E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আবারও আমেরিকার সাথে সামরিক সম্পর্ক?

২০২২ এপ্রিল ১৩ ১৯:২৬:২৯
আবারও আমেরিকার সাথে সামরিক সম্পর্ক?

রণেশ মৈত্র


বাংলাদেশের বৈদেশিক মন্ত্রী এ.কে. আবদুল মোমেন এই নিবন্ধ লেখার সময় পর্য্যন্ত (এপ্রিলের ৮ তারিখ) আমেরিকায়। তিনি সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের জনমত যতটা উপলব্ধি করতে পেরেছি, প্রধানত: ব্যাবের উপর আমেরিকার উপর আরোপিত সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করানো। তা নিয়ে কিছুটা আলোচনাও হয়েছে কিন্তু ফলাফল বিস্তারিকভাবে এখনও জানানো হয় নি। তা না হলেও এটুকু খবর নানাসূত্রে ভেসে এসেছে, র‌্যাবের উপর আমেরিকা কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি জটিল-তাই সময় সাপেক্ষ।

কেন বিষয়টা এতটা জটিল বলে আমেরিকা মত প্রকাশ করলো তার কারণ ব্যাখ্যা করা হয় নি। সেই যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো-তারপর বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পর্য্যায়ে এ যাবত তা প্রত্যাহারের ব্যাপারে চেষ্টা কম করে নি। একজন মার্কিন কূটনৈতিক তো স্পষ্ট করে বলেই দিলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশে গোপান হত্যালীলা, আইনকে পাশ কাটিয়ে হত্যালীলা, গুম-খুন কমেছে এবং এই পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এর অর্থ আমেরিকা এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবছেই না।

এ ব্যাপারে আরও লক্ষ্যণীয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব যে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে আমেরিকা হরণ করেছে-বাংলাদেশ সরকার আজতক তা স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করে নি বা করতে সাহস পায় নি। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং নানা দেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে যারা কাজ করে থাকেন-তারাও কিন্তু অর্থপূর্ণ নীরবতা পালন করছে। দেশের সরকার বা সরকারি দল ছাড়া অপর কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনও এ যাবত ভালমন্দ কিছু বলে নি-কোন প্রতিক্রিয়া জানায় নি। ফলে দৃশ্যত: মনে হওয়া স্বাভাবিক বাংলাদেশে সরকার এ প্রশ্নে নেহায়েতই একা অন্তত: এখন পর্য্যন্ত। ফলে প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না-আর এই সুযোগে আমেরিকা বাংলাদেশের উপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে. আবদুল মোমেন আমেরিকার পররাষ্ট্র সেক্রেটারীর সাথে সাক্ষাত হওয়ামাত্র প্রথমেই বলে ওঠেন, “আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ”। আমরা যখন কিছুই ছিল না-তখন আমেরিকাই আমাকে বাড়ী চাকুরী প্রভৃতি দিয়ে সহায়তা করেন। এ কথা বলা কি তাঁর পক্ষে উচিত ছিল বা এতে কি তাঁর এবং বাংলাদেশেল মর্য্যাদা সংরক্ষিত হলো?

যখন আমেরিকার পররাষ্ট্র সেক্রেটারী (মন্ত্রী) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বললেন, আমেরিকা দেখতে চায় বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, মানবাধিকার সংরক্ষণ, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তাসহ তাদের অধিকার সংরক্ষণ, তখন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলে উঠলেন, “আপনারা বি.এন.পি কে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজী করান”। অবাক বিস্ময়ে এ খবরটি সংবাদপত্রে পড়ে মনে হলো বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং তার আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আমেরিকাকে হস্তক্ষেপ করতে আমন্ত্রণ জানালেন। জীবনে অনেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দেখলাম-নতজানু পররাষ্ট্র মন্ত্রীও বেশ কয়েকজনকে দেখেছি-কিন্তু এতটা নগ্ন নতজানু পররাষ্ট্র মন্ত্রী জীবনে দ্বিতীয়টি দেখি নি। এনাকে মন্ত্রীসভা থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী ভূমিকা এবং অযোগ্যতার অভিযোগে।

বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে তারা নির্বাচন করে থাকে পরপর দুটি সংসদ নির্বাচনের তিক্ত অপরাপর বিরোধী দলেরর মত বিএনপিও কিছু দাবী উত্থাপন করেছে। বাংলাদেশ সরকার যদি সত্যই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান তবে তাঁদের উচিত গঠনমূলক মনোভাব দেখিয়ে সকল বিরোধী দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে এবং প্রয়োজনে ও পরিস্থিতি বিবেচনায় যৌথ বৈঠক ডেকে একটা সর্বসম্মত অভিমতে পৌঁছানো। এভাবেই শুধুমাত্র অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কোন প্রশ্নে যদি সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয় তবে তা-ও করা উচিত দেশ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অগ্রসর করার তাগিদে। এক্ষেত্রে কোন বৈদেশিক রাষ্ট্রের বিন্দুমাত্র কিছু করণীয় নেই।

এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় আমেরিকার সাথে সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রশ্ন। এই বিষয় নিয়ে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ব্যাপক আলা-আলোচনা হচ্ছে। জানি না আলোচনা চূড়ান্ত পর্য্যায়ে পেঁছেছে কি না।

সংবাদপত্র সূত্রে জানা গেল যে আধুনিক ও উন্নত মানের অস্ত্র বাংলাদেশের কাছে বেচতে কমবেশী ৫ বছর ধরে চুক্তি করার আহ্বান জানাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন এবং সমরাস্ত্রের বহুমুখী উৎস নিশ্চিত করতে বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে চায়।

প্রশ্ন উঠেছে, আমেরিকার কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করলে বাংলাদেশ কী সুবিধা পাবে? ওয়াশিংটন বলছে, অস্ত্র কেনার জন্য কমসুদে ঋণ দেবে এবং অস্ত্রের দামেও ছাড় পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে বাংলাদেশকে বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র কমমূলে অস্ত্র কেনার জন্যে বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে বিশেষ সুবিধা দেবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের পূর্বশর্ত হচ্ছে “জেনারেল সিকিউরিটি অব ক্রস সার্ভিসিং এপ্রিমেন্ট (আকসা) সই করা। আকসা হচ্ছে সামরিক রসদ বিষয়ক কেনাকাটা করার একটি রূপরেখা চুক্তি। জিসমিয়াপ হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সামরিক খাতের গোপন তথ্য বিনিময়। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়নিরাপত্তা বিষয়ক সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্যা-ল শ্রাইভার ঢাকা সফরে এসে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আকসা এবং জিসমিয়া চুক্তি করা গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আকসা চুক্তি সই করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, একই বছর ভারতের সঙ্গেও জিসমিয়া চুক্তি স্বাক্ষর করে দেশটি চলমান ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকায় এই দুটি চুক্তিতে ঢাকা রাজীহ হলে দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্র খুব শক্ত অবস্থানে পৌঁছে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত নিরাপত্তা সংলাপে জিসমিয়া এবং আকসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়। তার আগে মার্চে ঢাকা সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ষ্টেট ডিপার্টমেন্টের আ-ার সেক্রেটারী ভিক্টোরিয়া নূল্যা- ওই দুইটি আইনের হালনাগাদ খসড়া হস্তান্তর করেন। নিরাপত্তা সংলাপে ঢাকার পক্ষ থেকে জিসমিয়া এবং আকসা আইনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাটনা (কাউষ্টারিং আমেরিকান এডভার্সারিজ থ্রু স্যাংশনস আকট) সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। ক্যাটসা আইনটি হচ্ছে কোন দেশ রাশিয়া, ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে বা সমরাস্ত্র লেনদেন করলে যুক্তরাষ্ট্র ওই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করতে পারে এবং এই আইন শতভাগ যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। গত সপ্তাহের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ক্যাটসা আইনের উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করার পর রাশিয়া বা অন্য কোন দেশ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র যাতে আপত্তি না তোলে সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ বিষয়ে আমেরিকার কোন উত্তর জানা যায় নি। তবে ওয়াশিংটনে নিরাপত্তা সংলাপের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের জানান, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা সফল হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছরের মধ্যে জিসমিয়া চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, অস্ত্র কেনা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ এসব চুক্তিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশকে বিশেষ ঋণ দেভে। পাশাপাশি অস্ত্রে দামেও ছাড়দেবে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে বাংলাদেশকে বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা দেবে। সর্বোপরি, বৈশ্বিক ক্ষমতায় দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্কে যে টানাপোড়েন চলছে তাতে উন্নতি ঘটবে। তবে মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যে অসন্তোষ বা ব্যারের উপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহারের কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে না।

অপরদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং রাষ্ট্রদূত মো: মাহফুজুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রেরবৈশ্বিক পরিকল্পনার অংশ হয়ে উঠছে। পররাষ্ট্র নীতির এই গুরুত্ব পরিবর্তনটি নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সব সময় শর্তযুক্ত তাই জাতীয় পর্য্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেণ, এই চুক্তির আগে ঠিক করতে হবে যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কি ধরণের অস্ত্র চায় এবং সেগুলো আদৌ বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন কি না। কেন না, বাংলাদেশ শান্তির দেশ আর অস্ত্র দিয়ে শান্তি কেনা যায় না।

বর্তমান ও অতীতের অভিজ্ঞতা

আমেরিকার সঙ্গে শ্রীলংকা চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর শ্রীলংকার পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছে তা লক্ষ্য করা উচিত। যদিও এ পরিস্থিতির জন্য সে দেশের প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর পরিবারের দুর্নীতিকে সবাই দায়ী বলছেন-তবু প্রশ্ন থেকে যায়-দুর্নীতিবাজদের সাথে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্রচুক্তি করলো কেন এবং শ্রীলংকার শাসকেরাই বা কার বিরুদ্ধে প্রয়োগের লক্ষ্যে ঐ অস্ত্রচুক্তি করলো।

পাকিস্তান

আজ ৭৫ বছর হলো পাকিস্তান হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানতম মিত্র যে আমেরিকার তা সবারই জানা। এই ৭৫ বছরে পাকিস্তানের জনগণের সংকট ক্রমশ:ই বৃদ্ধি পেয়েছে কমে নি একটুও। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব আছে বলে কেউ মনে করেন না। পঞ্চাশের দশকে পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি, সিয়াটো প্রভৃতি চুক্তি যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিয়েছিল তা নিয়ে আজ আর কোন বিতর্ক নেই।

১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান যে আমেরিকার অস্ত্রই প্রধানত ব্যবহার করে বালাদেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল তা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য।

ভারত

ভারত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম নেতা। ফলে ভারত বহুক্ষেত্রেই সরাসরি মার্কিন বিরোধী নীতিকে বিশ্বাসী একটি দেশ। ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা যেমন পাকিস্তানের সামরিক সরকারকে সরাসরি সার্বিক সমর্থন দিয়েছে-তেমনই আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সর্বাত্মক বিরোধিতা করেছে। তাই দীর্ঘকাল যাবতই ভারত মার্কিন সম্পর্ক তিক্ত অবস্থানে ছিল। এমন কি, চীন-ভারত যুদ্ধকালেও আমেরিকার ভূমিকা ছিল ভারত বিরোধী এবং পরোক্ষ চীনের সপক্ষে।

ভারতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর একটি সাম্প্রদায়িক সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ধীরে ধীরে ভারত মার্কিন সম্পর্কের উন্নতি ঘটছে যা সে দেশের মানুষের আকাংখার বিরোধী। এর (ভারত যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধাস্ত্র চুকি) পরিণতি উপলব্ধি করতে আরও বেশ কিছুটা সময় লাগবে।

চীন-মার্কিন সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে মূলত অর্থনৈতিক কারণে। আজ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন আমেরিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী-তাই ভারতকে আমেরিকার প্রয়োজন।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে মার্কিন বিরোধী। পাক-মার্কিন-সামরিক চুক্তিসহ আমেরিকার কোন সামরিক চুক্তি পূর্ববাংলা মেনে নেয় নি-বরং স্পষ্টত: বিরোধিতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনেরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

মুক্তিযুদ্ধকালে আমেরিকার অস্ত্র বাঙালির বুকে রক্ত ঝড়িয়েছে তাই নয় তারা জীবন মরণ পণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাত্মক বিরোধিতা করেছে। তারা আজ যে কৌশলে অস্ত্রচুক্তি করতে চাইছে তাও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী। সুতরাং তাদের সাথে অস্ত্র চুক্তির ধারণা গণবিরোধী এবং পরিত্যাজ্য।


লেখক : সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত।

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test