E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এমন তৎপরতা মন্দির প্রতিমা ভাংলেও হবে তো?

২০২২ সেপ্টেম্বর ২২ ১৩:৪২:০৪
এমন তৎপরতা মন্দির প্রতিমা ভাংলেও হবে তো?

রণেশ মৈত্র


গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকাশিত দৈনিক ‘সমকাল’ এর ১৫ তম পৃষ্ঠায় দুই কলাম ব্যাপী “বোরকা ও ধর্ম নিয়ে কটুক্তি-শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত” শীর্ষক খবরটি দেখে একদিকে মানসিক তুষ্টি-অপরদিকে বিরাজমান ধর্মীয় বৈষম্যের কথা নতুন করে মনে নানা প্রশ্নের উদয় ঘটালো। 

সর্বাপেক্ষা সংশ্লিষ্ট খবরটি পড়ে দেখা যাক। এতে বলা হয়েছে: পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে শ্রেণীকক্ষে বোরকা পরা ও ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করায় এক শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলার কুমারকাঠি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কাকলি রানী মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। এ তথ্য নিশ্চিত করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল বরন হালদার জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকা দোষ স্বীকার করায় গতকাল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলের ম্যানেজিং কমিটির সভায় তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘটনার পর গা ঢাকা দেন শিক্ষিকা কাকলি। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ।

জানা গেছে, বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণীর “সামাজিক সমস্যা ও প্রতিকার” বিষয়ে পড়ানোর সময় মুসলিম মেয়েদের বোরকা পরা এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেন কাকলি রানী।

শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বাড়ীতে গিয়ে জানালে অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

গতকাল সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হক, ইউ এনও মোশারফ হোসেন, পৌর মেয়র গোলাম কবির, ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক সহ এলাকাবাসীর সঙ্গে বৈঠক হয়। এ সময় তদন্ত করে এ ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে। তবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না ওই শিক্ষিকা।

ওসি আবির বলেন, কারও ধর্ম নিয়ে কটুক্তি বা সমালোচনা করা উচিত নয়। ধর্ম নিয়ে কাউকে বিশৃংলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। যারা এসব করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যা জানলাম ওই খবরে তাতে সমাজপতি, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবকবৃন্দ, প্রশাসন পুলিশ কর্মকর্তা সহ সকলকে অভিনন্দন জানাই। অকুণ্ঠচিত্তে ঘটনাটি ঘটার পর পরিস্থিতির অবলুপ্তি ঘটার আশংকায় তাঁরা সকলে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করে সমাজে শান্তি নিশ্চিত করেছেন। এমনটিই হওয়া উচিত সকল ক্ষেত্রেই।

তবে উদ্বেগের পরিপূর্ণ উপশম হলো না। কারণ অভিযুক্ত শিক্ষিকা কাকলি রানীর কোন খোঁজ নেই তাঁর টেলিফোনও বন্ধ। হতে পারে, তিনি নিজেই উপলব্ধি করেছেন যে পরিস্থিতি এমন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যে সমাজের মুরুব্বী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও হয়তো তাঁর নিরাপত্তা বিধান করতে সক্ষম হবেন না। তাই তিনি নিজ জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোন অজ্ঞাত স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার এমটিও হতে পারে যে তিনি টেলিফোনে এবং অন্যান্যভাবে নানা মহল থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন-যার জন্যে তাঁকে আত্মগোপনে যেতে হয়েছে। তবে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না যতক্ষণ না শিক্ষিকা নিজে বেরিয়ে এসে সমাজের সামনে তাঁর মুখ খোলেন।

আশা করেছিলাম, খবরটিতে শিক্ষিকা কাকলি রানীর স্বামী বা তাঁর মা, বাবা, ভাই-বোন এ জাতীয় কারও বক্তব্যও তুলে ধরা হবে। তা না পেয়ে খবরটা কিছুটা অসম্পূর্ণই থেকে গেল। আশা করবো সমাজ ওই শিক্ষিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে-করবে পুলিশও। কারণ স্কুলের অভ্যন্তরে সংঘটিত অপরাধ, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি বিবেচনায় নিয়ে তড়িত ব্যবস্থা নিয়েছেন-যা দৃশ্যতঃ এলাকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও প্রশাসন এবং পুলিশেরও সমর্থন ও অনুমোদন পেয়েছে। যে সমাজ বিচারাধীন অভিযুক্তের নিরাপত্তা বিধান করতে, তার প্রতি সহনশীলতা দেখাতে পারে-সে সমাজ উন্নত মানসিকতার এবং গণতান্ত্রিক চেতনার অধিকারী। আবার যে সমাজ অভিযুক্তের নিরাপত্তা বিধানে এবং তার প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনে অক্ষম-সে সমাজে উগ্র ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদ সহজেই ঠাঁই করে নেয়। কোন সুস্থ সমাজ নিশ্চয়ই তেমন পরিস্থিতির উদ্ভব কামনা করেন না।

অপরদিকে সংশ্লিষ্ট স্কুল, শিক্ষিকা, তাঁর ছাত্রী অভিভাবকমন্ডলী, প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক মন্ডলীসহ সকলকে একটি বিষয়ে অনুধাবন করতে আবেদন জানাই। শিক্ষিকা কাকলি বোরকা ও ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কথা শ্রেণীকক্ষে বলেছেন-এবং প্রধান শিক্ষকের মতে, তিনি তা স্বীকারও করেছেন। কিন্তু এই ঘটনাবলী কি স্বাভাবিক পরিবেশে ঘটেছে? একজন শিক্ষিত, সচেতন শিক্ষক কি ওই জাতীয় কিছু তাঁর শিক্ষার্থীদের সামনে বলতে পারেন? বোরকা নিয়ে নানা মত মেয়েদের মধ্যে, অভিভাবকদের মধ্যে থাকলেও ইসলাম বা অন্য কোন ধর্ম নিয়ে তো কোন মতভেদ অন্তত প্রকাশ্যে দেখা যায় না। তাই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে কাকলি রানী আসলে কি বলেছিলেন। তিনি উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হন নি তো? স্বীকারোক্তি না দিলে বিপদ ঘটতো এমনটা আশংকা করেই স্বীকারোক্তি দেন নি তো? অন্তত স্বীকারোক্তি দেওয়ার পরিণতিতে স্কুল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পরও কোথাও পালিয়ে যাওয়া এবং ফোন বন্ধ করে রাখতে তেমনটাই আশংকা হয়।

এবারে আসা যাক ছাত্র-ছাত্রীদের প্রসঙ্গে। কী রোগ-কেনই বা পেয়ে ধরলো তাদের? শুধু কামারকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় না, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকার অদূরে সাভার, উত্তরবঙ্গে রাজশাহী এবং আরও কতিপয় স্থানে এই ২০২২ সালেই দেখলাম শিক্ষার্থীরা গিয়ে অভিভাবকদের কাছে শিক্ষ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে (প্রধান শিক্ষকের কাছে নয়) এবং অভিভাবকেরা তাৎক্ষণিকভাবে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন-এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শিক্ষক শিক্ষিকার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকার সৃষ্টি হয়। অভিভাবকেরা কি ধৈর্যের সাথে বিষয়টা প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে শান্ত থাকতে পারেন না? তাঁরা কেন উগ্র ধর্মান্ধতার বশবর্তী হবেন?

উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি, ইউপি চেয়ারম্যান সহ সকলে যে তৎপরতা দেখিয়েছেন সকলকে নিয়ে বৈঠক করে এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছেন বা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন-তার জন্যে নিশ্চিতভাবেই তাঁরা ধন্যবাদার্হ।

এখন ওই সমাজপতি এবং প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তিদেরকে বিনীতভাবে জিজ্ঞেস করতে চাই যদি এমনটি না ঘটে বিপরীতটি ঘটতো অর্থাৎ যদি এই দুর্গাপূজার কাছাকাছি সময়ে যদি কেউ প্রতিমা ভাঙতো, মন্দিরে আগুন দিতো-পুরোহিতকে ভয়-ভীতি দেখাতো যা হামেশাই দেশের নানা স্থানে ঘটে চলেছে-তখন কি তাঁরা অনুরূপ তৎপরততা দেখাতেন? যদি মাইকে হিন্দুদের বিরুদ্ধে কেউ উত্তেজনাকর প্রচার করতো-তবে তাতে যেন উত্তেজনা সমাজে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে কি দ্রুততার সাথে পাল্টা মাইকিং করে বা সমাবেশ বা বৈঠক ডেকে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ দিতেন? অভিজ্ঞতা নির্মম। বহু এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে-কোথাও তা প্রশমনের সামাজিক/প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। ফলে হিন্দুদের মন্দির, বিগ্রহ এবং হিন্দু পল্লীও কি দিনে-কি রাতে সবার চোখের সামনেই আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু তার বিরুদ্ধে কদাপি কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। এর পরিণতিতে হিন্দুদের যতটা ক্ষতি হচ্ছে তার চাইতে অনেক বেশী ক্ষতি হচ্ছে আমাদের দেশের, উত্থান ঘটছে উগ্র সাম্প্রদায়িক একাধিক জঙ্গীবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর।

জঙ্গী পরিস্থিতি

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে “জঙ্গী উত্থানের শংকা” ব্যানার শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়: “মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দরা জানান, র‌্যাব-পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় দেশে জঙ্গী নেটওয়ার্ক পুরাপুরি ভেঙে পড়লেও এ গোষ্ঠীর বেশ কিছু নেতা এখনও দেশে বিদেশে ঘাপটি মেরে আছে। তারা নিজেদেরকে সংগঠিত করতে নানা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে অত্যন্ত গোপনে তরুণদের মগজ ধোলাই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে আনসারুল্লাহ্ বাংলা টিম সবচেয়ে বেশী সক্রিয় রয়েছে। তাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে এরই মধ্যে বেশ কিছু তরুণ জঙ্গী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে বাড়ী ছেড়েছে। তাদের একাধিক জন এরই মধ্যে গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, জঙ্গীরা সংঘবন্ধ না হয়ে এককভাবে বিচ্ছিন্ন বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গীরা সব সময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা বা বিশেষ কোন কিষয়ে ব্যস্ত থাকেন, তখন জঙ্গীদের প্রতি নজরদারি স্বাভাবত-ই কমে যায়। জঙ্গীরা ওই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। তবে এবার জঙ্গীরা যাতে সম্ভাব্য রাজনৈতিক সংকটের সুযোগ না নিতে পারে সেজন্য আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে অ্যাস্টিটেররিজম ইউনিট এবং কাউন্টার টেররিজম এ- ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম প্রস্তুত করয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরো পুলিশ বাহিনী নিয়োজিত হলেও পুলিশের ওই দুটি ইউনিট এর বাইরে থাকবে। তার জঙ্গী বিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয় থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জঙ্গীরা কোন ব হামলা চালানোর আগে বাড়ি থেকে ‘হিজরত’ করে। হোলি আর্টিজান হামলার আগেও তারা তা করেছিল। এখন আবার হিজরত করা সুরু হয়েছে এরা আনসার আল ইসলামের সদস্য। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিজরতের ঘটনা ঘটলেও সব তথ্য আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে আসছে না। যে সব পরিবারের অভিভাবক তাদের সন্তানদের উদ্ধারের জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তা চাচ্ছেন কেবল তাদের তথ্যই গোয়েন্দারা পাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে এক সঙ্গে সাত এবং সিলেট থেকে কাছাকাছি সময়ে নয় তরুণের নিখোঁজের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নড়ে চড়ে বসেছেন।

উল্লেখ্য, ‘হিজরতের’ উদ্দেশ্যে বের হওয়ার কথা জানিয়ে গত ২৩ আগষ্ট মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ ওরফে রিফাত, নিহাল আবদুল্লা, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে আল আমিন, সরতাজ ইসলাম ওরফে নিলয়, ইমরান বিন রহমান ওরফে শিথিল, মোঃ হাসিবুল ইসলাম ও আস সামী নামে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকার সাত তরুণ একযোগে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তাদের অভিভাবকেরা সংশ্লিষ্ট থানা সমূহে জিডি করেছেন। নিখোঁজদের অনেকেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

সূত্রমতে, চলতি বছরের সুরুতে সিলেট থেকে যে নয়জন তরুণ নিখোঁজ হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম লেডিং ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (ট্রিপল ই) ছাত্র শেখ মোহাম্মদ মামুন (২০)। তাকে উদ্ধারের জন্য পরিবারের সদস্যরা থানায় জিডি করলেও এখনও তার কোন হদিস মেলে নি। মামুনের সঙ্গে একই দিনে ঘর ছেড়েছিল সিলেটের আরও তিন তরুণ। গোয়েন্দারা এদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর, অনুসদ্ধান কার্যক্রম চালাচ্ছে।এভাবে বোঝা যায়, যে রকমেই হোক, জঙ্গীরা নানা কৌশল অবলম্বন করে দেশের নানাস্থানে সংগঠিত হচ্ছে, রিক্রুটিংও চালাচ্ছে। তাই কোনভাবেই আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই।

আর এটা সম্ভব হচ্ছে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদয়িক আবহের কারণে মূখ্যত-যদিও আরও অনেক কারণ এর পিছনে বিদ্যমান। কিন্তু সাম্প্রদয়িক আবহই মুখ্য এ কারণে যে দরিদ্র ও শিক্ষাদীক্ষাহীন তরুণেরা জঙ্গীপনায় আকৃষ্ট হচ্ছে বলে যে ধারণা বিদ্যমান ছিল অতীতের অনেক জঙ্গী এবং সাম্প্রতিক কুমিল্লা-সিলেটের হিজরতকারী তরুণদের দিকে তাকালে স্পষ্টত-ই বোঝা যায়-ওই ধারণা সঠিক নয়। এই তরুণেরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং যথেষ্ট বিত্তশালী পরিবারের সন্তান।

তাই ফিরে আসি পিরোজপুরের এবং অপরাপর স্কুলের শিক্ষকদের সম্পর্কে। কঠোরভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জানানো দরকার, কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করতে হলে তা একমাত্র প্রধান শিক্ষকের কাছে করতে হবে-শিক্ষকদের সম্মানহানি হয় এমন কিছু যেন কোন ছাত্র-ছাত্রী বা অভিভাবক না করে।

লেখক : সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত।

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test