E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাপিত জীবনের দুঃখ ও অভিমান ঘুচাতে স্মারকলিপির অবতারণা

২০২২ জানুয়ারি ২৪ ১৭:৪২:২০
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাপিত জীবনের দুঃখ ও অভিমান ঘুচাতে স্মারকলিপির অবতারণা

আবীর আহাদ


বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার সূর্যসৈনিক। আজ তারা জীবনের শেষ প্রান্তে অবস্থান করছেন। অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। অধিকাংশই নানান রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত। অনেকেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। পরিবার-পরিজনসহ তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অতীতে আর্থিক কারণে অনেকেই সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারেননি। যদিও বা কষ্টের ভেতরে থেকেও কিছু মুক্তিযোদ্ধা সন্তান উচ্চশিক্ষা নিতে পেরেছে, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি পরশ্রীকাতরতায় আক্রান্ত আমলাতন্ত্র ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের প্রতিহিংসাসহ বিশাল অঙ্কের ঘুষ দিতে না-পারার কারণে সবরকম যোগ্যতা থাকা সত্বেও তাদের অনেকের চাকরি হয়নি। তাদের ৯৯% ভাগের  সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ইতোমধ্যে পার হয়ে গেছে। কোনো সরকার, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকারও সুযোগ থাকলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা যথাযথভাবে প্রয়োগ করেননি।

উপরন্তু হৃদয়বিদারক বিষয়টি হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের হাতেই বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটাটি বাতিল হয়েছে! মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত । জাতীয় সংবিধানে তাদের অবদানের স্বীকৃতি নেই। বিশাল সংখ্যক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অকারণে তাদের বীরত্বে ভাগ বসিয়ে চলেছে; রাষ্ট্রীয় ভাতাসহ সবরকম সুযোগ সুবিধা সবার আগে তারাই ভোগ করছে! ফলশ্রুতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সার্বিকভাবে চরম মনোকষ্ট নিয়ে আহাজারি করে মরছেন! কোনো সরকার ও রাজনৈতিক দল এসব বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি! মুক্তিযোদ্ধাদের সৃষ্ট স্বাধীন দেশের আলো-বাতাসে বেঁচে থেকে অনেকে অনৈতিক পন্থায় শত শত হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে দেশবিদেশে চরম সুখের জীবনযাপন করছে, দেশের রাষ্টপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সচিব, জেনারেল, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি প্রভৃতি হচ্ছেন, অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতাবোধের দারুণ অভাব! সবার ক্রিয়াকলাপ ও হাবভাব দেখে মনে হয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রায় সবাই একধরনের হীনমন্যতায় ভুগছেন!

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তর সালের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে প্রায় ৪৫/৫০ হাজার অমুক্তিযোদ্ধা এমনকি রাজাকার-আলবদরদের মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী জাতীয় সংসদে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে একনাগাড়ে চলমান এক যুগের উর্দ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ সরকার সেসব ভুয়াদের উচ্ছেদ না করে তারাও বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা এড়িয়ে গোঁজামিলের সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েই চলেছেন। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজারের নিচে। কিন্তু বিদ্যমান তালিকায় সংখ্যাটি দু'লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজারের মতো! অর্থাত্ তালিকায় আশি/পঁচাশি হাজারই অমুক্তিযোদ্ধা।

আমাদের এতো অনুনয় বিনয় যুক্তি ও আন্দোলন সত্বেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, মন্ত্রণালয়, জামুকা এবং সরকারের উচ্চমহল একেবারেই নির্বিকার। তারা তাদের ইচ্ছা মাফিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকাকরণ তো বটেই, এতো হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় স্থান দিয়ে প্রকৃত বীরদের মর্যাদার ওপর আঘাত হেনে চলেছেন । এটা কোন ধরনের সভ্যতা ও নৈতিকতা যে, ভুয়াদের বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করার পাশাপাশি তাদেরকে জনগণ তথা সরকারের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি দিতে হবে ? এটা যেনো তেল আর জলকে একত্রে মেশানোর সামিল।

ভুয়া সৃষ্টির পরিণতি আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তার আরেক নমুনা এই যে, ক্ষমতাসীন দলের বিপুল ক্ষমতাবান জনৈক সেনা কর্মকর্তার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কোনো প্রমাণ ছিলো না বলে সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তার নাম আসেনি। অথচ সেই তিনি স্বাধীনতার ৫০ বছর পর পর্দার আড়ালে রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাব খাটিয়ে শেষমেশ বিস্ময়করভাবে বেসামরিক গেজেটে অতিসম্প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছেন! আইন মোতাবেক সামরিক বাহিনীর কোনো মুক্তিযোদ্ধা যেমন বেসামরিক গেজেটের মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না, তেমনি বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা সামরিক বা বাহিনী গেজেটের মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন না।

অনেকেই বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অতীতে যেসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে তার মূল কারিগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিভিন্ন সময়ের ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ। কথাটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এবং সত্যিকার তদন্ত করলে কারা সেসব ভুয়ার কারিগর তা বের করা মোটেই কঠিন নয়। কিন্তু মূল কথাটি কিন্তু অন্যত্র। সরকার যখন বঙ্গবন্ধু সরকারের সংজ্ঞাটি এড়িয়ে নানান গোঁজামিলের সংজ্ঞা ও নির্দেশিকায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই -বাছাইয়ের নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন সে-নীতিমালার ফাঁকফোকর দিয়েই সুযোগসন্ধানী চক্র অর্থ, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় অমুক্তিযোদ্ধা এমনকি রাজাকারদেরও মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দিয়েছে। যে অপকর্মটি আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা করতো, এখন সেই অপকর্মটি করে চলেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)! আগে করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার, আর এখন করছে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতা এমপি ও মন্ত্রীরা! এখানে তো মূল অপরাধী ঐসব গোঁজামিল সংজ্ঞার প্রণেতারা। তথা সরকার নিজেই!

প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের জন্য দরকার ছিলো সরকারের সদিচ্ছা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার যখন বঙ্গবন্ধু সরকারের "মুক্তিযোদ্ধা মানে এমন একজন ব্যক্তি যিনি যেকোনো একটি সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য হিশেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন" সংজ্ঞাটি পাশ কাটিয়ে অন্য একটি গোঁজামিলের সংজ্ঞায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের আয়োজন করে তখন আমাদের দু:খের অন্ত থাকে না। যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ, সেই মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধাদের তালিকা করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগই যখন বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা মানে না তখন কী বলার থাকে ? যখন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এমএনএ, এমপিএ, আওয়ামী লীগ-ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, মুজিবনগর সরকারের সচিব, কেরানী, বিদেশী দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গীতিকার-গায়ক-দোহার, কবি-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ফুটবলারসহ মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র যুদ্ধের সাথে সম্পর্কহীনদেরকেও তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধা নামে অভিহিত করা হয় তখন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদের অবদানকেও অবমূল্যায়ন করা হয় ।

আমি আগেই বলেছি, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের তিনটি বিশিষ্ট শ্রেণীর অবস্থান ছিলো। এরা হলো, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনতা। তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ, এমএনএ, এমপিএ, উচ্চপর্যায়সহ জেলা মহকুমা ও থানার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রভৃতিরা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের জন্য অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও রণাঙ্গনে যারা বিভিন্ন ছোট-বড় ফোর্সের কমাণ্ডে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারাই মুক্তিযোদ্ধা। মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে অ-সশস্ত্র যেসব ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন তারা এবং যারা বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের নানাবিধ সহযোগিতা করেছেন তারা মুক্তিকামী বলে অভিহিত হতে পারেন। এ-প্রক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব শ্রেণীকে এভাবে মূল্যায়ন করা হলে কারো কিছু বলার থাকে না। কারণ এখানে সবার ভূমিকাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে।

আর সবচে' দু:খের বিষয়টি হলো, মুক্তিযুদ্ধের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রাজনৈতিক সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী ও সিংহভাগ বাঙালির সমর্থিত যে মহান মুক্তিযুদ্ধ, সেই মুক্তিযুদ্ধের কথাটি আমাদের জাতীয় সংবিধানের মূলস্তম্ভ 'প্রস্তাবনা'য় সম্পূর্ণ অনুপস্থিত । অপরদিকে শহীদ ও জনগণের প্রাণোৎসর্গের কথাটি উল্লেখ করা হলেও যাদের মহা শৌর্য ত্যাগ ও বীরত্বে অর্জিত স্বাধীনতা সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথাও সংবিধানে অনুপস্থিত! সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা স্থান না পাওয়ায় স্বাধীনতাবিরোধী মতলববাজ মহল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধ না বলে একাত্তর সনটিকে গণ্ডগোলের বছর, গৃহযুদ্ধ, ভাইয়ে-ভাইয়ে যুদ্ধ, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ইত্যাদি অপবিশেষণে ভুষিত করে মুক্তিযুদ্ধের মহিমাকে ম্লান করে ইতিহাস বিকৃতি করার সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবের স্বীকৃতি ও সুরক্ষা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অমুক্তিযোদ্ধা এমনকি রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে । এ-প্রক্রিয়ায় আজ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় প্রায় আশি/পঁচাশি হাজার অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা হিশেবে স্বীকৃত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত করার পাশাপাশি তারা রাষ্ট্রের অর্থ ও অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করে আসছে ।

এসব বিষয়ের কুফল দূরীকরণের লক্ষ্যে আজ থেকে ৩/৪ বছর পূর্বে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে আমিই সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ শব্দ দু'টির সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার ভিত্তিতে ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের জন্য নানান সভা সমাবেশ পদযাত্রা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপির মাধ্যমে আমাদের সুপারিশ ও দাবি পেশ করেছি। এমনকি একদা জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের সামনাসামনি অবস্থান নিয়ে তা তাঁর কাছে দাবি দু'টি তুলে ধরেছি। পাশাপাশি অনবরত এ-বিষয়ে প্রচুর লেখালেখি করে চলেছি। অন্যান্য অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাও এসব নিয়ে প্রচুর লিখছেন। বিষয় দু'টি ছাড়াও আরো কিছু মৌলিক দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের পক্ষ থেকেও দাবি উঠেছে যা বর্তমানে জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমাদের দু:খ, আমাদের ক্ষোভ, আমাদের দাবির ব্যাপারে সরকার কোনো ভ্রুক্ষেপই করছেন না, উপরন্তু জামুকা নামক দানবটি সেই গোঁজামিল সংজ্ঞায় যাকে-তাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা ও গরিমা ভুলুণ্ঠিত করে চলেছে!

এমতাবস্থায় দেশের সচেতন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শের ভিত্তিতে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে সম্প্রতি আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বিতাড়ন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুন:প্রবর্তন, চিকিত্সা সেবা নিশ্চিত, গৃহঋণ প্রদানসহ ৮ টি মৌলিক দাবিসম্বলিত একটা স্মারকলিপি প্রস্তুত করেছি। স্মারকলিপিতে দেশের সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষর করার লক্ষ্যে সেটি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ-মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে এতে স্বাক্ষর করছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেশকিছু বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা স্বত:প্রণোদিত হয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলবে। আসছে মার্চের স্বাধীনতা দিবসের পূর্বে আমরা স্মারকলিপিখানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে পেশ করবো।

সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষরে স্মারকলিপি এটি স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে একমাত্র একটি ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ। ফলে এধরনের পদক্ষেপ একটা অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে। বিশালসংখ্যক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির দাবি নিশ্চয়ই সরকার মূল্যায়ন করতে বাধ্য হবেন। সৃষ্টি হবে আরেক নয়া ইতিহাস। এ ইতিহাসের সাক্ষী হতে নিশ্চয়ই বীর মুক্তিযোদ্ধারাও পিছিয়ে থাকবেন না। নিজেদের স্বার্থেই নিজ দায়িত্বে সবাই এ স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অংশগ্রহণ করবেন এবং সৃজিতব্য ইতিহাসের অংশীদার হয়ে থাকবেন। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু-কন্যাও নিজের সহজাত মানবিক বিবেচনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আর এভাবেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাপিত জীবনের সুগভীর দু:খ ও অভিমানের আবসান ঘটবে বলেও আমরা আশাবাদী।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test