পেঁয়াজের দাম! ইশারাই কাফি..
মীর আব্দুল আলীম
যেন সবাই রাজা এই রাজ্যে! যার যা ইচ্ছা, তাই করছে। দেশে একদিকে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে, অন্য দিকে সিন্ডিকেটের কারনে খাবার কিনতে গিয়ে মানুষ নি:স্ব হচ্ছে। দেশের মানোন্নয়ন হলেও দেশের মানুষের মনের উন্নয়ন হযনি এতটুকুও। কিছু মানুষ খুবই অমানোবিক আচরণ করছে। সিন্ডিকেটওয়ালারা সর্বনাশ কর দিচ্ছে দেশটা। মানুষের কষ্টের কথা মোটেও ভাবছে না তারা। কথায় কথায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ভাবা কি যায় এক/দুই দিনের ব্যবধানে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। তাও আবার পিঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। ডাল চিনি, তেল নুন, তরিতরকারীরর দাম বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে। পিঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের এতো দাম! তবুও দেশের কোথাও কোন প্রতিবাদ নেই। আমজনতার মুখে যেন কুলুপ আঁটা। জনগণের গাঁটে পয়সা আছে; তাই গায়ে লাগছে না এই আর কি!
এসব দেখে বলতে হয়- এই বাংলায় আমরা সবাই রাজা! কারোরই অর্থকড়ির অভাব নেই! তাই ১ টাকার জিনিস ২ টাকায় কিনতেও কোন নেই সমস্যা। ভাবখানাতো এমনই। জনগণ বাড়তি দামে পণ্য কিনছে। বেশি করে কিনে কেউ কেউ আবার মজুতও করছে। পেঁয়াজসহ অন্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় মাঠপর্যায়ে নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। যাঁরা অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করতেও বলা হয়েছে। এমন নির্দেশের কথা সর্বদাই শুনি; কাজ হয়েছে জানা নেই। সিন্ডিকেট ওয়ালার যা করার তাই করছে। ওরা যে এ রাজ্যের রাজা! তাই যা মন চায় তাই করেন ওনারা। দিনে পিয়াজের দাম ১ শ টাকা বাড়াতে হবে উচ্ছা করলেই হয়ে যায়। ইশারাতেই যেন কাফি। সারা দেশেই তা বেড়ে যায় এক যোগে। সিন্ডিকেটের ব্যাপারে দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্দ। তিনি দ্রুত পিয়াজসহ অন্যন্য পণ্যের বাজ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন। সে নির্দেশ কার্যকর হলেই ভালো।
ক’মাস আগেও পিয়াজ ২৫ টাকা ছিলো। ডিসেম্বরের প্রখম সপ্তাহেও ৮০/৯০ টাকায় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে। দু’দিনের ব্যবধানে কেজি ২শত টাকারও উপরে উঠেছে পিয়াজের দাম। গিয়ে ঠেকেছে। এদিকে কাঁচামরিচ ও বেগুন ও অন্যান্য সবজি সবটার দামই বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ তিনগুন হয়েছে। ৩০ টাকার শসা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। আর মাছ-মাংসের দামতো আগে থেকেই বেড়ে আছে। ইলিসের দাম চড়া। অনেকে এবার দামের কারনে একবারের জন্যও ইলিশ ঘরে নিতে পারেনি। কেজি প্রতি পাঙ্গাস ১৮০-২০০, সিলভার কার্প ১৮০-২২০, শিংমাছ ৬০০-৮০০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, দেশি মাগুর ৬০০-৮০০, চায়না পুঁটি ১৫৫-১৯০। দেশি আলু (লাল) ৪০, নতুন আলু ১২০ টাকা, করলা ৬০-৮০, পটোল ৬০, কাকরোল ৫৫-৬০, চিচিঙ্গা ৫০-৬০, মিষ্টি কুমড়া (কাটা পিস) ২৫-৪০, লাউ ৪০-৬০, কচুর লতি ৫০-৬০, গাঁজর ৫০-৮০ টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এটাই বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের হালচিত্র। শুধু তরিতরকারি নয় ছোলা, ডাল, মাছ মাংস সব কিছুর দামই এখন বেশ চড়া।
চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও তার সুফল অনেক সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় পরিবহন চাঁদাবাজি ও মজুদদারির কারণে। এবারো বেড়েছে। আগে বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। দ্রব্যমূল্য এবং চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে; পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। সারাদেশে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভাগীয় এবং জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কিন্তু তাতেও কি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আছে? বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর জেলাপ্রশাসনের তাবৎ হুমকি ধমকিকে কি পাত্তা দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা? উল্টে পিয়াজের দামে আগুন লাগিয়ে ছেড়েছে।
বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং ভারতের বাজার থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে পিয়াজের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৭৭ দশমিক ১০০ শতাংশ। পত্রিকার সংবাদ থেকে জানা যায়, এক/দুই দিনের ব্যবধানে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। অনেক দোকানে পেঁয়াজ নাই, ক্রেতারা বলছে আরও বেশি দামে বিক্রি করবে, তাই দোকনদাররা পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলেছে। এবং অনেক দোকানে পেঁয়াজের মূল্য তালিকায় নাই। কিছু দোকানে মূল্য তালিকা আছে ১৫০ টাকা, বিক্রি করছে ২১০/২২০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২১০-২২০ টাকা ও ইন্ডিয়া পেঁয়াজ ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। দোকান মালিকরা বলেছে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে,তাই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মূল্য বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা না গেলে সামনে ২৫০ টাকা থেতে ৩০০টাকা পর্যন্ত দাম উঠতে পারে পিয়াজের। পেঁয়াজ বেচাকিনা নিয়ে এক ধরণের ইদুর খেলায় মেতে উঠেছে ব্যবসায়িরা। পেঁয়াজ সংকটের নামে ব্যবসায়িরা বিশেষ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে। ক্রেতারা মনে করেন বাজারে প্রতিদিনই মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে এখনো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না প্রশাসন।
দেশে কি পেঁয়াজ মজুত নেই? লাগামহীন মূল্য বাড়ার পরে এমন প্রশ্ন সামনে আসতে পারে। বিভিন্ন পত্রিকা সূত্রে জানতে পারা গেছে, দেশে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই ইচ্ছা অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে রাতা-রাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটা অতি মুনাফা ছাড়াও সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্রও হতে পারে। সরকারকে বিব্রত করা এবং বিপদে ফেলাই মূল উদ্দেশ্য হতে পারে। বিষয়টি সরকারকে ভালোভাবে ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে বলছে, প্রতিবছর দেশে ১৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবেই উৎপাদন হয় প্রায় ১২ লাখ টন। আর চাহিদার মাত্র ৩ লাখ টন পেঁয়াজ বছরের বিভিন্ন সময়ে আমদানি করা হয় ভারত থেকে। মানুষের পকেট মেরে রাতারাতি বাড়ি-গাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্স করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। ফি বছরধরেই হয়। তবে সকালে ৮০/৯০ দুপুরে ১২০/১৩০ আর রাতে ২০০ টাকা! এভাবে কি পৃথিবীর আর কোনো দেশে দাম বাড়ে? এ দেশে হুট্ হাট্ পণ্যমূল্য বেড়ে; বাড়ে জনগণের নাভিশ্বাস। এটা নতুন নয় যে কোন অজুহাত মানেই পণ্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়া। ভারত থেকে পিয়াজের আমদানী বন্ধ হয়েছেতো খবর পেয়ে পিঁয়াজের দাম ব্যবসায়ীরা এক লাছে উঠিয়েছে ১শ’ত টাকার উপরে।
এভাবে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন পাগলা ঘোড়া ছুটছে তো ছুটছেই। বর্তমানে অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার। কোনোই সুখবর নেই। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, আলু, খেজুর, মাছ, মাংস, মসলা, কাঁচামরিচ, শাকসবজি, ফলমূলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় হেন পণ্য নেই যে, গায়ে মূল্যবৃদ্ধির উত্তাপ নেই-তফাৎটা শুধু ডিগ্রির, কোনোটার বেশি কোনোটার কম। এবার নতুন বাজেটের পরও পণ্যবাজারে তার বিরূপ প্রভাব পড়েনি। তাই সরকারি মহল সেসময় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো। কিন্তু ২’টা মাস পার না হতেই কারণ ছাড়াই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির উত্তাপ লাগে। ব্যবসায়ী-মজুদদাররা মুনাফায় পকেট ভারি করার মওকা ছাড়ে না। সুযোগমত দু’টো পয়সা কামিয়ে নিতে এরা কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নেয়। মজুদ গড়ে তোলে, দফায় দফায় মূল্য বাড়িয়ে সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়ে। এসব মুনাফা খোররা এদেশের অসহায় মানুষের কথা ভাবে না। এখন নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের চাপিয়ে দেয়া দাম দিয়ে খাবার কিনতে পারছে না। ওরা ২ বেলা পেট পুরে খেতে পারছে না। আসলে মানুষকে জিম্মি করে অধিক মুনাফা লাভের ব্যবসায়ীদের এই খেলা কোনো সরকারই বন্ধ করতে পারে না, একথা কেউ বিশ্বাস করবে না। সরকারের সৎ ইচ্ছা থাকলে এই খেলা বন্ধ করা অবশ্যই সম্ভব, কিন্তু এই সম্ভবকে অসম্ভবের হাত থেকে বাঁচাতে সরকারকে অবশ্যই হার্ড লাইনে চলতে হবে। প্রথমে চিহ্নিত করতে হবে সেসব অসাধু ব্যবসায়ীদের যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের সকল বিবেকহীন আয়োজন সম্পূর্ণ করেছে।
অর্থনীতিতে একটা কথা আছে, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন যতো কম হবে পণ্যের দাম বাজারে ততো বেশি হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ কাজ নয়। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও চারদলীয় জোট সরকার এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের সময় দেখেছি, যতবার পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, ততবার বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সরকারকে বারবার আশ্বাস দিচ্ছে, পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু বাস্তবে তা তামাশা মাত্র! তার কোনো প্রভাব কখনই বাজারে পড়ে না। দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য অসৎ ব্যবসায়ী সব সময়ই বেপরোয়া। তারা মন্ত্রী, সচিব, ডিসি এসপিদের ছোঁড়া হুংকারকে দিব্যি ধিক্কার দিয়ে চলে। অসৎ বৃহৎ ব্যবসায়ীদের একটি গোষ্ঠী বড়াবরই পণ্যমূল্য বাড়িয়ে তাদের পকেট স্ফীত করে চলেছে। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ সরকারকে যেকোনো মূল্যে নিতেই হবে। এজন্য বিরোধীদলগুলোকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে হবে। এভাবে অহেতুক পণ্যমূল্য বাড়ার ঘটনা বোধ করি কোনো সভ্য সমাজে ঘটে না। অন্য কোনো দেশেও তার নজির নেই। এভাবে আর চলতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এখনই ওদের রুখতে হবে। সরকার, জনগণ দলমত নির্বিশেষে ওদের ওপর দুর্বার গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। প্রতিবাদি হতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে এর আর বিকল্প আছে বলে আমি মনে করি না।
দ্রব্যসামগ্রী অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের মূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে বর্তমান পরিস্থিতিতে যা করা দরকার তাহলো- সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তাদের নেয়া পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে হবে। যেকোনো মূল্যে মধ্যস্থানীয় শ্রেণির কারসাজি বন্ধ করতে হবে। সরকারকে ব্যবসায়ীদের ওপর বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য সামঞ্জস্য আছে কিনা নিয়মিত তা তদারকি করতে হবে। দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি বন্ধের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবহন খাতের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। বাজাওে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি, তা বেশি করে যোগান দিতে হবে। পাইকারি বাজার থেকে মধ্যশ্রেণির গোষ্ঠী যাতে স্বার্থ হাসিল না করতে পারে, সেজন্য পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত সরকারি নিজস্ব পরিবহন ও জনবলের মাধ্যমে খুচরা বাজারে পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া যেতে পারে। তাতে করে চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজিও বন্ধ হবে। বেশি করে পণ্য আমদানি করে সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা। আরো বেশি করে সরকারি বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে বণ্টনের ব্যবস্থা করা। সর্বোপরি ব্যবসায়ীদের শপথ নেয়া উচিত-’আমরা পণ্যসামগ্রী মজুদের মাধ্যমে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়াবো না এবং পণ্যসামগ্রীতে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করবো না।’ তা কি হবে এই দেশে।
এমনিতেই মূল্যস্ফীতির চাপে আছে সাধারণ মানুষ। যতটা পণ্যমূল্য হওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি পণ্যম্যূ বেড়েছে বাংলাদেশে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং দেশে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে আমদানি খরচ বাড়ে, যা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা। নানা কারন থাকলেও পণ্যের দাম লাফিয়ে বেড়ে ওঠার প্রধান কারন সিন্ডিকেট। সরকারের পক্ষ থেকেও সেটা স্বিকার করা হচ্ছে। সুযোগসন্ধানী ব্যাবসায়ীদের কথা বরাবরই বলা হলেও সরকার কেন তাদের রোধ করতে পাছেনা। প্রশ্ন হলো সিন্ডিকেটওয়ালারা কি দেশ চালায়? তারা কি সরকারের চেয়েও ক্ষমতাধর?
এতো উন্নয়নের পরও সিন্ডিকেট দেশটার সর্বনাশ করে দিচ্ছে। দেশে নিত্যপণ্যের উৎপাদন, মজুত ও সরবরাহ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বাজার ও গুদামে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য এক বা একাধিক পণ্য টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। পরে এ দাম আর তেমন একটা কমছে না। অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের ঠকাচ্ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম বাড়িয়ে ভোক্তাকে নাজেহাল করা হচ্ছে। আবার চাল নিয়ে করা হচ্ছে চালবাজি। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি থেকে শুরু করে সব ধরনের সবজি, আদা-রসুন, মাছ-মাংস, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাকে জিম্মি করা হচ্ছে। বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও সরকারের একাধিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু হাঁকডাকের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছে।
আমরা জানি, এসব পরিস্থিতি থেকে ভোক্তাকে রক্ষা করতে সরকারের একাধিক বাজার তদারকি সংস্থা কাজ করছে। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি সেল, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বিএসটিআই, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, র্যাবসহ সরকারের অন্যসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। এছাড়া এসব সংস্থা নিজস্ব আইনে বাজার তদারকি করছে। তারপরও বাজারে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা আনা সম্ভব হয়নি। তাহলে কি গোড়ায় গলদ? এদেশের সিন্ডিকেটওয়ালারা বড়ই প্রভাবশালী। সরকারের লোকজনেরসাথে তাঁদের সখ্যতা অনেক। তাই হয়তো তাদের রোধ করা যায় না কিংব রোধ করা হয় না। এদেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা চাইলে ভোগ্যপণ্যের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করতে পারে বা পণ্যের সরবরাহ কমাতে পারে। কৌশল করে তারা দাম কমাতে পারে, আবার বাড়াতেও পারে। এখানে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
দেশের একটি দৈনিকের দেখলাম, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি বলেছেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বছরের পর বছর ভোক্তারা ঠকছেন। সংস্থাগুলো জানে কে বা কারা পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি করছে। একাধিক বার তারা সেটা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু অসাধুদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না। পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণসহ বাজারে সঠিক পণ্যটি সঠিক দামে বিক্রি হচ্ছে কি না তা দেখতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। ভেজাল খাদ্য রোধে মনিটরিং করতে হবে। বিএসটিআই অনুমোদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনতে হবে। পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পণ্যের সঠিক চাহিদা জানতে হবে। সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। তা না হলে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পণ্যের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়বে। ব্যবসায়ীরা লাভ করবে, তবে ডাকাতি করতে পারবে না। আমাদের দেশে সুযোগ পেলেই ডাকাতি করে ভোক্তাকে নাজেহাল করে।
যারা চাকুরী করেন তারা গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, বাসাভাড়া, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, সন্তানের শিক্ষা ব্যায় বৃদ্ধিসহ নিত্যপন্যেরর আকাশ ছোঁয়া উচ্চ মূল্যের নিস্পেষনে আছেন। যারা ব্যবসা বাণিজ্য করেন তাদের অনেকেরই ব্যবসা এখন আগের গতি নেই। উৎপাদন, বেচাকেনা কমে গেছে। ব্যবসা বানিজ্যে স্থ্যবিরতা, গার্মেন্টস, শিল্পকারখানা একে একে বন্ধ হয়ে যাওয়া, আমজনতার নিত্য টানাপোড়েন, সড়ক মৃত্যু, ধর্ষণ, গুম, খুনসহ নানা কারনে দেশের মানুষ সুখে নেই; শান্তিতে নেই।
সর্বশেষ, আগাম সতর্ক বার্তার মতো উচ্চারণ করা যায়, বাজার একবার চড়লে সেই চড়া বাজার আর নামতে চায় না। এটা হচ্ছে অতীতের অভিজ্ঞতা। সে জন্য পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে যা যা করা দরকার তা সরকারকে করতে হবে। এজন্য বাজার মনিটরিংয়ে সরকারকে আরও চৌকস হতে হবে। আর তাতে হয়তো জনগনের কিছুটা মুক্তি মিলতে পারে।
লেখক : সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ১,১৭৮ টাকা
- জকিগঞ্জে যুবকের লাশ উদ্ধার
- মহম্মদপুরে আনসার ও ভিডিপির আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক ব্রিফিং প্রদান
- মহম্মদপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেবী নাজনীনের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়
- সিলেটে সাংবাদিক রেনুর পিতার মৃত্যুতে ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের শোক
- সালথায় ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা
- ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভালে টেবিল টেনিসে রুমেল খানের দ্বিমুকুট জয়
- ‘শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন বলেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হয়েছে’
- মোংলায় আচরণবিধি লঙ্ঘন, দুই চেয়ারম্যানসহ তিন প্রার্থীকে টাকা জরিমানা
- টাঙ্গাইলের তিন উপজেলায় মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা
- র্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যু, সুরতহাল জানাচ্ছেন না কেউ
- কান চলচ্চিত্র উৎসবে দুধ সাদা পোশাকে কিয়ারা
- কালিহাতীতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই ভাই নিহত
- পণ্যের গুণগত মান ঠিক রেখে ব্যবসা করছে নিউজিল্যান্ড ডেইরি বাংলাদেশ
- পাবনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় কৃতি ছাত্রদের সংবর্ধনা
- সিগারেট ধরাতে গিয়ে ধাক্কা লাগায় বাবার সামনে শিক্ষার্থীকে এসআই’র মারধর
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের কমিটি গঠন
- গোপালগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকে নেমে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
- মাগুরায় রেলপথ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে রেলমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- সিলেটে তারেক রহমানের নির্দেশ মানছে না কেউ
- বাংলাদেশিদের টুরিস্ট ভিসায় ভারত ভ্রমণে ৩ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে
- ‘ঢাকার কাঁচাবাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে’
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আ. লীগের নায়েব আলী
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের শ্রদ্ধা
- ‘রেল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটাবে’
- সুবর্ণচরে পাওয়ার টিলারের চাপায় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু
- মহম্মদপুরে ইয়াবাসহ আটক ১
- বিশ্বব্যাংক ভূমি সম্মেলনে অংশ নিল বাংলাদেশ
- সৌদিতে প্রথমবার সাঁতারের পোশাকের ফ্যাশন শো
- আর কে মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন
- পশুর জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ মন্ত্রীর
- ইউপি সদস্যকে মারধর, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণ কোনো সুবিধা বয়ে আনে না’
- জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
- ফরিদপুরে স্কুলছাত্র অন্তর হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আজিজুল গ্রেফতার
- প্রচারণায় নতুন মাত্রা দিয়েছে প্রার্থীর স্ত্রী, বিজয়ী করতে ঢাকায় উঠান বৈঠক
- আগৈলঝাড়ায় ইয়াবা-গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক
- বাজার মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকা কমেছে
- আগৈলঝাড়ায় মার্কাস মাদ্রাসায় ১৫ দিন যাবত আবাসিক ছাত্র নিখোঁজ, থানায় ডায়েরী
- ৭ বছর আগেই জানতে পারবেন ক্যানসার হবে কি না
- আগৈলঝাড়ায় এক রাতে স্কুলছাত্রী ও গৃহবধূর আত্মহত্যা
- তক্ষশীলা আসামের সভাপতি থানেশ্বর বঁরোর মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলে শোক
- ১৩ বছর ধরে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যাচ্ছেন ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ রহমান
- চাটমোহরে দুই বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
- ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই একাত্তরের চেয়েও কঠিন’
- মেট্রোযাত্রীদের ওপর চাপ বাড়াবে এনবিআরের ১৫ শতাংশ ভ্যাট
- ঢাকাসহ ৬ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- তালা-পাইকগাছা সড়কে ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত
- ‘দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই’
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !