E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাঙালি সংস্কৃতি মুছে ফেলার পরিণাম হবে ভয়াবহ

২০২২ জুন ২৯ ১৬:১৮:১৩
বাঙালি সংস্কৃতি মুছে ফেলার পরিণাম হবে ভয়াবহ

আবীর আহাদ


২০২১-২০২২ সালের জাতীয় বাজেটে ধর্ম খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো। পক্ষান্তরে সংস্কৃতি খাতে দেয়া হয়েছিলো মাত্র ৫ শত কোটি টাকা! এবারের ২০২২-২০২৩ সালের খবর এখনো  না পাওয়া গেলেও বুঝে নিতে অসুবিধা নেই যে, গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ধর্খ খাত সংস্কৃতি খাত থেকে কয়েক হাজার গুণ এগিয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের যে বাংলাদেশ বাঙালি সংস্কৃতির চেতনায় সৃষ্টি হয়েছে, সেই সংস্কৃতিকে অবমূল্যায়ন করে ধর্মীয় সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিলে মুক্তিযুদ্ধর আদর্শ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার বাংলাদেশ থাকে না। থাকেন না জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, থাকেন না বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্ব। এ অবস্থায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্ন মনে হলে, মনে হবে ১৯৭১ সালে আকাশ থেকে একদল অশরীরী কোনো জীবেরা এসে দেশটি স্বাধীন করে আবার আকাশেই মিলিয়ে গেছে!

আসলে বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে উত্থিত বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে যাদের বিন্দুমাত্র সংযোগ ও সম্পৃক্ততা নেই তারাই কেবল তাদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে বাঙালি সংস্কৃতিকে পদদলিত করে বিজাতীয় আরব্য সংস্কৃতির প্রেমে গদগদ হতে পারেন। আমি এখানে ইসলামী সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে আরব্য সংস্কৃতি বলছি একারণে যে, যেহেতু ইসলাম ধর্মটি উঠে এসেছে আরবীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে, সেহেতু আরবের বাইরে এ ধর্ম প্রসার ও চর্চার ক্ষেত্রে চেতনাগত দিক থেকে সেসবের প্রভাবে স্থানীয় সংস্কৃতির সংঘাত অনিবার্য হয়েই দাঁড়ায়। যেমন বাঙালি সংস্কৃতির হৃদয় জারি সারি ভাটিয়ালি সহজিয়া বাউল লোকগীতিসহ গ্রামীন নানান পার্বণিক খেলাধুলাকে ইসলাম অনুমোদন দেয় না! এমনকি আমাদের রাষ্ট্রের চার মূলনীতিমালা গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে ইসলামী দর্শন ও সংস্কৃতি স্বীকার করে না। উপরন্তু এসব দর্শনকে কুফরি মতবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

অপরদিকে আমাদের জাতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ লিপিবদ্ধ থাকার পরও বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধচেতনাসহ অন্যান্য ধর্মকে অবমূল্যায়ন করে বিশেষ একটি ধর্মকে বিপুল পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে, গত কয়েক বছরে সারা দেশে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করার যে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিলো সেটাও কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি সংস্কৃতির সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। কারণ এদেশে তো শুধু মুসলমানরা বাস করেন না, হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান মগ মারমা সাঁওতাল খাসিয়া প্রভৃতিরাও বসবাস করেন । তাদের বিভিন্ন প্রার্থনা কেন্দ্র রয়েছে। সেখানেও তো তাহলে এমন পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া উচিত।

যেখানে দেশের আনাচেকানাচে মসজিদের ছড়াছড়ি, বাংলাদেশকে বলা হয় মসজিদের দেশ, যে মসজিদকে কেন্দ্র করে বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবাদী চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিরুদ্ধে অহর্নিশি কুৎসা রটনা করা হয়, যেখানে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত, হেফাজত ও জঙ্গিদের আস্তানা বলে বহুল প্রমাণিত সেখানে নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ উত্থানের বীজ বপন করা কোনো শুভ লক্ষণ নয়। আমরা তো আমাদের জীবন দিয়ে দেখে আসছি, মসজিদ ও মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির বিপুল উত্থান ঘটেছে যেখানে বলৎকার ও ধর্ষণের মতো ঘটনাবলি অহরহ সংঘটিত হচ্ছে ; পয়দা হচ্ছে নতুন নতুন কিংভূতকিমাকারি একশ্রেণীর পাষণ্ড জীব! বের হয়ে আসছে ৭১এর রাজাকার আলবদর আলশামস ও আলমুজাহিদ বাহিনীর নয়া অনুসারী এক বর্বর প্রাণী! এসব প্রাণী ও তাদের অনুসারীদের দর্শন হলো, যাবতীয় অন্যায় অপরাধ করবো, সাথে সাথে আল্লার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো যেহেতু তিনি পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল!

মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ বাঙালির রক্ত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সীমাহীন শৌর্য ত্যাগ ও বীরত্বে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের পাদপীঠে দাঁড়িয়ে আমরা দিব্য চোখে দেখতে ও হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারছি যে, রাজনৈতিক, আমলা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের ক্ষমতা ও অর্থলিল্পার কারণে তাদেরই হাত ধরে দেশের বুকে দুর্নীতিবাজ লুটেরা ও মাফিয়াগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির একটা দানবীয় উত্থান ঘটেছে! বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বজাধারী বলে যারা নিজেদের জাহির করে থাকে, তাদের হাতেও এ-দু'টি অপশক্তি নানান পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। সুতরাং এ-দু'টি অপশক্তির উত্থানের সাথে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষের রাজনৈতিক শক্তি সমানভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর তিরোধানের পর থেকে অদ্যাবধি যারাই দেশ শাসনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সেই সামরিক বাহিনী, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী জোটের অন্তরালে অন্যান্য স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধ ইসলামী রাজনৈতিক গোষ্ঠীসহ হেফাজতে ইসলামের মতো আইএস-তালিবানী চেতনার ধর্মীয় সংগঠনগুলো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মধ্যে থেকে পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন তারা নিজেরাই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে ! বেশ কিছুকাল আগে হেজাফতী আমীর মাওলানা আহমদ শফিকে তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি করার দু:সাহসিক দাবিও করে বসেছিলো!

এসব স্বাধীনতাবিরোধী ইসলামী সংগঠন তাদের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ধর্মের নামে সারা দেশব্যাপী আরবী ভাষার নানান কিংভূতকিমাকার ইসলামী সংগঠন, ইসলামী এনজিও, ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী কিণ্ডারগার্টেন, ইসলামী স্কুল, ইসলামী মাদ্রাসা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী ইন্সিওরেন্স, ইসলামী হাসপাতাল, ইসলামী এতিমখানা, ইসলামী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলেছে। তাদের এসব কিছুর উদ্দেশ্য কিন্তু ইসলাম বা ধর্ম শিক্ষা, প্রচার ও প্রসার নয়। তাদের মূল লক্ষ্য, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ তথা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নির্যাস জাতীয় চার মূলনীতি গণতন্ত্র সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ, আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা, জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতিকে ইসলামবিরোধী কুফরি মতবাদ বলে আখ্যায়িত করা। এ-লক্ষ্যে তারা মসজিদ, ধর্মীয় জলসা, ইউ টিউব, ফেসবুকসহ নানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রকাশ্যভাবে ব্যবস্থার করে চলেছে। কিন্তু দু:খজনক সত্য এই যে, এসব ব্যাপারে কোনো সরকার ও রাজনৈতিক দলের কোনো মাথাব্যথা নেই। মনে হয়, অতীতের মতো বর্তমান সরকারও এসব ধর্মীয় গোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে চায়। আদর্শ, চেতনা ও জনকল্যাণ নয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও লুটপাটের স্বার্থে ক্ষমতালোভীদের যেকোনো কারো সমর্থন নিতে কোনোই আপত্তি নেই!

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকার। রাষ্ট্রীয় আদর্শ, রাজনৈতিক দর্শন, প্রশাসন পরিচালন, দেশের আর্থসামাজিক সাংস্কৃতিক জীবন ব্যবস্থা, জনগণের মনোজগতে নৈতিকতা ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা নির্মাণ তথা জাতীয় চেতনার বেদীমূলে যেখানে প্রবিষ্ট করা উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ যাতে গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমিক অসাম্প্রদায়িক হয়ে গড়ে ওঠে। সে-লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে তোলা উচিত ছিলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনাজাত বিভিন্ন শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, ক্লাব, সঙ্গীতসহ নানান প্রতিষ্ঠান যাতে আমাদের নতুন নতুন প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় উজ্জীবিত হতে থাকে।

কিন্তু আমরা কী দেখতে পাচ্ছি? স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক সরকারগুলো অতীতে যা করেনি, করতে সাহস পায়নি, সেকাজগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আওয়ামী লীগ সরকার নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে! তারা হেফাজতে ইসলামের সাথে কী এক গাটছড়া বেঁধে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মনোজগতে সাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটে এমনসব লেখনী সন্নিবেশিত করেছে, বিশেষ করে প্রখ্যাত হিন্দু ধর্মীয় লেখকদের লেখনি বাদ দেয়া হয়েছে! অর্থাত দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ থেকে সরিয়ে এনে মুসলমানিত্ব তথা আরবীয় সংস্কৃতির বীজ বপন করা হচ্ছে।

অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানসহ দাওরায়ে হাদিসকে বিশ্ববিদ্যালয় মানের সনদ দেয়া হয়েছে যা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেয়নি! আর সবচেয়ে ভয়াবহ যে প্রকল্পটি আওয়ামী লীগ সরকার হাতে নিয়েছে সেটি হলো, প্রতিটি ইউনিয়ন হয়ে উপজেলা পর্যায়ে বিশাল ব্যয়বহুল দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ প্রকল্প যেখানে থাকবে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির ব্যবস্থার আয়োজন। আসলে এখানে তো কোনো ইসলামী শিক্ষা হবে না, হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী শিক্ষা কারিক্রম। রাজাকার তৈরির আদর্শিক প্রতিষ্ঠান। ধর্মের আবরণে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে যে কিংভূতকিমাকার শিক্ষা নিয়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসবে, তারা মনেপ্রাণে আলবদর ও রাজাকার হিসেবেই গড়ে উঠবে যাদের মূল লক্ষ্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উৎখাত। এভাবেই ধর্মের নামে তারা দেশে তথাকথিত ইসলামী (তালেবানী-আইএস) জঙ্গিবাদী বিপ্লব সংঘটিত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।

গত বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানকে পণ্ড করার লক্ষ্যে 'মোদীর আগমন' ইস্যুকে পুঁজি করে স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধ হেফাজতে ইসলাম দেশের মধ্যে যে তাণ্ডব চালিয়েছিলো তা কোনো সুস্থ ও গণতান্ত্রিক সরকারেরও সহ্য করার কথা নয়। যে দেশটি একটি সর্বাত্মক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে, যে দেশটির একটি রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার রয়েছে আর সেই দেশটি প্রতিষ্ঠিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পূর্বসূরিরা, সেই আওয়ামী লীগ কীভাবে হেফাজতের ফ্রিস্টাইল তাণ্ডব দেখেও নির্বিকার থাকতে পারে তা ভাবতে অবাক লাগে। একটি ধর্মান্ধ জঙ্গি অপশক্তি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সংবিধান, জাতির পিতা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে দেশকে জিম্মি করে রাখলো, জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করলো, তাদের ওপর রাষ্ট্রের উচিত ছিলো তার পরাক্রমশীলতা প্রদর্শন করা, তাতে শত শত, হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ রাষ্ট্রদ্রোহীদের পরিণতি যা-ই হতো না কেন ! ফসল ধ্বংসকারী পঙ্গপালকে যেভাবে তাড়াতে হয়, তেমনি তাড়ানো উচিত রাষ্ট্র-ধ্বংসকারী মানুষরূপী পঙ্গপালদের। এখানে কোটি কোটি মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে কোনো গণ-রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তির প্রতি অনুকম্পা দয়ামায়া ও মানবতা প্রদর্শনের কোনোই অবকাশ নেই।

অনেকে মনে করেন যে, ক্ষমতার স্বার্থে আওয়ামী লীগ যেমন স্বাধীনতাবিরোধী হেফাজত, জামায়াত ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে ব্যবহার করছে, তেমনি এসব ইসলামী দলগুলোও ভবিষ্যত ইসলামী বিপ্লব ও ক্ষমতার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করছে! যেমন তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ সংগঠনের সব কমিটিতে এখন জামায়াত শিবির রাজাকার, ফ্রিডমপার্টি বিএনপি জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য স্বাধীনতাবিরোধী দলের সমর্থক ও সমাজের অপরাধীচক্র বিপুল অর্থের বিনিময়ে বড়ো বড়ো পদ দখল করে নিয়েছে। জেলা, কেন্দ্রীয় ও উপদেষ্টা কমিটির দিকে দৃষ্টি দিলেও দেখা যাবে সেখানে বড়ো বড়ো পদে কারা বসে আছে! এটাই দু:খজনক যে, এসব অপকর্ম সংঘটিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী বর্তমান আওয়ামী লীগেরই আদর্শহীন, সুবিধাবাদী, অপরিপক্ক ও অপরিণামদর্শি অপরাজনীতির ফলশ্রুতিতে! সর্বশেষ মূল কথাটি হলো, আরব্য সংস্কৃতির করাল গ্রাস দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা হলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ একথাটি সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে।

লেখক :চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test