E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মরে মরে বেঁচে উঠি তাবৎকালে

২০২২ অক্টোবর ০৭ ১৫:২২:৩৬
মরে মরে বেঁচে উঠি তাবৎকালে

পীযূষ সিকদার


আমরা ভুলে বসে আছি দেশটাকে। প্রথম ভালোবাসার দরকার ছিলো এই দেশ। আমরা ভুলতে বসে আছি এই নদীমাতৃক এই দেশটাকে। ভুলতে বসেছি দেশোমাতাকে। দেশমাতা দেশের মাটিতে পা দিয়ে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সে স্বপ্ন আজ বাস্তবায়ন হতে চলেছে। আমরা ভুলে গেছি সব। সারাদিন টাকা টাকা করে নিজেকেই ভুলতে বসেছি। নিজের অস্তিত্বকে জানান দেয়া আমরা ভুলতে বসেছি। নিজেরও কিছু চাওয়া পাওয়া আছে। আমরা ভুলে গেছি সেই চাওয়া পাওয়াকে। শুধু টাকা টাকা করে নিজেকেই ভুলতে বসেছি।

দেশমাতা দেশে ফিরেই তাঁর অস্তিত্ত্ব জানান দেন আকাশ পাতাল কাঁপিয়ে। আজ অবধি সেই অস্তিত্ত্ব নানাবিধ কায়দায় উজ্জ্বল-প্রোজ্জ্বল। কবি যে বলেন-‘‘দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে।’’ কথাটা এখনো সত্য কিন্তু সেই সত্যকে ডিঙিয়ে পরম সত্যকে পাওয়ার পথে। শেখ হাসিনা পলে পলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন দেশকে ভালোবাসার চরম নজির। আমরা তো ভুলতে বসেছিলাম দেশটাকে। শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিচ্ছেন দেশকে ভালোবাসার চরম সন্ধিক্ষণ। এ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার বীজমন্ত্র বিলিয়ে যান বাংলার ঘরে ঘরে।

নানা জাতি নিয়ে আমাদের বাস। ধর্মে ধর্মে বিভেদ আমাদের কাম্য নয়। ভালোবাসার বন্ধনে বন্ধনে আমরা এগিয়ে যাবো সামনের দিকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই চান, বিভেদ নয়। আমরা অভেদ হয়ে এগিয়ে যাবো বাংলার ঘাটে, পথে, বাঁকে। হিংসা আমাদের ধর্ম নয়। অহিংস আমাদের ধর্ম। সেই অহিংসার বাণী নিয়ে প্রতি ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালবো। অভেদাত্মা হবো গোত্রে গোত্রে জাতিতে জাতিতে ধর্মে ধর্মে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই চান। সময় লাগছে। সময় তো দাবী করে প্রতিটি শুভ চিন্তার আলোক বিচ্ছুরণে। চারিদিকে শুভ চিন্তার আলোকছটা পৌঁছে দিতে পারলেই আমরা মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবো। আমাদের দেশে শুধু হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান বাস করে না। আরো বাস করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। তাদেরকেও আলোকছটা পৌঁছে দিতে হবে। বিশ্বাস বাসি আমরা মানুষ। মানুষ হয়ে দাঁড়াতে পারলেই বাংলাদেশ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা হয়ে জানান দেবে। তখন মানুষ মনুষ্যত্ব অর্জন করবে। আর মনুষ্যত্ব অর্জন করলেই চারিদিকে শান্তির অভয় বাণী প্রচার হবে। শান্তির অভয় বাণী প্রচার হলেই আমরা আলোকিত মানুষ হবো। শ্যামল স্নিগ্ধ হবো।

চারিদিকে বাটপারি, বোমাবাজি, রক্তাক্ত স্বদেশ দেখি। ঘুষখোর, জুয়াখোর, নেশাখোরে ছেয়ে গেছে দেশ। এরই মধ্যে আমাদের দেশনেত্রী দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে আলো হাতে আলোর মিছিলে। এ মিছিল শেষ হবার নয়। সুর আর অসুরের দ্বান্দ্বিক অবস্থান প্রকট। এইদ্বান্দ্বিক সময়ে দেশমাতা এগিয়ে চলেছে শান্তির অভয় বার্তা নিয়ে।

বাংলাদেশ নামক ভূ-খন্ডটি বারবার শত্রুসেনার আঘাতে আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। তবুও দেশটি মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে তার অবস্থান জানান দিয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা দমবার পাত্র নন। যখনই কোন বিপদ আসন্ন হয়েছে তখনি দশ হাতে তার মোকাবেলা করেছেন। ‘‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’’ - এই বাণী দেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আজ আমরা জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে আছি। মানুষ হবার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। একবার মানুষ হতে পারলাম আমরা মনুষ্যত্ব অর্জন করবো। আর আমরা মনুষ্যত্ব অর্জন করলেই বিভেদ ভুলে অভেদ হবো। ভেদ ভুলে অভেদাত্মার জয় গান শুনি শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপে। পদে পদে অভেদাত্মার মন্ত্রধ্বনিই শুনি তাঁর মুখ নি:সৃত বাণীতে বা কথামালায়। বাণীতে বাণীতে দেশমাতা ভেসে যান। সেই ভাসমান ভাসানযাত্রায় দেশকে সারিয়ে তোলেন।

আলোর সীমানায় দাঁড়িয়ে আমরা আলোকিত হই। আলোপ্রাপ্ত হই। তাঁরই দেখানো পথে। পথে পথে তাই আলোর বাণী ভেসে যায়। কাল থেকে কালে। হে দেশমাতা, এখন তোমার সময়। লক্ষিন্দর যে বিষে বিষে নীল। তোমার সন্তানদের বাঁচাও। নইলে কীভাবে বাঁচবে দেশ! তুমি জেগে আছো বলে এখনো দেশ জেগে। দেশ জেগে আছে বলে লক্ষিন্দর শত বিশ কামড় নিয়ে এখনও বেঁচে আছে। অতন্ত্র প্রহরী হয়ে। আমরা শান্তি চাই। যুদ্ধ চাইনা। তাই ভালোবাসায় ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও দেশঅঙ্গন। যুদ্ধ নিশ্চিত থেমে যাবে। বারুদের গন্ধ আর যেনো নাসারন্ধ্র পথে বেয়ে প্রবেশ না করে। তারপরও কেন জানি মনের মধ্যে ধুকপুক করে। এই বুঝি মন্দির ভাঙে! এই বুঝি মসজিদ কাঁপে! আমাদের গন্তব্য তবে জানা নাই। আছে আমাদের গন্তব্য জানা আছে। শেখ হাসিনা যে আশা জাগানিয়া পাখি। তাই আশা জাগে প্রাণে। একদিন সময় বদলাবেই। বদলাচ্ছে তো! এক সেঞ্চুরি আশা নিয়ে দেশ এগুচ্ছে আগামীর পথে। বিশ্বাস রাখি মনে, একদিন সোনার বাংলা রচিত হবেই। সোনার বাংলার একদিন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন অথবা রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই কন্যা আকাশসম স্বপ্নের বীজ বপন করে চলেছেন একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্ত পর্যন্ত। এই বুঝি আবার দেশশত্রুরা আবার আঘাত হানে! ভয় হয়!

দেশ অগ্নিমাতা ভয় করেন না। সোনার বাংলা একদিন রচিত হবেই। যেখানে থাকবে না কোন বিভাজন জাতিতে জাতিতে ধর্মে ধর্মে। এই তো সেদিন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়ে গেলো। এক স্বপ্ন পথিকের হাত ধরে। আরো কত কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সোনার বাংলা একদিন সোনার বাংলা হবেই। যে স্বপ্ন একদিন দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একদিন না একদিন সে স্বপ্ন পূরণ হবে। পূরণ যে হতেই হবে। নইলে দেশমাতা যে আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করছে তা মিথ্যা হয়ে যাবে। আমরা বারবার মিথ্যাকে রেখে সত্যকে তাড়িয়ে দিই। সত্য সত্যই তাই ফিরে আসে বারেবার। সোনার বাংলা হবেই। এটা নিশ্চিত। নিশ্চিত করেই বলা যায়। তোমরা যারা দেশ নিয়ে দেশের উন্নয়ন নিয়ে হাসছো! তোমাদের জন্য কষ্ট হয়। একদিন তোমাদের আশ্রয় জুটবে আন্দামানে।

দেশমাতা স্বপ্নসাথে করে নিয়ে এগুচ্ছে। তাঁর স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে। আমি কনফিউজ্ড নই। আশা জাগানিয়া গান গাই নিয়ত। আমি নিরাশ নই। হতাশ নই। সাথে আছে দেশোমাতা। তাঁর সাহসেই ভর করে চলি। গান গাই। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। আমাদের ভালোবাসতে হবে। ভালোবাসতে হবে দেশমাতাকে। তাঁর চরণ বন্দনাই মোদ্দাকথা। তাঁর অঙ্গুলি নির্দেশ পথ আমার। এ গলি থেকে ও গলি। তাঁর কল্যাণ হোক। সেই সাথে কল্যাণ হোক মানুষের। মানুষ হবার ব্রত নিয়ে ঘুম ভাঙে। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমাদের দেশটা সোনার বাংলা হয়ে গেছে। কোন নেশাখোর মানুষ নেই। মাদকাসক্ত রুগী নেই। চারিদিকে শুধু আশার বাণী। আশাজাগানিয়া পাখিরা শুধু আশার গান গেয়ে যাচ্ছে। অনর্গল।

ভেতরে আশা জাগানিয়া পাখি কেবলি গান গেয়ে যায়। সুদিন একদিন আসবে। এমন করে কেন বলছি! আমরা তো সুদিনের পথেই আছি। চারিদিকে উন্নয়ন চলছে। গ্রাম থেকে গ্রামে। পাকা রাস্তা। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে আমরা যাচ্ছি ভ্যানে অথবা রিকসায়। আবার পায়ে হাঁটা পথ। সুন্দর দৃশ্যাবলি। শেখ হাসিনাই পারে। তাঁকে যে পারতেই হবে। নইলে সব উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে। ভয় পাই আবার বুলেটের গুলি তাঁকে স্পর্শ না করে! আমার দৃঢ় বিশ্বাস বুলেট তাঁকে স্পর্শ করতে পারবে না। সততার পথে যে চলে তাঁকে কোনো কিছুই স্পর্শ করতে পারে না। সততা কী বিকোয় বাজারে? সততার একটি শক্তি আছে। সে শক্তি বুলেট বোমা স্পর্শ করতে পারে না। সততাই শক্তি। সেই শক্তি যাকে পাহাড়া দেয় সে মরেও অমর। সোনার বাংলা একদিন হবেই শেখ হাসিনার স্পর্শে স্পর্শে গানে গানে। জয় হোক দেশমাতার। জয় হোক বাংলাদেশের। আমরা মরে মরে বেঁচে উঠি তাবৎকালে।

লেখক : শিক্ষক ও নাট্যকার।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test