বিশ্ব তথ্য সুরক্ষা দিবস
নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় আইনি ব্যবস্থা থাকা জরুরি
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
২৮ জানুয়ারি রবিবার বিশ্বব্যাপী পালিত হতে যাচ্ছে ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস ২০২৪। প্রতি বছর এই দিবস উপলক্ষে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বে নানান রকম ক্যাম্পেইন চালানো হয়। ১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম ডাটা প্রাইভেসি ডে বা তথ্য সুরক্ষা দিবস উদযাপন শুরু হয়। ‘কনভেনশন ১০৮’ গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিপালনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ২৮ জানুয়ারি ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্স (এনসিএসএ) এর নেতৃত্বে দিবসটি পালিত হয়।
ইউরোপে উদযাপন শুরু হওয়া তথ্য সুরক্ষা দিবস ২০০৮ সাল থেকে উত্তর আমেরিকায় পালন শুরু হয়। এই দিবসটি মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সর্বোত্তম কলাকৌশল ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়। ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে’ বা তথ্য সুরক্ষা দিবস বিশ্বব্যাপী একটি বৃহত্তর ক্যাম্পেইনের অংশ, যেখানে প্রাইভেসির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হয়। তুলে ধরা হয় ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সহজ সব পদ্ধতি। পাশাপাশি সংগঠনগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে, সব কাজে প্রাইভেসি গুরুত্বপূর্ণ। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, সরকারি প্রতিষ্ঠান, পৌরসভা ও ব্যক্তি পর্যায়ে বাসাবাড়ি ও কর্মস্থলে সচেতনতা তৈরির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। সকল ‘ডাটা প্রাইভেসি ডে চ্যাম্পিয়ন’ই সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাইভেসি ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে সামঞ্জস্যপূর্ণ বার্তা প্রচার করে। এর মধ্য দিয়ে তথ্য সুরক্ষা ও আস্থা প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সচেতনতা বিকাশের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে কাজ সংগঠনগুলো। আর আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অবিরাম তথ্য প্রবাহ তৈরি করছি। দুঃখজনক হলেও সত্যি, সমসাময়িক সমীক্ষা ও প্রতিবেদনগুলিতে দেখা যাচ্ছে, আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে নিজস্ব তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি।
বর্তমান বিশ্বে তথ্যই সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। যার কাছে যত অন্যের তথ্য আছে, সে তত বেশি সম্পদশালী। তাই বিনা মূল্যে সেবা দেওয়ার পরও ফেসবুক, গুগল, টুইটারের মতো সংস্থাগুলি দিন দিন বিশাল দৈত্যাকার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। এসব সংস্থা আমাদের তথ্য বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি করে অর্থ কামাচ্ছে।সাধারণত তিন প্রকার তথ্য পাওয়া গেলে সেই তথ্যের মালিককে শনাক্ত করা সম্ভব। প্রথমটি হচ্ছে ‘কে’—নাম, ফোন নম্বর, জাতি, লিঙ্গ, বয়স, উচ্চতা, ওজন ইত্যাদি। দ্বিতীয়টি ‘কী’—শিক্ষার স্তর, রাজনৈতিক বিশ্বাস, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম ইত্যাদি। তৃতীয় প্রকারটি ‘কোথায়’—শপিংয়ের জায়গা, কাজের জায়গা, প্রার্থনার জায়গা ইত্যাদি, এককথায় বিচরণক্ষেত্র। এই তিন প্রকার তথ্য এক সুতায় বাঁধলে সহজেই একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এ জন্য একে বলা হয় ব্যক্তিগত শনাক্তযোগ্য তথ্য (পারসোনাল আইডেন্টিফায়েবল ইনফরমেশন—পিআইআই) আমেরিকান ম্যানেজমেন্ট পরামর্শক সংস্থা ম্যাককিন্সির অনুমান অনুযায়ী শুধু ব্যক্তিগত অবস্থানের তথ্যের মূল্য আগামী কয়েক বছরে আট লাখ কোটি টাকার বেশি হবে।
বিখ্যাত অ্যান্টিভাইরাস সংস্থা ম্যাকাফির হিসাব অনুযায়ী ৮২ শতাংশ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ব্যবহারকারীর অনলাইন ক্রিয়াকলাপ ট্র্যাক করে এবং প্রায় ৮০ শতাংশ অ্যাপ লোকেশন তথ্য সংগ্রহ করে। ফিউচার ক্রাইমস গ্রন্থের লেখক মার্ক গুডম্যানের ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী আমেরিকার ডেটা ব্রোকার অ্যাক্সিওম করপোরেশন বিশ্বব্যাপী ৭০০ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহকের ১ হাজার ৫০০ ধরনের বৈশিষ্ট্যের তথ্য ২০ হাজারের বেশি সার্ভারে জমা রেখেছে এবং প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে। এসব সংস্থা সম্পত্তির রেকর্ড, বিয়ের লাইসেন্স এবং আদালতের মামলা ইত্যাদি উৎস থেকে তথ্য সংকলন করে। তারা ব্যক্তির চিকিৎসার রেকর্ড, ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের ইতিহাস, সোশ্যাল মিডিয়া সংযোগ এবং অনলাইনে কেনাকাটার তথ্যও সংগ্রহ করতে পারে। আমরা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ব্যক্তিগত তথ্য না বুঝেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছি। আমরা ভাবছি এটা নিরাপদ। কিন্তু ইন্টারনেটে যেকোনো তথ্যই উন্মুক্ত। আপনি যাকে তথ্য দিচ্ছেন, হয় সে সেটা অন্যের কাছে বিক্রি করছে, অথবা হ্যাকাররা চুরি করে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে বা অন্যের কাছে বিক্রি করছে। হ্যাকার শুধু ব্যক্তি বা সংগঠিত গোষ্ঠীই নয়, রাষ্ট্র, দেশি–বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা বা তাদের এজেন্টরাও হ্যাকিং করতে পারে।বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান, যাদের আপনি বিশ্বাস করে তথ্য দেন, তারা আপনার পুরোনো তথ্য মুছে ফেলে না। আপনি নিজের প্রোফাইল মুছে ফেলার পরও ফেসবুক সেটা তার সার্ভারে অনেক দিন রেখে দেয়। আর বলা হয়, গুগল কখনোই কারও কোনো তথ্য মোছে না। এই ধরনের সংস্থার বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইউরোপে ব্যবহারকারীর তথ্যের গোপনীয়তা ও সুরক্ষা লঙ্ঘন, ব্যবহারকারীর তথ্যের অনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগে অনেক মামলা হয়েছে, প্রতিনিয়ত হচ্ছে।আমরা দিন দিন আরও ডিজিটালাইজড এবং আরও সংযুক্ত হচ্ছি। এটা কোনোভাবেই এড়ানো সম্ভব নয়। তাহলে আমরা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা সুরক্ষার জন্য কী করব? এর সহজ উত্তর হচ্ছে আমাদের সচেতন হতে হবে।
অনলাইনে আমরা কী তথ্য তৈরি করছি এবং কীভাবে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়, শেয়ার করা হয় এবং কীভাবে ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। কোনো অ্যাপ্লিকেশন বা সংস্থা চাইলেই আপনার তথ্য দেওয়া ঠিক হবে না। আপনি যেসব উপকার পেতে পারেন, সেটা বিবেচনা করে আপনার তথ্য শেয়ার করবেন কি না, সে সম্পর্কে অবগত হয়ে সিদ্ধান্ত নিন। অনেক অ্যাপ্লিকেশন তাদের পরিষেবা ব্যবহার করার আগে ব্যবহারকারীর ভৌগোলিক অবস্থান, পরিচিতি তালিকা এবং ফটো অ্যালবামের অ্যাক্সেসের অনুমতি চায়।
বিটিআরসি’র তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে গ্রাহক সংখ্যা ১৯ কোটি ৩৬ লাখে পৌঁছেছে। নভেম্বর শেষে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে- মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ৮ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার, রবি আজিয়াটার ৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনসের ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার এবং টেলিটক বাংলাদেশের গ্রাহক সংখ্যা ৬৪ লাখ ৬০ হাজারে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৮ কোটি ২০ লাখে। যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি। আর ০৫ জানুয়ারী, ২০২৪ পর্যন্ত, ৫.৩০ বিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, যা বিশ্বের জনসংখ্যার ৬৬% এর সমান।গড় বিশ্ব ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতিদিন সাত ঘন্টা অনলাইনে ব্যয় করে। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত, ১.১৩ বিলিয়ন ওয়েবসাইট ছিল, যার মধ্যে ৮২% নিষ্ক্রিয় ছিল। ৬.৪ সালে বিশ্বব্যাপী খুচরা ইকমার্স বিক্রয়ের পরিমাণ হবে $ ০২৪ ট্রিলিয়ন। আর জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বর্তমানে সারা দেশে প্রায় আট হাজার ৮০০টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছেন, যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। এর ফলে একদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্য, অন্যদিকে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হচ্ছে।
দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে ও স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী সুযোগ কাজে লাগানোর পথ সুগম করতে সরকার আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদের সুদ ও জামানতবিহীন ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট এবং ট্রেনিং, ইনকিউবেশন, মেন্টরিং এবং কোচিংসহ নানা সুবিধা দেওয়ার ফলে দশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। বিকাশ, পাঠাও, চালডাল, শিওর ক্যাশ, সহজ, পেপারফ্লাইসহ দুই হাজার ৫০০ স্টার্টআপ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। যারা প্রায় আরো ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। ১০ বছর আগেও এই কালচারের সঙ্গে আমাদের তরুণরা পরিচিত ছিল না। মাত্র সাত বছরে এই খাতে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে।
বিশ্বে অনলাইন শ্রমশক্তিতে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশে সরকারি কোনো সেবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সরকারি সব দপ্তরের প্রাথমিক সব তথ্য ও সেবা মিলছে ওয়েবসাইটে। সেই সঙ্গে সরকারি সব তথ্য যাচাই-বাছাই ও সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন পরিষেবা ও আবেদনের যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফরম ‘বিনিময়’ চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে গেছে প্রত্যেক গ্রাহকের হাতের মুঠোয়। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং থেকে আসা অর্থ আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে আধুনিক ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এ সব কিছুই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল।
নারী-পরুষের সমান অংশগ্রহণ, ধনী-দরিদ্র-নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করা, শহর ও গ্রামের সেবা প্রাপ্তিতে দূরত্ব হ্রাস করার সবই ছিল আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ফলে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মতো উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানও নিশ্চিত করা গেছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও প্রযুক্তির কল্যাণে এখন গ্রামে বসেই যে কেউ চাইলেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করতে পারছে। এ সবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতির ফলে। আজকে আমরা আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেট ও আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা ডিভাইসগুলোতে ব্যয় করছি। এখনও খুব কম মানুষই জানে যে, আমাদের ব্যবহৃত ডিভাইস ও অনলাইন সেবা থেকে অসংখ্য ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে। এসব তথ্য অনির্দিষ্টভাবে গচ্ছিত করা হতে পারে এবং আমাদের ব্যক্তিগত এসব তথ্য উপকারে ব্যবহার করা হতে পারে আবার অবাঞ্চিতভাবেও ব্যবহার করা হতে পারে। এমনকি দেখা গেছে, অনলাইনে অনুপকারী তথ্য শেয়ার করার ফলেও তা আপনার আর্থসামাজিক অবস্থান সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন আপনার প্রিয় রেস্টুরেন্ট অথবা অনলাইনে যেসব আইটেম আপনি ক্রয় করেছেন তা শেয়ার করা। আর আইনগত বিষয় শক্তিশালী আইনের অনুপস্থিতিতে দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের ইউজার ও ক্রেতাদের ব্যক্তিগত আচরণ পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে এবং ভোক্তাদের এসব তথ্য তারা লাভের জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে। ভোক্তাদের বোঝা প্রয়োজন যে তাদের তথ্যের সঠিক মূল্য আসলে কতটা এবং কিভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তা শেয়ার করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা জানতে হবে।
আইন
বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৩ (খ) নম্বর অনুচ্ছেদে প্রাইভেসি রাইটস বা ব্যক্তির তথ্য সুরক্ষা ও গোপনীয়তা মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণা (অনুচ্ছেদ ১২) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদ (অনুচ্ছেদ ১৭), জাতিসংঘের কনভেনশন অন মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স (অনুচ্ছেদ ১৪) এবং শিশু অধিকার সনদ (অনুচ্ছেদ ১৬)-এ প্রাইভেসিকে অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাগরিকের তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাই নেই। এখন সময় এসেছে তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের।
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্রচার ও প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কিভাবে বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য তথ্য সুরক্ষা ও তথ্য সংরক্ষণ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করার আগে কোন তথ্যটি কেন, কী উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে তা অবশ্যই শনাক্ত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া স্বাভাবিক সময়ে ব্যক্তিগত তথ্য অবশ্যই ব্যক্তির সম্মতিতে সংগ্রহ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যারা তাদের গ্রাহক/ভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করে, তারা যাতে গোপনীয়তার নীতি মেনে চলে সে বিষয়ে সরকারের স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা থাকা খুব জরুরি।
প্রাইভেসি ও সিকিউরিটির মধ্যে পার্থক্য কী?
সিকিউরিটি বলতে- যেসব উপায়ে আমরা আমাদের নিজেদের, আমাদের সম্পত্তি ও ব্যক্তিগত তথ্যকে সুরক্ষা করি তাকে বোঝায়। এটা অবাঞ্চিত অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম পর্যায়ের প্রতিরক্ষা। আর প্রাইভেসি বলতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে বোঝায়।
পরিশেষে বলতে চাই, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্রচার ও প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কিভাবে বজায় থাকবে তা নিশ্চিত করতে হবে। আর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধকে প্রতিহত করার জন্য আইনি ব্যবস্থা থাকা জরুরি। কেউ ইচ্ছা করলেই যাতে আরেক নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন করতে না পারে সেজন্য শক্ত আইন থাকা উচিত। আইন ব্যক্তির পক্ষে তার অধিকার সংরক্ষণে দায়িত্ব পালন করে। এর সঙ্গে সঙ্গে আইন মেনে চলার জন্য জনসচেতনতাও প্রয়োজন। শুধু আইন দিয়ে এই অপকর্ম বন্ধ করা যাবে না। মানুষ নৈতিক মূল্যবোধের বিষয়ে সজাগ হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো চরম নৈতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক।
পাঠকের মতামত:
- টঙ্গীবাড়ীতে অজ্ঞাতনামা যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার
- সদ্য ইস্তফা দেওয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এডিপি ও পিআইসি’র টাকা লুটপাটের অভিযোগ
- সাতক্ষীরায় আম নিরাপদ প্রক্রিয়ায় বাজারজাতকরণের সময়সূচি নির্ধারণ
- নির্বাচনী প্রচার মাইকের শব্দদূষণ রোধে সিইসির কাছে চিঠি
- সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে, পুড়ে ছাই ১০ একর এলাকার ছোট গাছ লতাগুল্ম
- চেয়ারম্যান প্রার্থী মুন্সী নজরুল ইসলামের নির্বাচনী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
- ৫ মে দিনটিকে কেন ভুলে যেতে চায় হেফাজত
- তিন মাসে দিল্লি বিমানবন্দরে বাংলাদেশি গার্মেন্টস রপ্তানি বেড়েছে ৭ গুণ
- আগের দিন রাস্তা সংস্কারের দাবি, পরের দিন বাস্তবায়ন
- মহম্মদপুরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় আটক ১
- নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই সম্পন্ন
- ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা
- ঋণ খেলাপির দায়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহাগের মনোনয়ন বাতিল
- বোয়ালমারীতে স্বর্ণের কারিগরকে কোপাল বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা
- টাঙ্গাইলে দাবদাহে দীপ্তি ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুল
- সারাদেশে গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
- ঈশ্বরগঞ্জে পানি সাশ্রয়ী সেচ প্রযুক্তি প্রদর্শনী ট্রায়ালের মাঠ দিবস
- ‘বাংলাদেশের ঋণ খেলাপি না হওয়ার অহংকারে চিড় ধরেছে’
- প্রাকৃতিক গ্যাস আসার খবরে খুশি গোপালগঞ্জবাসী
- রাজৈরে আগুনে পুড়লো ৬টি দোকান
- দুই ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক আটক
- ‘সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা-বিশ্বাস আছে’
- ফরিদপুর সদরে তুমুল আলোচনায় ফকির বেলায়েত হোসেনের মোটরসাইকেল
- কাপ্তাই সেনা জোনের উদ্যোগে ‘মানবতার দেয়াল’
- তুরস্কের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে চলছে স্টার্টআপ ও কমিশনিং কার্যক্রম
- কাপাসিয়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি
- ‘প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে’
- ঈশ্বরদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় গ্রেফতার ১২
- যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির মুক্তির দাবিতে ফরিদপুর যুবদলের বিক্ষোভ
- জামালপুরে ১৬ দাবি বাস্তবায়নে পবিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি
- মধুখালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১
- সৌদি ফেরত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ
- বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন
- ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
- রহমাতুননেছা শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
- দিনাজপুরে এক পশলা বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি
- ‘সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই’
- তৃতীয়বারের মতো লন্ডনের মেয়র হলেন সাদিক খান
- সুন্দরবনে আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ৫ বাহিনী, জোয়ারের অপেক্ষা
- আজ বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ
- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে জবাই করে হত্যা
- এবার রেকর্ড সংখ্যক হাজির সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি
- দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ
- খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ নিহত ৩
- নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজার হাজার ইসরায়েলির বিক্ষোভ
- ঢাকায় ১৮ মে থেকে শুরু হচ্ছে জাপানিজ ক্যালিগ্রাফি
- এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- ননিয়া নামক স্থানে পাক সেনাদের পৈশাচিক নির্যাতনে ২৬ জন মানুষ নিহত হয়
- গরমে আইস ফেসিয়ালে যে উপকার পাবেন
- মে দিবসের কবিতা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !