমরা বিষয়গুলো জানতে পারছি না। উন্নত দেশগুলো কিন্তু সে হিসাব ঠিকই রাখছে এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। পিছিয়ে আছি আমরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো ২০১৭ সালের পর জানতেই পারছি না কী হচ্ছে আমাদের তরুণসমাজের। দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির তথ্য পাওয়া গেলেও কয়েক বছর ধরে কর্মসংস্থান ও বেকারত্বের হার জানা যাচ্ছে না। একাধিক গবেষণা সংস্থা এ নিয়ে তথ্য দিলেও তা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, কিন্তু আমাদের সামগ্রিক তথ্য জানা দরকার।’ চলতি বছরের জুনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) জানিয়েছে, করোনার কারণে আয় কমে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যার মূল কারণ হচ্ছে বেকারত্ব। সর্বশেষ ২০১৭ সালে শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ছয় কোটি ৩৫ লাখ। আর তাদের মধ্যে কাজ করে ছয় কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষ। কর্মক্ষম থেকে কর্মরত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাদ দিলে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। করোনাকালে যে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারিয়ে নতুন করে বেকার হয়েছে তাতে বেকারত্বের হিসাব ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে কভিড-১৯-এর কারণে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (এমএসএমই) কর্মরত ৩৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, করোনা মহামারির কারণে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। আইএলওর হিসাবে, এই তরুণদের সবাই পূর্ণকালীন কাজে নিয়োজিত থাকলে বাংলাদেশে করোনাকালে বেকারের সংখ্যা হতো অন্তত ১৬ লাখ ৭৫ হাজার। দেশের চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশের শীর্ষ অনলাইন প্লাটফর্ম বিডিজবস ডট কমের তথ্য অনুযায়ী, প্লাটফর্মটিতে ২০১৯ সালে ৬৩ হাজার ৬০৮টি চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। করোনার বছর ২০২০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৪৫ হাজার ২০৮টিতে। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় চাকরির বিজ্ঞাপন কমেছে ২৯ শতাংশ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিডিজবসে চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে ৩২ হাজার ৭২১টি। ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছরের ছয় মাসে কমেছে ২৮ শতাংশ, যা বছর শেষে ৫০ শতাংশ ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিডিজবসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ বছরের জানুয়ারিতে পাঁচ হাজার ৮১৪টি, ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ হাজার ৮২টি, মার্চে পাঁচ হাজার ৯৮৬টি, এপ্রিলে তিন হাজার ৩৩৬টি, মে মাসে চার হাজার ১২৯টি, জুনে পাঁচ হাজার ৪৬৪টি চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিউটিকেয়ার, হেলথ অ্যান্ড ফিটনেস ক্যাটাগরিতে চাকরি কমেছে ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া কৃষি খাতে (প্লান্ট, ফিশারিজ) ২৮ শতাংশ, ভ্রমণ ও পর্যটনে ২১ শতাংশ, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় ১১ শতাংশ এবং সেক্রেটারি, রিসেপশনিস্ট ক্যাটাগরিতে চাকরির বিজ্ঞাপন কমেছে ৯ শতাংশ।
এখন নিশ্চই অনেকের কাছেই মোটামুটি পরিষ্কারভাবে ধরা দিচ্ছে দেশে বেকারত্ব বা কর্মহীনতার প্রকৃত চিত্র। তবে এখন যে প্রশ্নটি খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসবে তা হলো, এই বেকারত্বের পেছনে দায়ী কে বা কী? খুব সাধারণীকরণের মাধ্যমে হয়তো এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে না। কিন্তু তারপরও, ছোটবেলা থেকে একটা লম্বা সময় পর্যন্ত মানুষকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হয় পরবর্তীতে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গঠনের উদ্দেশে, তাই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আদৌ বেকারত্ব দূরীকরণে কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে, সে ব্যাপারে এখনই ভাবতে হবে এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে গতানুগতিক কর্মমুখি/কারিগরি শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করা জরুরী বলে মনে করি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশ থেকে বেকারত্ব দূর করা স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ এবং অর্থনৈতিক কাঠামোগত পরিবর্তনে। প্রয়োজনে কর্মমুখী শিক্ষাবিস্তার, কুটিরশিল্পের প্রসারসহ আত্মকর্মসংস্থানমূলক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। যে যে কাজ ভাল পারে, সেই কাজে তাকে নিয়োগ দিতে হবে। দেশের তরুণদের উৎসাহিত করতে হবে।। উদ্যোক্তা তৈরীর জন্য সরকারীভাবে লোন দিতে হবে। শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে বৃত্তিমূলক, কারিগরি ও কৃষিশিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। কৃষিক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের জন্য সার, বীজ, যন্ত্রাংশ, কীটনাশক প্রভৃতির বাজার সম্প্রসারণ; হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুপালন, মাছ চাষ, বনায়ন ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প এবং বিদেশি বিনিয়োগের লক্ষ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুদ্র শিল্প এবং বিভিন্ন প্রচলিত-অপ্রচলিত খাতে মহিলা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা প্রদান করতে হবে। সর্বোপরি এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।
পরিশেষে বলতে হয়: বাংলাদেশে বেকার সমস্যা একক কোনো সমস্যা নয় বরং বহুবিধ সমস্যার জনক। এ সমস্যা ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারি সদিচ্ছা যেমন জরুরি, তেমনি সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বেরও প্রয়োজন। বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষিত ও পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন ধরনের কাজে উৎসাহী করে তুলতে পারলেই বেকারত্বের বিশাল বোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বিশ্বাস।
লেখক : সাবেক ছাত্রনেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
পাঠকের মতামত:
- দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাস করেনি চারটি বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী
- এসএসসিতে এবার সাতক্ষীরা জেলা যশোর বোর্ডের শীর্ষে
- শ্যামনগরে অগ্নিকান্ডে তিনটি দোকান ভস্মিভূত, ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি
- শ্যামনগরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
- ভোমরা বন্দরের জিরো পয়েন্টে ভারতীয় ট্রাকে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা
- টাঙ্গাইলবাসীর বোবা কান্নার ২৮ বছর
- বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার মনোনয়ন প্রত্যাহারের অভিযোগ
- এসএসসিতে দেশ সেরা যশোর বোর্ড, পাশের হার ৯২.৩৩
- সোনারগাঁয়ে ৬০ হাজার ইয়াবাসহ আটক ১
- গাজীপুরে নকল শিশুখাদ্য উৎপাদন কারখানায় ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান
- রাশিয়ার বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ আসবে পরমাণু উৎস থেকে : পুতিন
- মেলান্দহে মাদ্রাসা ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- নড়াইলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষকের মৃত্যু
- টুঙ্গিপাড়ায় নদীর পাড়ে মিলল নিখোঁজ ইজিবাইক চালকের লাশ
- প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর সাথে ভারতের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ
- সাফল্যের ধারাবাহিতায় রায়ের বাজার উচ্চবিদ্যালয়
- গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজে শতভাগ পাশ
- জামালপুরে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত
- বাগেরহাটে দাড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে ট্রাকের ধাক্কা, হেলপার নিহত
- তারুণ্যের ভাবনায় ‘মা’
- ‘বর্তমানে অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে কেউই ভালো নেই’
- সুন্দরবনে আগুন, তদন্ত কমিটির সময় বাড়লো আরও ৭ কর্মদিবস
- মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা চাই প্রতিদিন
- মামাকে সমর্থন দিয়ে ভাগিনার প্রার্থীতা প্রত্যাহার
- মৌলভীবাজার সদরে শোডাউন পাল্টা শোডাউনে সরগরম ভোটের মাঠ
- ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভাল শুরু মঙ্গলবার
- সুবর্ণচরে গাভীর সিজারিয়ান অপারেশন
- শাহরাস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ বসত ঘর পুড়ে ছাই, আহত ৩
- নগরকান্দায় বসত ঘরের দরজা ভেঙে চুরি
- গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
- ‘এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না এমন সিদ্ধান্ত ছিল না’
- ‘বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করছে মমতা’
- কালিগঞ্জ সীমান্তে ১১টি এয়ারগান ও ৬ হাজার ৯০০ রাউন্ড গুলি জব্দ
- ‘৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়নে সৌদির তাগিত’
- সালথায় ১২ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
- আফগানিস্তানে বন্যায় নিহত বেড়ে ৩১৫
- ‘নির্বাচনের পর সংকট আরও বেড়েছে’
- ৯ জনের ফাঁসি, ৯ জনের যাবজ্জীবন
- নড়াইলে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন
- বিশ্ব মা দিবসে মহম্মদপুরে র্যালি
- সুবর্ণচরে ৯ কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
- এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
- ‘সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি নেত্রীর উন্নয়ন মলিন করে দিচ্ছে’
- সরকারের তৎপরতায় দেশে ফিরছে এমভি আবদুল্লাহ
- অর্থপাচার রোধে তৎপর সরকার
- ‘আমার বাবা কাজী শাহেদ আহমেদ এখানকার ছাত্র ছিলেন’
- বেলকুচিতে শর্টসার্কিটে লাগা অগ্নিকাণ্ডে দুটি তাঁত কারখানা ভস্মীভূত
- গোপালগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ
- দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ ৫ এবং পাসে মেয়েরা এগিয়ে
- সরোদ শিল্পী ওস্তাদ সিরাজ আলী খানকে 'নাগরিক সংবর্ধনা' প্রদান
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !