বঙ্গবন্ধু একটি নাম, একটি ইতিহাস
মীর আব্দুল আলীম
মার্চ মাস বাঙালির স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতির এক মাস। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বিষাদ, আবেগ-অনুভূতি বিজড়িত মাস এই মার্চ। এই মার্চে ৪টি দিবস খুবই গুরুত্ব বহন করে। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২ জাতীয় দিবস, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা। এ মাসের ২৬ তারিখে এ দেশের জন্ম; আবার এ মাসের ১৭ তারিখে জন্মেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। তাই মার্চ বাঙালি জাতির জন্য অর্থবহ এক মাস। এ মাসেই তার জাদুকরী ভাষণ বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন তিনি। গর্জে উঠেছিল বাঙালি। স্বাধীনতার প্রেরণার উৎস ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ওই ভাষণ। ঐতিহাসিক এই ভাষণের পর প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের গহিনে লালন করা তখনো অধরা ‘স্বাধীনতা’ যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
একজন বঙ্গবন্ধু, একটাই বাংলাদেশ। শত বছর আগে ১৭ মার্চে জন্ম নেওয়া তেজোদীপ্ত এই মানুষটি গর্জে ওঠেন ৭ মার্চ; সেই গর্জনেই অর্জন ১৬ ডিসেম্বর। পৃথিবীর বুকে নাম লেখালো স্বাধীন বাংলাদেশ। তার মেধা, প্রজ্ঞা, সততা, সাহস সর্বোপরি দেশপ্রেমেই বাংলাদেশের জন্ম হয়। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এই ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয়। ১৯৭১ সালে এসে যে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে যদিও তার গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগে। তারপরে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চে এসে বাঙালির সেই স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতিকে স্পর্শ করে।
১ মার্চ রাতেই স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়। সেই সংগ্রাম পরিষদ ৩ মার্চ পল্টনে একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই শোভাযাত্রায় শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করলেন। ইশতেহারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সব কথা বলা ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের চৌহদ্দি কী হবে, এই পতাকা বাঙালির পতাকা হবে, জয় বাংলা বাঙালির স্লোগান হবে, বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তি-সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক। সব কিছু বলা হয়েছিল। সে সময় মুহুর্মুহু স্লোগান হয়, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর। ২ তারিখে পতাকা উত্তোলন, ৩ তারিখে ইশতেহার পাঠ, আর ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন বঙ্গবন্ধু। এভাবেই স্বাধীনতার পটভূমি তৈরি হয়।
আজ বঙ্গবন্ধু নেই। আছে তার স্মৃতি। ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ।’ বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আজও বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে গাঁথা আছে। বঙ্গবন্ধুকে কী করে ভোলে বাঙালি। বাঙালি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে তাকে। এবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করছে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। শত বছর আগে ১৭ মার্চ প্রিয় এ মানুষটি জন্ম। তিনি ভালোবেসেছিলেন বাঙালি জাতিকে। বীর হতে চাননি যিনি; ভয় পাননি শহীদ হতেও। রক্ত দিয়ে যিনি দেশবাসীর ভালোবাসার ঋণ পরিশোধ করতে প্রস্তুত ছিলেন সর্বদা- তাকে কী করে স্মরণ না করে বাঙালি? বঙ্গবন্ধু ক্ষমতাকে ভালোবাসেননি, হৃদয় দিয়ে দেশকে ভালো বেসেছেন, দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন। অর্থ লোভ তাকে ছোঁয়নি কখনো। দেশের ভালোবাসার কাছে তার কাছে অর্থ ছিল তুচ্ছ। এমন নেতা কি আর জন্মাবে কখনো এ দেশে? যা দেখছি তাতে বোধ করি কখনোই না। বঙ্গবন্ধু হয়ে আর আসবেন না কখনো কেউ। এক বঙ্গবন্ধ, এক বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। বাংলাকে ভালোবাসার এমন মানুষ আর কখনোই আসবে না এদেশে। তার মতো করে কেউ বাংলাকে আর ভালোবাসবে না; বাঙালিকে তার মতো করে আর কেউ আগলে রাখবে না।
আমরা সত্যি অকৃতজ্ঞ জাতি। যিনি আমাদের দেশমাতৃকাকে উপহার দিলেন, এই তাকেই কত না নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। জাতির জনকের বাসভবনে রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়া হলো সেদিন। শিশু রাসেলের কান্না আর আকুতিও ওদের হৃদয় স্পর্শ করল না। শুধু তই নয়, হত্যাকারীরা তার কবর তিন মাস পর্যন্ত পাহারা দিয়েছে। সেখানে কাউকে আসতে দেওয়া হয়নি। এমনকি দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ছবি এদেশে নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর কবর দেখতে না দেওয়া, তার হত্যার ছবি প্রকাশের নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ ঘৃণ্য হন্তারক ওই সামরিক শাসকরা তাতে ভয় পেত। তাদের ভয়টা ছিল এখানেই যে, তারা নিশ্চিত জানত জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা আরো জানত সে সময় এসব ছবি প্রকাশ পেলে কোনো কিছুতেই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
সেই ১৫ আগস্ট। সিঁড়িতে পড়ে আছে বাঙালি জাতির প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তমাখা নিথর লাশ। সিঁড়ি গড়িয়ে রক্ত চলে এসেছে বাহির আঙ্গিনায়। মহান সেই নেতার রক্ত সোঁদা মাটিতে মিশে গেছে। তিনি তো শুধু এ দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি ছিলেন না, ছিলেন না দলবিশেষের প্রধান। দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী ঝড়-মেঘ ইতিহাসের পথে আমাদের যাত্রায় তিনি ছিলেন সঙ্গী ও পথপ্রদর্শক। তাকে ভুলব কেমন করে? তাকে কি ভোলা যায় কখনো? তাই তো ইতিহাসের এই মহানায়কের উদ্দেশে কবি লিখেছিলেন, ‘যতদিন রবে পদ্মা, যমুনা/গৌরী, মেঘনা বহমান/ ততদিন রবে কীর্তি তোমার/ শেখ মুজিবুর রহমান।’
অবিসংবাদিত এই নেতার জীবন চলার পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ’৬০-এর দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঢাকার তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু বজ্রদৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তারই বজ্র নির্ঘোষ ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ধারণ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অদম্য সাহস ও অকুক্ত আত্মত্যাগ, সাংগঠনিক শক্তি নিজের বাঙালিসত্তার গভীর অনুরণন উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। কখনো স্বভাবের প্রেরণায়, কখনো সযত্ন উৎসাহে তার উন্মোচন ঘটিয়েছিলেন। দেশবাসীকেও তেমনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন সেই সত্তার জাগরণ ঘটাতে। দেশ ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে এক মোহনীয় স্বপ্ন রচনা করেছিলেন তিনি ধীরে ধীরে, সেই স্বপ্ন সফল করার আহবান জানিয়েছিলেন সকলের প্রতি। কী বিপুল সাড়া তিনি পেয়েছিলেন, তার পরিচয় তো আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। ১৯৭১ সালে যেভাবে তিনি অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন, তাতে বিম্মিত হয়েছিল সারা বিশ্ব।
ক্ষাত্র শক্তির সঙ্গে নৈতিক শক্তির দ্বন্দ্ব পৃথিবীতে এই প্রথম সংঘটিত হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে-ঐক্য যে-শৃঙ্খলা যে-দুর্জয় সংকল্পের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল তার তুলনা হয় না। তারপর সেই ৭ই মাচের্র ভাষণ, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। যে শুনেছে সে ভাষণ তারই শরীরে বয়ে গেছে বিদ্যুৎপ্রবাহ। কী ছিল সে ভাষণে? কোনো অজ্ঞাত তথ্য নয়, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘোষণা নয়, ভাষার কোনো কারুকার্য নয়, বলবার কোনো পরিশীলিত ভঙ্গি নয়। তাতে ছিল এ দেশের সর্বশ্রেণির মানুষের অকথিত বাণীর প্রকাশ, তাদের চেতনার নির্যাস, বক্তব্যের অবিসংবাদিত আন্তরিকতা। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এই আন্তরিকতার বন্ধন গড়ে উঠেছিল বলেই তো শত্রুদেশে বন্দী থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে তার প্রেরণা ছিল সক্রিয়। স্বাধীনতা লাভের জন্য যেমন দৃঢ় সংকল্পবব্ধ ছিল সকলে তেমনি প্রবল আকাক্সক্ষা ছিল তার নেতৃত্বে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তোলার। বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেই তিনি বলেছিলেন যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে; পূর্ণ হবে না। এই ছিল তার স্বপ্নেরই অংশ। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগেই তাকে সপরিবারে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হলো।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বিশাল প্রতীক এবং নিরন্তর প্রেরণার উৎস। এইসব উপাদানের সমন্বয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং এই ইতিহাসে সবচেয়ে উজ্জ্বল এবং সর্বোচ্চ স্থানটি যে বঙ্গবন্ধুর যুক্তিবাদী, বিচারশীল এবং ইতিহাসবোধসম্পন্ন সকল মানুষই এটা স্বীকার করবেন। এ ব্যাপারে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু তবুও কিছু লোক বিতর্ক তুলেছেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর হত্যা দিবসকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালনের সরকারি সিদ্ধান্তকে ক্ষমতার জোরে অন্যায়ভাবে বাতিলও করে দিয়েছেন। তাদের এই সিদ্ধান্ত ছিল অদূরদর্শী, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিরোধী এবং ইতিহাসকে অস্বীকার করার নামান্তর। বাংলাদেশের স্বাধীনতাপরবর্তী নানা অস্বাভাবিক ঘটনাপ্রবাহের স্রোতে এই দিনটিকে ১৯৭৫ পরবর্তীকাল থেকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক নানা স্বার্থ, স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত এবং কিছু লোকের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের কারণে এটি সম্ভব হয়নি। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যখন এই দিনকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করল তখন তাকে সকল গণতান্ত্রিক, ইতিহাসবোধসম্পন্ন ও শুভবুদ্ধি দ্বারা পরিচালিত দলের মানুষেরই এটা মেনে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশ আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি প্রায় সিকি শতাব্দী সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন এবং তারই ফলে মানুষের মনে তার চিন্তা-চেতনা গভীরভাবে প্রভাব ফেলে এবং ধাপে ধাপে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশ আন্দোলনকে রাজনৈতিক সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে উন্নীত করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। বাঙালির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সন্তান তিনি। তার জীবন ছিল সংগ্রামমুখর। সংগ্রামের মধ্যেই তিনি বড় হয়েছিলেন। তার জন্ম তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়ায়। ছাত্র অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্টের সরকার গঠন, কপ, পিডিপির আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে মহানায়ক হিসেবে ’৭০-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে এদেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। অবিসংবাদিত এই নেতার জীবন চলার পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ’৬০-এর দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঢাকার তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু বজ কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তারই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ধারণ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অদম্য সাহস ও অকুতোভয় আত্মত্যাগ, সাংগঠনিক শক্তি নিজের বাঙালি সত্তার গভীর অনুরণন উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। দেশবাসীকেও তেমনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন সেই সত্তার জাগরণ ঘটাতে। দেশ ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে এক মোহনীয় স্বপ্ন রচনা করেছিলেন তিনি ধীরে ধীরে, সেই স্বপ্ন সফল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন সকলের প্রতি। কী বিপুল সাড়া তিনি পেয়েছিলেন, তার পরিচয় তো আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।
বঙ্গবন্ধুকে জীবনের একটা বড় অংশ বাঙালি জাতির জন্য ত্যাগ করতে হয়েছে। দেশের জন্য দিয়েছেন নিজের জীবনও। জেল জুলুম ছিল তার জীবনের একটা অংশ। বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেই তিনি বলেছিলেন, ‘যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে, স্বাধীনতা পূর্ণ হবে না’। এই ছিল তার স্বপ্নেরই অংশ। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগেই তাকে সপরিবারে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে স্বপ্ন দেখা মানুষগুলো। তিনি চলে গেলেন। আর ফির এলেন না। আফসোস, এমন একটা নেতা এদেশের আর জন্মায়নি একটিও। তার মতো করে বাংলাকে আর ভালোবাসবেনি কেউ, দেশের মানুষকে আগলে রাখেনি কেউ। হে মহান নেতা ভালো থেকো, স্বর্গীয়সুখে থেকো। হাজারো সালাম তোমায়।
লেখক : সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব, কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- নাগরপুরে প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ২
- আবারও কমলো স্বর্ণের দাম
- কাপাসিয়ায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে অবহিতকরণ সভা
- দেওয়ানগঞ্জে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা
- 'উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে'
- বৃষ্টির জন্য কুষ্টিয়ায় সালাতুল ইস্তিকার নামাজ আদায়
- সজিনা পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
- শৈলকূপায় ওয়ান শুটারগানসহ যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জাল সনদে প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ
- নড়াইলে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ বিএনপির
- ‘দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তার করার ঘটনা ইসির বোধগম্য নয়’
- ‘মাশরাফি যা চাইবে, আমি সেটা করে দেব’
- এমপি শাজাহান খানের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিক খানের নানা অভিযোগ
- তীব্র তাপদাহে ফরিদপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শরবত বিতরণ
- ফুলবাড়ীতে ৫৮০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ
- বিএনপির নিজেকে প্রশ্ন করা জরুরি- তারা কি পাকিস্তানের চেয়েও বড় বিরোধীতাকারী?
- গাজীপুরে স্কুলছাত্র হত্যায় ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- মাদারগঞ্জে দলীয় প্রার্থীর প্রত্যাহার চান ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী
- আদরকে বাঁচাতে চায় পরিবার, প্রয়োজন ৫০ লাখ টাকা
- দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- গোপালপুর ইউনিয়নে লিটন মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- ছাড় পাচ্ছেন না স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী-এমপিরাও
- লক্ষ্মীপুরের ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হলেন যারা
- ‘দেশে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে থাকে’
- নাগরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের দাফন সম্পন্ন
- টাঙ্গাইল পৌরসভায় ১৩৭ বছরেও গড়ে উঠেনি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
- সুবর্ণচরে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্ধোধন
- দিনাজপুরে তীব্র তাপদাহে গ্রীষ্মকালীন টমেটো নিয়ে বিপাকে কৃষক
- ইতালী প্রবাসীর মৃত্যুর ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন
- মেলান্দহে ১১ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
- ‘নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরেছে’
- নড়াইলের পথে-প্রান্তরে কৃষ্ণচূড়ার অপার সৌন্দর্য
- ফরিদপুরে ২ সমবায় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ
- দিনাজপুরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় মামলা
- নিখোঁজের ৭ দিন পর যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
- দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু, আহত ১২
- নড়াইলে প্রচণ্ড গরমে ৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ, স্কুল ছুটি ঘোষণা
- নড়াইলে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার
- গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব
- হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ল ফিলিস্তিনি পতাকা
- ইসলামপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
- ৫১৬৬ জন সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক পাচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২১ বছর পর হত্যা মামলার রায়, ১৯ জনের যাবজ্জীবন
- ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- রিকশাচালকদের আধা লিটার পানির বোতল দিচ্ছে ডিএনসিসি
- বাঁচুন নিজের মতো করে
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উইলিয়ামসনের নেতৃত্বেই খেলবে নিউজিল্যান্ড
- রাত ১১টার পর চা-সিগারেটের দোকান বন্ধে ডিএমপির নির্দেশ
- ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৯০০
- টিপু-প্রীতি হত্যা মামলায় ৩৩ আসামির বিচার শুরু
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !