E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের

২০২৪ জুন ০৮ ১৮:১৩:২৪
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের

আবীর আহাদ


মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার যাবতীয় দায়দায়িত্ব ঐতিহাসিক নৈতিকতার নিরিখে আওয়ামী লীগের ওপর বর্তায়। আর এটাই ঐতিহাসিক সত্য এই যে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি দেশ, জাতির পিতা, একটি জাতীয়তা, একটি পতাকা ও একটি জাতীয় সঙ্গীত অর্জিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা সৃষ্ট এক সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। এখানে আওয়ামী লীগ উদ্যোগী থাকলেও সেই সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারাই। আরো পরিষ্কার করে এভাবে বলা যেতে পারে যে, মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলো বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদ্ধারাই বাংলাদেশের স্রষ্টা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ রচিত আমাদের জাতীয় সংবিধানের মূলস্তম্ভ 'প্রস্তাবনা'র কোথাও মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ শব্দদ্বয় সন্নিবেসিত হয়নি। এখানেই আমাদের মনোবেদনা, আপত্তি ও অভিমান।

এ-কারণে আমি উদ্যোগি হয়ে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে ২০১৮ সাল থেকে সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ শব্দদ্বয় সন্নিবেসসহ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে একটি আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেছি যা এখনো চলমান। আজ আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, জাগ্রত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত যুবসমাজ আমার দাবি দু'টি আমলে নিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে একটি আন্দোলনের সূত্রপাত করেছেন। আমি আশাবাদী, বিলম্বে হলেও একদিন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনরুত্থান ঘটবে, দাবি দু'টি আলোর মুখও দেখবে।

আমাদের দাবির মর্মকথা অনুধাবন করে আওয়ামী লীগ গত একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের দলীয় ইস্তাহারে 'মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও তাদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিলো। অপরদিকে আমাদের দ্বিতীয় দফা 'অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদ' দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময় অপরিকল্পিত উপায়ে ঢিমেতালে হলেও অমুক্তিযোদ্ধা বা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। আমরা অমুক্তিযোদ্ধা উচ্ছেদ ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের বাহাত্তর সালের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার আলোকে একটি উচ্চপর্যায়ের বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে তদন্ত কমিশনের কথা বলে আসছি, যাতে সত্যিকার অর্থে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্বচ্ছ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য তালিকা তৈরি করা হয়।

কারণ স্বাধীনতার পঞ্চাশ অতিবাহিত হলেওও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের এ-ব্যর্থতা ক্ষমার অযোগ্য। বঙ্গবন্ধু সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞাকে এড়িয়ে বিভিন্ন গোঁজামিলের সংজ্ঞায় অর্থ, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবে অমুক্তিযোদ্ধা, এমনকি রাজাকারদেরও মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেয়া হবে, এমনটি তো হতে পারে না। অকারণে অমুক্তিযোদ্ধারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে ভাগ বসিয়ে জনগণের ট্যাক্সের অর্থ ও অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করবে এটাও তো হতে দেয়া যায় না। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নানান যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ায় অবশেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে পর পর চারটি পর্বে মুক্তিযোদ্ধা নামের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। যে তালিকাটি বিতর্কের ঊর্ধে সেই ভারতীয় তালিকার বহু মুক্তিযোদ্ধার নাম এ পর্যন্ত এসব প্রকাশিত পর্বে আসেনি, অথচ অমুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম প্রধান আখড়া বলে পরিচিত লাল মুক্তিবার্তা ও বেসামরিক গেজেটধারী অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম এসব পর্বে সগরবে প্রকাশিত হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ উঠেছে!আর যেভাবে ধারাবাহিক পর্বে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে তাতে এর শেষ কোথায় বা সংখ্যা কতো দাঁড়াবে তা কেউ বলতে পারবে বলে মনে হয় না! যেহারে মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করা হচ্ছে তাতে মনে হয় কেয়ামততক এ কর্ম চলতেই থাকবে! তথাকথিত শেষ পর্বে প্রকাশিতব্য তালিকায় ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নাম আসবে কিনা, বা লাল মুক্তিবার্তা ও বেসামরিক গেজেটের ভুয়াদের নাম বাদ যাবে কিনা সে-প্রসঙ্গে যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশিত চার পর্বের তালিকার গতিপ্রকৃতি দেখে আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না যে, আখেরে তালিকাটি সঠিক ও স্বচ্ছ হবে।

আমরা জানি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বসাকুল্য সংখ্যা দেড় লক্ষের মধ্যে। অথচ এ পর্যন্ত দু'লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজারের মতো মুক্তিযোদ্ধাকে সরকারের গেজেটভুক্ত করা হয়েছে। এ-নিরিখে আশি হাজারেরও বেশি অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকৃতি দেয়া চরম ইতিহাস বিকৃতির সামিল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের হাতে প্রায় চল্লিশ হাজার এবং বাকি আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে তচল্লিশশ হাজারেরও বেশি অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে! বঙ্গবন্ধুর মর্যাদা ও মুক্তিযুদ্ধের শুদ্ধতার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় যে পরিমাণ ভুয়া আছে, তাদের বিতাড়ন করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগকেই পালন করতে হবে। তবে এ কাজটি বর্তমান মন্ত্রী মহোদয় ও জামুকাকে বহাল রেখে হবে না-এটা প্রমাণিত। কারণ তারাই এসব ভুয়াদের রক্ষা ও সৃষ্টি করে আসছেন। একটি সঠিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকার স্বার্থে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে রাজি আছেন যদি সরকার পূর্ণ সদিচ্ছা নিয়ে উচ্চতর বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। এটিই সমাধানের একমাত্র পথ। আমার ধারণা, এ ধরনের একটি কমিশন গঠন করে দেয়া হলে ৫/৬ মাসের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা প্রণয়ন সম্ভব। জাতীয় স্বার্থে সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারেন।

আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে, আজ মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক বা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান ও মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভুল তালিকা প্রণয়ন করা না হলে, ইতিহাসের কাছে তারা দায়ী থাকবে। আর বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় ও জামুকার ক্ষমাহীন অযোগ্যতা ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতার যাবতীয় দায়ভার অকারণে বর্তে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর! ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী আমলাতন্ত্র এবং বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্বঘোষিত বেআক্কেল মন্ত্রীর নানান অপরিণামদর্শী কার্যকলাপের ফলে নানান দিক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদাহানিসহ তাদের জীবনের নিরাপত্তা বিষয়ে শত চিৎকার করেও প্রধানমন্ত্রীর শুভদৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা চরম মনোকষ্টে ভুগছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের দুর্বিসহ অবস্থায় আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ার ফলশ্রুতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটাতো কাঙ্খিত ও কাম্য হতে পারে না।

অপরদিকে মুখে বা সরকারি প্রজ্ঞাপনে মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হচ্ছে, তাদের মুক্তিযোদ্ধা পদবীর পূর্বে 'বীর' শব্দটি ব্যবহার করার কথা বলা বা গালভরা বুলিসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা হচ্ছে, অথচ অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা যে মানবেতর জীবনযাপন করছে সে-বিষয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই! অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা গৃহহীন। বলা চলে তারা খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। মাসিক যে ভাতাটি দেয়া হচ্ছে, বর্তমান আর্থসামাজিক ও বাজার নিরিখে সেটা খুবই অপ্রতুল। অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা রোগাক্রান্ত। তার ওপর চলছে করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব। সরকারি খরচে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিত্সার কথা বলা হলেও সরকারি কোনো মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে গেলে তাদের চরম এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। ইদানিং আরেকটি মারাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে।

রাজাকার ও তাদের বংশধরেরা আওয়ামী লীগে জামাই আদরে স্থান পাচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজাকাররা একাত্তরের পরাজয়সহ তাদের অপরাধের জন্য তারা যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মার খেয়েছিলো, সেগুলোর প্রতিশোধ নেয়ার কার্যক্রম তারা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে করে যাচ্ছে । প্রায়:শই দেখা ও শোনা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজাকার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা গায়েপড়ে গোলমাল বাঁধিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হত্যাসহ নানান অত্যাচার, বাড়ি লুট, অগ্নিসংযোগ করে চলেছে। গত বছর টাঙ্গাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ খানকে গ্রাম্য শালিস বৈঠকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার অনেক উদাহরণের একটি উদাহরণ এখন আমাদের চোখের সামনে ভাসছে। এই তো ক'দিন আগে কুমিল্লার একজন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার এতিম কিশোরী কন্যাকে মুনিয়াকে দেশের মাফিয়া শিরোমণি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির চক্রান্তে নিহত হতে হলো ! এভাবে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার তাদের নিরাপত্তায় প্রশাসনসহ আওয়ামী লীগের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না। গ্রামে-গঞ্জে কিংবা শহরে সর্বত্র দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগই যেনো মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে! অথচ যারা এসব অপকর্ম করছে তারা হাইব্রিড আওয়ামী লীগার। এসব নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ হাইকমাণ্ডেরও অজানা নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ লা-জবাব!

আমরা অতি বেদনা সাথে লক্ষ্য করছি যে, মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা, তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও তাদের জীবনের নিরাপত্তার বিধান করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করবেন, তা তো হবে না। আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের দূরে সরিয়ে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি জামায়াত হেফাজত ফ্রিডমপার্টিসহ সমাজের দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা অপশক্তিকে কিসের মোহে আওয়ামী লীগ বুকে টেনে নিয়ে দলে ও সরকারে ঠাঁই দিয়ে চলেছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। দলের বিপদে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকরা বুক দেয়, রক্ত দেয়- আর দলের সুখের সময় তাদের খোঁজ নেই। এই আত্মঘাতী নীতি থেকে আওয়ামী লীগকে সরে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকারে আসতে হবে। নইলে আওয়ামী লীগকে একদিন কঠিন মূল্য দিতে হবে।

তারা বুঝে কিনা জানি না, ঐ সুবিধাবাদী দলছুট হাইব্রিড দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা অপশক্তি আওয়ামী লীগকে ঘুণেপোকার মতো তিলে তিলে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দলটি আজ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে যোজন মাইল দূরে সরে গেছে। তারা ক্ষমতার রঙিন চশমা পরে সবকিছুকে রঙিন দেখছে। কিন্তু তারা সুখের মধ্যে ডুবে থেকে হয়তো বুঝতে পারছে না যে, তাদের ক্রিয়াকর্মের বিপরীত প্রতিক্রিয়াস্বরূপ একটি ধর্মান্ধ জঙ্গি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নিরব উত্থান ঘটছে, যে অপশক্তির থাবায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা যদি এখনো বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন করে আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের জন্যে তো বটেই, দেশের জন্যেই করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে।

পরিশেষে, আওয়ামী লীগের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিশেবে তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করবো, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের মূলধারায় ফিরে আসুন। মুক্তিযোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিন, মুক্তিযুদ্ধের কলঙ্ক অমুক্তিযোদ্ধাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় দিন। মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটান। তাদের ও তাদের পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করুন। মুক্তিযোদ্ধারা আর ক'দিন? তাদের মুখে একটু হাসি ফুটান। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে চেটেপুটে লুটপুটে খেয়ে অনেকেই আজ হাসছে, কেবল হাসি নেই মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে! অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের হাসি ও মর্যাদার মধ্যেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্থকতা নিহিত। মুক্তিযোদ্ধাদের অবমানার অর্থই হলো বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রতি অবমাননা। সুতরাং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঐতিহাসিক জাতীয় মর্যাদা রক্ষা করা আওয়ামী লীগের আশু নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

লেখক :মুক্তিযোদ্ধা লেখক গবেষক।

পাঠকের মতামত:

২৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test