E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পর্ব-১

৭ নভেম্বর : আজ শোষণ মুক্তির দিন, বিপ্লবের দিন 

২০২১ নভেম্বর ০৭ ১৪:৪১:২১
৭ নভেম্বর : আজ শোষণ মুক্তির দিন, বিপ্লবের দিন 

রণেশ মৈত্র


সকল প্রকার শোষণ, বিশেষ করে অর্থনৈতিক শোষণ থেকে মুক্তি লাভ এক বিশ্বজনীন আকাংখা। এ কথা অতীতেও যেমন সত্য ছিল, বর্তমানেও তাই এবং যতদিন পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে শোষণ বজায় থাকবে ততদিনই সর্বত্র মানুষের এমন আকাংখা থাকবে।

‘বিপ্লব’ শব্দটি ছোট বেলায় শুনেছিলাম। যৌবনের প্রারম্ভে বিপ্লবের দীক্ষা নিয়ে ছিলাম। আজও সেই একই প্রত্রয় নিয়ে বেঁচে আছি। বিপ্লব মানুষকে আশাবাদী করে তোলার এক বিস্ময়কর চেতনা।

প্রথম আমরা শুনেছি ফরাসী বিপ্লবের অমর কাহিনী। পড়েছি ইতিহাসেও। কলেজ জীবনে পাঠ্যবইতেও দেখেছি। ফরাসী বিপ্লবের মৌলিক চেতনা ছিল সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা। দুনিয়াব্যাপী এই চেতনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এ এক অবিস্মরণীয় ঘটনা যেন। দাস যুগ থেকে শুরু করে লড়াই করতে করতে সামন্তবাদী যুগ পেরিয়ে বিপ্লবী ধরণের পরিবর্তন ঘটাতে ঘটাতে মানুষ আজ পুঁজিবাদী ব্যবস্থাধীনে চলে এসেছে। এসেছে গোটা বিশ্বই।

বাংলাদেশে “বিপ্লব” নামে এক দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণকারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একাংশ মুজিব বাহিনীর প্রধান অংশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) বঙ্গবন্ধু হত্যার নির্মম ঘটনার পরে সামররিক বাহিনীর মেজর জিয়াউর রহমানকে অবলম্বন করে। ঐ যুগে সভা-সমাবেশ-মিছিলগুলিতে জাসদের নেতা কর্মীদেরকে শ্লোগান দিতে শুনেছি “কমরেড জিয়া-লাল সালাম”। তারা দাবী করতো তারা বিপ্লব করেছে কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তারা সন্ত্রাস করেছে-সন্ত্রাসবাদী ছিল তারা। এ কারণে অনেককে তাঁদের অমূল্য জীবনও দিতে হয়েছে-যেমন হয়েছে নকশালপন্থীরা।

মজার ব্যাপার, এঁরা কেউই শোষিত জনতার মুক্তির জন্য আদৌ কোন কিছু করেন নি। নকশাল রাতে কৃষকের জমি কেড়ে নিয়েছে-জমির ফসল কেটে নিয়ে আবার সেই কাটা ফসলের ক্ষুদ্রাংশ কৃষককে ফেরত দিয়ে, আর কিচুটা গরীবদের মধ্যে বিনামূল্যে বিলি করে নিজেদেরকে বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী বলে জাহির করতো। কোন কৃষক আপত্তি জানালে তাকে গুলি করে মেরে ফেলতো।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে জাসদ প্রথম দিকেই তারা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ঢাকস্থ সরকারি বাসভবন ঘেরাও করে।

জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর একাংশ আটক করলে জাসদ এর গণবাহিনী জিয়াকে মুক্ত করে। পরবতীকালে ঐ “কমরেড জিয়াই” জাসদ নেতা-কর্মীদেরকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক করেন। এরা তখন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার স্থপতি হিসেবেও মানতো না। এসবের বেনিফিসিয়ারী হয়েছে একমাত্র স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামী সহ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলি আর যে সকল বামপন্থী শক্তি, যথা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি মুক্তিযুদ্ধের সরকারের পরিপূর্ণ বিরোধিতা না করে গঠনমূলক সমালোচনার নীতি গ্রহণ করেছিল তাদেরকে সারাদেশে রুশ-রুশ ভারতের দালাল”, “আওয়ামী লীগের বিটিএস বলেও প্রচার চালাতো। প্রায় এক দশ কবা তার কিছু বেশীকাল ধরে জাসদের ভগ্নাংশ আওয়ামী লীগের সাথে হাত মেলায় ১৪ দলের নামে এবং এম.পি. মন্ত্রীত্বও পেয়ে যায়। যাহোক, তখন দেশে তারা সকলে মিলে যে ভয়াবহ অরাজকতা ও শংসংশয় সৃষ্টি করেছিল তার ফলে বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট ভোররাতে সপরিবারে নিহত হওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।

সুতরাং এটি বিপ্লব তো ছিলই না বরং প্রকৃত অর্থে ছিল প্রতিবিপ্লব। যার ফলে তখন আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রলীগের অনেককেও ঐ সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হতে হয়েছে। এই সন্ত্রাসীরাই দাবী করেছে তারা ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রী’, মার্কসবাদী প্রভৃতি। এ ধরণের কাজ ও প্রচারে তখন মার্কসবাদী ও প্রকৃতি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের বিপুল ক্ষতি হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যা সদ্যই শুরু হয়েছিল-তাও বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

পুঁজিবাদ

বাংলাদেশ ও তার জনগণ এখন আর তাদের পক্ষে নেই। অতীতেও ছিল না। ছিল ভয় ও শংকা তাদের সন্ত্রাসী কার্য্যলাপের জন্যে। এর পরবর্তীকালে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। পুঁজিবাদ দেশকে গ্রাস করেÑবাংলাদেশের মুষ্টিমেয় লোক এমন কোটিপতি-যা এমন কি পাকিস্তানী আমলেও ছিল হাতে গোসা। প্রতি বছর একদিকে যেমন ঐ পুঁজিপতিরা তুমুল বেগে ফুলে ফেঁপে উঠছে-তেমনই আবার বেকারত্ব, অন্যায়ভাবে স্বল্প বেতন, কৃষকদেরজমি হারানো, কৃষিজমির অন্য কাজে উন্নয়নের নামে ব্যাপক ব্যবহার, কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য কৃষক পর্য্যায়ে না পাওয়া, গোটা কৃষি অর্থনীতি দালালদের সি-িকেটের হাতে চলে যাওয়া প্রভৃতির কারণে কোটি কোটি মানুষের ক্ষোভের অন্তনেই।

অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে নিরাপদ দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে একদিকে ঋণখেলাপি হওয়া, সেই লাখো-হাজার কোটি লোনের টাকা অবৈধভাবে কিন্তু নিরাপদে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে যেখানে বহুতল ঘরবাড়ী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। পাচার হচ্ছে এভাবে জনগণের কষ্টার্জিত গচ্ছিত টাকা ।

রুশ-বিপ্লব

মেহনতি মানুষের এমনতর শোষণ অবসান কিভঅবে হতে পারে, কাদের দ্বারা হতে পারে বা বিপ্লব যদি সফল হয় তবে দেশ ও জনগণের কি কি সমস্যার সমাধান হতে পারে। বহু গবেষক এ বিষয়ে গোটা পৃথিবেিত বহুদিন ধরে অনেক গবেষণা করেছেন। মানবমুক্তির শ্রেষ্ঠতম গবেষক কার্ল মার্কস, এঙ্গেল্স্ ও ভøাদিমির ইলচ লেলিন এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গৃহীত তত্ত্ব আবিস্কার করেন যা অনুসরণে মহামতি লেনিনের নেতৃত্বে-১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর এক বিপ্লব সংঘটিত হলো বিতাড়িত হলো অত্যাচারী শাসক জার, দখল হলো-সমগ্র শাসন কাঠামো জনগণের দ্বারা। জারদের সহযোগি সকল আমলা কর্মচারী প্রতি বিপ্লব সাধনের চেষ্টায় উন্মত্ত হয়ে উঠলো। কঠোর হস্তে নির্মমভাবে সেই প্রতিবিপ্লব ধ্বংস করে দিয়ে কমিউনিষ্ট পার্টির অবিসংবাদিত নেতা ভøাদিমির ইলিচ লেনিনের নেতৃত্বে। সামান্তবাদ পুঁজিবাদের কবর রচনা করে সমাজতন্ত্র সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ঘোষিত হলো। গোটা বিশ্ব অবাক দৃষ্টিতে দেখলো লেনিন স্তালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত রাশিয়ায় কী অভূতপূর্ব সাফল্যের সাথে সামন্তবাদ পাঁজিবাদ ও সকল প্রকার শোষকের যাবতীয় শোষণের অবসান হলো। পুঁজিবাদ বিদায় নিলো। জনগনের সম্পত্তি, জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে মালিকানা তাদের হাতে দিয়ে দেওয়া হলো। শ্রমিকরা দেশের প্রধান শক্তিতে পরিণত হলো।

বিশাল দেশটির নানা সুবিধাজনক স্থানে বৃহৎ ও অন্যান্য শিল্প কারখানা স্থাপন করে যথাশীঘ্র সম্ভব সর্বোচ্চ উৎপাদনে গিয়ে স্বল্পকালের মধ্যেই একটি আত্মনির্ভরশীল স্বনির্ভর দেশে পরিণত করা হলো। বন্ধনমুক্ত করা হলো দেশের নারী সমাজকে। নারী সমাজ পুরুষের সমান অধিকার অর্জন করলেন। চাকুরী-বাকুরী ব্যবসা-বাণিজ্যেও তাঁরা পুরুষের সমকক্ষ হয়ে উঠলেন। দোকানে-বাজারে-হাটে-ঘাটে-তহালাকের স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, আহার প্রভৃতিতে সকলের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞান শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। ধর্মকে রাষ্ট্রীয় নয় ব্যক্তিগত বিষয়ে পরিণত করা হয়। মন্দির, মসজিদ, গীর্জার অস্তিত্ব রক্ষা করা হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।

সকল পন্য হ্রাকৃত মূল্যে যাতে সকলেই প্রয়োজন মত কিনতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়। সব কিছুর মালিকানা সরকারের হওয়াতে দেশের সর্বত্র সব ধরণের পণ্য একই মূল্যে সকলের কিনবার অধিকার স্বীকৃত হয়।
দেশের আনাচে কানাচে সর্বত্র খাঁটি খাদ্যপণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়। প্রতিটি মানুষের কাজের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা হয়। বেত-বৈষম্য দূর করা হয়।

অসংখ্য স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলে সর্বজনীন বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়। উচ্চ এবং সমমানের অসংখ্য হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়। বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা, ওষুধ-পণ্য-অপারেশন প্রভৃতি রোগাক্রান্তের জন্য ব্যবস্থা করা হয়। সাধারণত: সমুদ্রতীরগুলিতে ও অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর স্থানগুলিতে বিশাল বিশাল হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়। শ্রমিকরা ছিলেন সর্বাধিক সুবধিাপ্রাপ্ত। তাঁদের জন্যে নির্মিত বহুসংখ্যক হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি শোর্চ চাক্ষুষ দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার ১৯৮১ সালে স্বল্পকালীন (মাত্র ছয় সপ্তাহের) সফরে। আমরা পাঁচজনের এক ডেলিগেশন সিপিএস ইউ এর নিমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে সম্পূর্ণ বিনা খরচে যাতায়াত-থাকা-খাওয়া-দেখা-সাক্ষাত-বেড়ানো প্রভৃতির সুযোগ পাওয়াতে তা সম্ভব হয়েছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়ন জ্ঞান-বিজ্ঞানে এতই উন্নত হয়েছিল যে মহাশূন্যে স্পুটনিক নামক যান তারাই পাঠানোর সুযোগ এবং সকল সুযোগ পেয়েছিল। এশিয়া-আফ্রিকা সহ সমান্ত পরাধীন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তারা অপরিসীম সহযোগিতা করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, চীন-বিপ্লব, ভিয়েতনাম বিপ্লব সহ বহু বিপ্লব রুশ কমিউনিষ্ট পার্টি পরিচালিত সরকারের নৈতিক ও বিপুল পরিমাণ বষয়িক সহযোগিতায় ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে।

তীব্র অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা একদিকে তৃতীয় বিশ্বের স্বাধীনতাকামী জাতিসমূহ পেয়েছে-তেমনই তারা তীব্র বিরোধিতা করেছে সারা বিশ্বের শোষক ও পরাধীন-পদানত করে রাখা সা¤্রাজ্যবাদী বিশ্বকে সকল ক্ষেত্রে। তাই বঙ্গবন্ধু, ইন্দিরা গান্ধী, ইন্দোনেশিয়ার শোয়েকর্নো, মিশরের কর্ণেল নাসের, আমাদের মওলানা ভাসানী এবং বিশ্বের অপরাপর দেশের সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী নেতাদেরও অকৃত্রিম বন্ধু ও সহযোগিতে পরিণত হয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়া।
সা¤্রাজ্যবাদী শত্রুরাও সর্বদা সক্রিয় থেকেছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করার সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার উৎখাত সাধনের। বহু স্থানে তারা পরাজিত হয়েছে-সমাজতন্ত্র অক্ষুন্ন থেকেছে। যেমন, কিউবা, ভিয়েতনাম, চীন (যদিও আজ প্রশ্নবোদ্ধ তবে নতুন মডেল পরীক্ষারও) প্রভৃতি দেশে।

তবে পূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের বেদনাদায়ক পতন ঘটে ১৯৯১ সালে। রাশিয়া, বুলগেরিয়া চেকোশ্লোভাকিয়া সহ ইউরোপী সকল আজ ৩০ বছর যাবত সমাজতন্ত্র বিপর্য্যস্ত অবস্থায়। তবে যেহেতু শোষণ-ব্যবস্থা ঐ দেশগুলিসহ পৃথিবীর সকল দেশে পুঁজিবাদী প্রথায় অব্রাহত এবং সবর্কত্র মানুষ শোষিত, অত্যাচারিত ও নিগ্রহীত-তাই ভবিষ্যতে নতুন মডেলে নতুন ধরণের সমাজতন্ত্র নতুন পদ্ধতিতে নতুন নতুন বিপ্লবের মাধ্যমে গড়ে উঠবে সন্দেহ নেই।
শুধু প্রয়োজন সেই বিপ্লব সংগঠিত এবং নেতৃত্ব দেওয়ারমত সংগঠনও ও বিপ্লব সশস্ত্র হবে কিনা তা ভবিষ্যতের আলোচনাই বলে দেবে। আজ দরকার সংগঠন, অধ্যায়ন ও ইতিহানিষ্ঠতার ভিত্তিতে নতুন যুব সমাজকে গড়ে তোলা। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক শ্রমজীবী মানুষ এক হোক।

(চলবে...)


লেখক : সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক।

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test