দোষারোপের রাজনীতি ও গণতন্ত্র
রণেশ মৈত্র
গণতন্ত্রিক অধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, আইনের চোখে সকল নাগরিকই সমান, বাক স্বাধীনতা, সংগঠন গড়ার স্বাধীনতা, মানুষে মানুষে বিরাজমান ধর্মীয় ও অথনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ-এগুলি চাইলেও পরাধীন ভারত বর্ষে, বৃটিশ শাসকদের শাসনাধীন ভারতবর্ষে তা পাওয়া যায় নি-পাওয়ার কথাও ছিল না কারণ এগুলি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্তই হলো দেশের আমলে আদৌ ভারতবর্সে ছিল না। কিন্তু আন্দোলনকারী তৎকালীন দলগুলি ও জনগণের আকাংখা ঐ বিষয়গুলির প্রতি জাগত ছিল।
ইংরেজরা এই দাবিতে প্রমাদ গনেছে। তারা ঠিকই বুঝে নিতে পেরেছিলো যে ঐ দাবিগুলি মেনে নিলে ভারতবর্ষ তাদের শাসন-শোষণাধীনে থাকবে না। তাই তারা শুরু করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরকে নিপীড়ন নির্য্যাতন ও নানাবিধ জুলুম ও অত্যাচার। এই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনেরও যখন জনগণের আকাংখা অর্জিত হচ্ছিল না-তখন সশস্ত্র বিপ্লবীরা সংগঠিত হতে থাকেন। লক্ষ্য, একের পর এক বৃটিশ শাসক এবং তাদের দালানদের গোপনে হত্যা করে ইংরেজদেরকে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য করা।
একে একে গঠিত হতে থাকলো মুক্তিকামী সশস্ত্র বাহিনী-যাদের একটির নাম ছিল যুগান্তর ও অপরটির নাম অনুশীলন। এঁরা কিছু কিছু ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের দালালদের হত্যা করে তাদের কাছ থেকে আরও হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র সংগ্রহ করতে থাকে। এভাবে তাঁরা অস্ত্র সমৃদ্ধ হন এবং এক পর্যায়ে চট্টগ্রামে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ওখানকার পুলিশের অস্ত্রাগারও লুঠ করে ইংরেজ হত্যা চালানোর লক্ষ্যে অগ্রসর হতে নিয়ে বিপ্লবীরা ধরা পড়ে যান এবং তাঁদের কাউকে কাউকে ফাঁসিতে লটকাপে হয় এবং অনেককে দ্বীপান্তরে পাঠিয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ভীত সন্ত্রস্ত ইংরেজরা এতেও তৃপ্ত না হয়ে দ্বীপাান্তরে প্রচুর মার্কসীয় বই পত্র পাঠান যাতে ওগুলি পড়ে বিপ্লবীরা সন্ত্রাসবাদের পথ পরিসর করে। বই পত্র পাঠ করে তাঁরা প্রায় সকলেই মার্কসবাদে দীক্ষিত হন এবং সন্ত্রাসবাদের পথ পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে ফিরে আসেন। জানতে পেরে ইংরেজ শাসক গোষ্ঠী একে একে তাঁদেরকে আন্দোলন (দ্বীপান্তর) থেকে ফিরিয়ে আনেন। কাউকে কাউকে আন্দোলনে না পাঠিয়ে বক্সার ও অন্যান্য জেলে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। তাঁরাও ধীরে মুক্তি পেলেন-ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ক্রমান্বয়ে শক্তিশারী হতে থাকলো।
অপরদিকে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত জওয়াহের লাল নেহেরু, মওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখের নেতৃত্বে দিনে দিনে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে থাকলো কখনও নিজস্ব শক্তিতে আবার কখনও বা কমিউনিষ্ট ও অন্যান্য মার্কস পার্টির সঙ্গে একজোট হয়ে।
এবার অস্থির হয়ে ইংরেজরা নতুন কৌশল নিলো ভারতবর্ষের স্বাধীনতার মৌলিকত্ব বিনষ্ট করতে। মুসলিম লীগ নেতা ইংল্যান্ড থেকে পাশ করা ব্যারিষ্টার কেতাদূরস্ত মানুষ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্কে হাত করে ভারতের মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্রের দাবী উত্থাপন করানো। আর এই বিভেদমূলক দাবীর যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা সৃষ্টি করে হাজার হাজার নিরীহ হিন্দু-মুসলমানের রক্তের স্রোত দেশ জুড়ে বইয়ে দিতে থাকলো। কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী সাম্প্রদায়িক অংশ এই দাঙ্গায় ইন্ধন জোগালো।
অপরদিকে মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত জওয়াহের লাল নেহেরু, মওলানা আবুল কালাম আজাদ বিরোধিতা করতে থাকলেন সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে দেশ বিভক্তির। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে থাকলে শেষ পর্য্যন্ত মহাত্মা গান্ধী দেশ বিভাগে সম্মতি দিলে ১৯৪৭ এর ১৪ আগষ্ট মুসলমানের পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ব বাংলা, পূর্ব পাঞ্চাব, সিন্ধু প্রদেশ বেলুচিস্তান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এই পাঁচটি অঞ্চল নিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলো দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমে।
ভাবা হয়েছিল, এবারে সাম্প্রদায়িকতার অবসান হবে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হবে এবং সকল প্রকার বিশেষ করে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীভূত হবে।
কিন্তু কার্য্যত: কোনটাই হলো না। সাম্প্রদায়িকতা আরও বেড়ে যেতে থাকলো সমগ্র পাকিস্তানে। বেড়ে যেতে লাগলো শোষণও। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী, স্বয়ং জিন্নাহ সহ তীব্র বাঙালি বিরোধী ভূমিকা নিয়ে ঘোষণা দিলেন, একমাত্র ঊদূই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। বাংলাকে হিন্দুর ভাবা, মুসলমানের ভাষা নয়, ভারতে ভাষা, পাকিস্তানের দুশমনদের ভাষা বলে চিত্রিত করা হলে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন ঐতিহ্যবাহী বাঙালি জাতি। ১৯৪৮ এর মার্চে একদফা, ১৯৫২ তে আর একদফা তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠলো বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে। তীব্র দমননীতির মাধ্যমে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী ভাষা আন্দোলন দমন করতে উদ্যত হলো। ঢাকার বুকে গুলি ছুঁড়ে রাস্তায় রক্তের স্রোত বহালো অসংখ্য আন্দোলনকারীকে কারারুদ্ধ করলো।
সেই যে বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, আইনের শাসন সব কিছু অলীক ধারণায় পরিণত হলো। কিন্তু বাঙালি দমে যায় নি-ভয়ও পায় নি। তারা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে দিনে দিনে তীব্রতর করেছে। অবশেষে বিজয়ও অর্জিত হয়েছে।
অত:পর পাকিস্তানের ২৩টি বছর ধরেই চলেছে সরকারের পক্ষ থেকে সীমাহীন নির্য্যাতন অপরপক্ষে জনগণের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক, আপোষহীন সংগ্রাম। এই চলতে চলতে গণঅভূত্থান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব সমগ্র বাঙালি জাতির উপর হলো সুপ্রতিষ্ঠিত। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দৃড়ভাবে দাঁড়ালো ঐ গণ-অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয় দফা ও ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের ১১ দফা কর্মসূচীর প্রতি দ্বিধাহীন সমর্থন জানিয়ে। এলো ১৯৭০ এর ঐতিহাসিক নির্বাচন। ঘটলো আওয়ামী লীগের একক বিজয় গোটা পাকিস্তানের সমগ্র আসনের মধ্যে। দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে দাঁড়ায় পিপল্স্ পার্টি, পাঞ্চাবের জেড.এ.ভুট্টো আর তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় ন্যাশনাল আওয়া পার্টি। কিন্তু এই ফলাফল অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর হাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানালে ১৯৭১ এর মার্চ থেকে শুরু করা হয় অসহযোগ আন্দোলন।
তাতে কাজ তো হলোই না। প্রায় তিন সপ্তাহব্যাপি অসহযোগ আন্দোলন চলার পর পাক-শাসক গোষ্ঠী ভয়ংকর হায়েনার মত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে ২৫ মার্চ অতর্কিতে গভীর রাতে ঝাঁপিয়ে পড়লো ঘুমন্ত বাঙালি জাতির উপর। রাজার বাগের পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও পীলখানার ইপিআর হেড কোয়ার্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আবাসিক হল সমূহ নৃশংস আক্রমণের শিকার হলে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। অত:পর এই প্রতিরোধ যুদ্ধ গিয়ে গড়ায় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে। ঐতিহাসিক সফলতা অর্জিত হয় একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর যখন পাকিস্তানের হিংস্র সফর নায়ক নিয়াজী তাঁর ৯৩,০০০ বাহিনী সহ বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের যৌথ কম্যাণ্ডের কাছে তাবৎ অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে।
এবার প্রচণ্ড আশাবাদের নতুন করে জাগরণ ঘটতে থাকে। বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজ উদ্দিন তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্যগণ সহ মুজিবনগর থেকে ঢাকায় এসে পাকিস্তানের কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু মুক্তি এবং তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকলেন। ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারী সশরীরে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করলেন। গ্রহণ করলেন সকল ওয়াদা বাস্তবায়নের। রচনা করলেন বাহাত্তরের সংবিধান তাঁর সহযোদ্ধার ড. কামাল হোসেন।
এই সংবিধান আমাদের দেশে এক ঐতিহাসিক গুরুত্ব বয়ে আনলো। ভাষা আন্দোলন থেকে ধারাবাহিকতার সাথে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে পাকিস্তান সরকারের আমলে সংঘটিত তাবৎ আন্দোলনের নির্য্যাস, গণতান্ত্রিক আন্দোলন সমূহের মর্মবানী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল আদর্শ ও নীতি সমূহ যথা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতস্ত্র ও জাতীয়তাবাদ সুষ্পষ্টভাবে লিখিত হলো ঐ সংবিধানে।
সংবিধানটির পেছনের তার ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল দীর্ঘ ২০০ বছরের বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের অপশাসনের প্রতি অসীম ঘৃণা, পাকিস্তানের আমলের লিখিত সাম্প্রদায়িকতা ও তাবৎ বৈষম্য, বাঙালির অধিকার হীনতা, গণতন্ত্রের পিঠে ছুরিকাঘাত ও নানা অত্যাচার নির্য্যাতন ও বৈষম্যের রক্তস্নাত ইতিহাস। প্রত্যয় ঘোষিত হলো, গণতন্ত্র চিরস্থায়ী হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুন্ন রাখা হবে; আইনের চোখে সকল মানুষরা নাগরিক সমান অধিকার সম্পন্ন হবেন, অর্থনৈতিক বৈষ্যম্য দূরীভূত হবে চিরতরে তাই প্রায় আড়াই না হলেও দেড় শতাধিক বছরের বাঙালি জাতির অবিশ্রান্ত আন্দোলনের ফসল এই পবিত্র বাহাত্তরের সংবিধান।
কিন্তু বাঙালির কপালে তা সইলো কি? সংবাদপত্র বহুলাংশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আজও নিমন্ত্রিত দুর্নীতিতে দেশটি পুনরায় চ্যাম্পিয়ন, অর্থনীতি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, বাহাত্তরের সংবিধান বিধ্বস্ত, জিয়ার বিসমিল্লাহ এবং এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শের, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সুস্পষ্ট বিরোধী হলেও তা দিব্যি চালু রয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আংশিকভাবে হলেও আরও বহু অপরাধের বিচার অত্যাধিক বিলম্বিত হচ্ছে, সন্ত্রাসী দল হিসেবে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীকে চিহ্নিত করলেও আজও তা সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সক্রিয় ডিজিট্যাল নিরাপত্তা আইনের খড়গ স্বধীনচেতা মানুষ, লেখক, সাংবাদিক, কার্টুনিষ্ট-এমন কি ফটো সাংবাদিকদেরও এক পা যেন কারাগারে। হেফাজতে ইসলাম আজ রাষ্ট্রীয় উচ্চ মর্য্যাদায় আসীন; সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, মন্দির-গীর্জা ভাঙ্গা শাস্তিহীন, হুমকি দিয়ে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল এবং দেমা থেকে তাদেরকে বিতাড়ণ, উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিশন বছরকাল ব্যাপি সাম্প্রদায়িকতার কারণে সংঘটিত হাজার হাজার ঘটনার সন্ধান পান, ঘটনার সাক্ষী সাবুদ সংগ্রহ করে দায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হোক মর্মে রিপোর্ট দেওয়ার এক যুগ পার হয়ে গেলেও কোন মামলা আজও দায়ের না হওয়া, বিগত দশ বছরব্যাপী মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, লুটপাট, সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া, নারী অপহরণ-ধর্ষণ-খুন অব্যাহত গতিতে চলা, সাম্প্রদায়িকতার উস্কানীমূলক ওয়াজকারীদের কিছু না বলে তার প্রতিবাদে ফেসবুকে পোষ্ট দিলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে ডিজিট্যাল নিরাপত্তা আইন নামক গণতন্ত্র হত্যাকারী আইন প্রণয়ন ও তার ব্যবহার করে প্রতিবাদকারীদের যেমন ঝুমন দাস প্রমুখকে কারারুদ্ধ করে রাখা আজ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
আজকের সাম্প্রদায়িক নির্য্যতন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এতটাই একতরফা যে এর বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় বিন্ধ প্রকাশ ছাড়া আর কোন ধরণের প্রতিবাদই চোখে পড়ে না। পাকিস্তান আমলেও সাম্প্রদায়িকতা ব্যাপকভাবে ঘটেছে কিন্তু রাজপথে তার সরব প্রতিবাদও হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে ঢাকার রাজপথে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ভূমিকা নিয়েছেন। দাঙ্গার বিরোধিতায় মিছিল করতে গিয়ে ঢাকার বুকে আমির হোসেন নামক একজনকে দাঙ্গাকারীরা হত্যা করেছে। আরও অনেকে প্রাণ দিয়েছেন।
এই সবের প্রতিক্রিয়ায় ঘটেছে সংখ্যালঘুদের ব্যাপক দেশত্যাগ স্রেফ নিজের ও পরিবারের মানুষ দেশত্যাগ করায় আজ হিন্দু জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যা ৩০ ভাগের স্থলে মাত্র নয় ভাগে পরিণত হয়েছে। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত বলেছেন-এইভাবে দেশত্যাগ চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হিন্দুশূন্য হয়ে যাবে।
প্রত্যাশা ছিল, সরকারি ও বিরোধীদলগুলি অতীতের মত যৌথভাবে সাম্প্রদায়িকতামুক্ত দেশ গঠনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বা তা রক্ষায় আইনের শাসন ও আইনের চোখে সবাই সমান এমন একটি চির আকাংখিত বাংলাদেশ গঠনে সকলে মিলিতভাবে এগিয়ে আসবেন কি?
সম্ভবনা দেমন দেখা যায় না। আজ আর রাজনৈতিক সহনশীলতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ যেন পথ হারিয়ে ফেলে দেশটাকে গভীর সংকটে পড়েছে। এ থেকে উদ্ধারের প্রথম প্রয়োজনীয়তাই হলো দোষারোপের রাজনীতি পরিত্যাগ-তবে বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা সহ্য করার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা। পরস্পর পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা এবং যৌক্তিক দাবী মেনে নেওয়া এবং দ্বিধাহীনভাবে ভাল কাজে সমর্থন জানানো।
গণতন্ত্রের প্রাথমিক উপাদান সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচন। হারিয়ে যাওয়া এই নির্বাচনকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। তার জন্য এই নির্বাচনকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। তার জন্যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন না করাই শ্রেয়।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয় নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই-এ দাবীতে উভয় বড় দলই বিরোধী দলীয় অবস্থানে থাকাকালে লখো কণ্ঠে দাবী তুলেছেন। ক্ষমতাসীনরা মানতেও বাধ্য হয়েছেন। তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন ও অবিতর্কিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৮ এর নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতেও বিপুল ভোটে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলই নির্বাচিত হয়েছিল কিন্তু তারাই আবার সংবিধান সংশোধন করে সত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করায় সংকট বেড়েছে। সংকট নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন কিভাবে তিযুক্ত হবে তা নিয়ে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য্য। বর্তমান প্রথায় যে নির্বাচন কমিশনগুলি কাজ করলো তা আদৌ স্বাধীন ছিল না। তাই সবার সাথে আলোচনা করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে ঐ কমিশন গঠিত হোক। ফিরুক আমুক শান্তির ও শ্রদ্ধার রাজনীতি।
লেখক :সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ।
পাঠকের মতামত:
- শ্রীনগরে মসিউর রহমান মামুনের উঠান বৈঠক
- পারিবো না
- মঙ্গল আলো
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
- অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে সহায়তা চায় পুলিশ
- নগরকান্দায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
- টাঙ্গাইলে দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন
- ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্ব প্রতিক্রিয়া
- শ্রীনগর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফিরুজা বেগমের গণসংযোগ
- পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোরদের বৈশাখ উৎসব উদযাপন
- ফরিদপুরে মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রণক্ষেত্র: নিহত ২, আহত ৫
- বাগেরহাট সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে ও জলবায়ু সুবিচারের দাবিতে কালিগঞ্জে মানববন্ধন
- বিএনপি পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা: কাদের
- ফরিদপুরে পৌর মহাশ্মশানের সার্বিক উন্নয়নকল্পে আলোচনা সভা
- ঈশ্বরদীতে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রী
- রোজা-ঈদের ছুটি শেষে রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- এই গরমে আইসক্রিম তৈরির সহজ রেসিপি
- ইরানে ইসরায়েলি হামলার খবরে বাড়লো তেল-সোনার দাম
- নাইম শেখ-তামিমকে পেছনে ফেলে রান সংগ্রহে শীর্ষে ইমন
- মুরগির দাম কমেনি, বেড়েছে আলু-পেঁয়াজের
- শ্যামনগরের গাবুরায় অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
- ফরিদপুরে শহীদ পরিবার শহীদ স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটিকে সংবর্ধনা
- ৫ বছরেও চালু করা যায়নি সাতক্ষীরার সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস
- কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
- ইরানকে ‘বার্তা’ দিতে এই হামলা: ইসরায়েলি কর্মকর্তা
- ‘কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা’
- মৌলভীবাজারে জুয়ার আস্তানায় ডিবি পুলিশের অভিযান, আটক ১৩
- ফরিদপুরে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
- ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইসরায়েল
- জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ আটকে দিল যুক্তরাষ্ট্র
- শিল্পী সমিতির নির্বাচন আজ, এফডিসিতে নিরাপত্তার জোরদার
- ‘বিরোধী নেতাকর্মীদের পর্যদুস্ত ও নাজেহাল করা হচ্ছে’
- ‘অপরাধী আত্মীয় হলেও ছাড় নয়’
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন না শাকিব-জায়েদ খান
- নড়াইলে ১২ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারী আটক
- চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলসহ আন্ত:জেলা চোর চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার
- এফএ কাপে থাকছে না ‘রিপ্লে’ ম্যাচের নিয়ম
- ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু আজ
- সুবর্ণচরে প্রাণি সম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
- ‘বাংলাদেশে যত অপরাধ হয়, তার সবই বিএনপি করে’
- বাংলাদেশের প্রথম পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস আর নেই
- সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বায়িং হাউস এসোসিয়েশনের নতুন কমিটির শ্রদ্ধা
- ‘মুজিবনগরে বাংলাদেশের পক্ষ হতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়’
- আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
- মন্ত্রী এমপিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বার্তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে
- শ্রীনগরে মসিউর রহমান মামুনের উঠান বৈঠক
- কালিয়াকৈরে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !