E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর অবদান স্মরণে

২০২২ মার্চ ২৫ ১৪:৫১:৩৯
মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর অবদান স্মরণে

চৌধুরী আবদুল হান্নান


তিনি ভারতের সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যিনি বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন দিয়েগেরিলা যুদ্ধের অস্র ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্হা করেন। স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিকপ্রচারণা চালিয়েছেন । এক পর্যায়ে নিজের দেশকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেছেন ।

শরনার্থী সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী কয়েকটিদেশ ভ্রমন করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্র, প্রেসিডেন্ট নিক্সনেরসময়কাল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন সহযোগিতা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই জেনেও তিনি কেন নিক্সনেরনিকট ধন্না দিতে গিয়েছিলেন ? তা হলে, এ সফরকে কি ব্যর্থ বলা যাবে? নিশ্চয়ই নয়।

মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্র সফরের একটা সুদূরপ্রসারি প্রভাব পড়েছিল সমগ্র দুনিয়ায় ।অন্যান্য দেশ সহযোগিতারআশ্বাস দিলেও নিক্সন প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছিল এটা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় ।

পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সশস্র সেনারা যখন নিরস্র বাঙালিরদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে , স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধরত একটি জনগোষ্ঠীর পাশে না দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র পক্ষ নিলো আক্রমণকারী দেশপাকিস্তানের।

মানবতা এবং বিশ্ববিবেকের বিপরীতে দাঁড়ানো আমেরিকার অমানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নগ্নভাবে প্রকাশ হয়েপড়লো যা আবারও প্রত্যক্ষ করলো বিশ্ব।

আমেরিকায় ইন্দিরা গান্ধীর এ সফরকে এক অনন্য কূটনৈতিক দূরদর্শিতা হিসেবে দেখা হয় ।জাতিসঙ্ঘেরনিরাপত্তা পরিষদে

ভেটো পাওয়ারের অধিকারী দেশ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের দ্রুত সহযোগিতা চুক্তিস্বাক্ষর (আগষ্ট ১৯৭১), যার ফলে আমেরিকা-চীনের প্রভাবে নিরাপত্তা পরিষদে উথ্থাপিত বাংলাদেশবিরোধী প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন কয়েকবার ভেটো প্রয়োগ করে বাংলাদেশের নিশ্চিত বিজয়ের ধারাঅব্যাহত রাখে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় এই চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল আর সোভিয়েতইউনিয়ন পাশে না থাকলে, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ ইন্দিরার একক হাতেথাকতো না, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বরাজনীতির এক অগ্নিকুন্ডে পরিনত হতে পারতো ।

ইন্দিরা গান্ধীর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক দক্ষতার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছিল ।অন্যথায় , স্বাধীনতা যুদ্ধ ৯ মাসের পরিবর্তে ৯ বছরও স্হায়ী হতে পারতো।

কমরেড হো চি মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনাম বিশ্বের দুটি সুপার পাওয়ার ফ্রান্স ও মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রকে দু’বারপরাজিত করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, ফ্রান্সকে তাড়াতে সময় লেগেছে ৯ বছর আর আমেরিকাকেতাড়াতে লেগেছে আরও ২০ বছরের অধিক সময়।

ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ফলে বাংলাদেশকে ভিয়েতনামের ভাগ্য বরণ করতে হয়নি। বাঙালি জাতি যুগ যুগ ধরে অকৃত্রিম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম, সোনালী ব্যাংক।

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test