E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং একটি সমীক্ষা

২০২৪ জুন ১০ ১৬:২৯:১১
তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং একটি সমীক্ষা

রহিম আব্দুর রহিম


তৃতীয়বারের মত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। গত ৯ জুন রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে রাইসিনা হিলস চত্বরে তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আরও ছয় দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। সব মিলিয়ে ওই দিনের শপথ অনুষ্ঠানে প্রায় আট হাজারেরও বেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বের অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে তিনিই অন্যতম দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব, যিনি তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হলেন। এর পূর্বে ভারত তথা বিশ্ব পরিমন্ডলে ব্যাপক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জওহরলাল নেহরু পরপর টানা তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার গৌরব অর্জন করেছিলেন। এ হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর এই অর্জন নেহরুকে ছুঁয়ে যাওয়ারই শামিল। গত ৪ জুন দেশটির ভোট গণনা শেষে ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ঘোষিত ফলাফলে যখন দেখা গেলো ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বধীন এনডিএ জোট দেশের মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৯৩ আসনে জয় লাভ করেছে।

অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের প্রধান জোট ইন্ডিয়ার প্রাপ্ত মোট আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৪টিতে। সরকার গঠন করতে একটি দল বা জোটের আসন লাগে মোট ২৭২টি। সে হিসেবে বিজেপি জোটের মোদীই হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, এটা স্পষ্ট হবার পরও 'ভারতের শাসন ক্ষমতার লাগাম ধরছে কে?' শিরোনামে আমার একটা লেখা ৫ জুন প্রকাশ হয় উত্তরাধিকার ৭১ নামের অনলাইনে ভার্সনে। যে লেখাটি ৬ জুন বাংলা ৭১ নামের প্রিন্ট মিডিয়াতেও প্রকাশ পায়। লেখাটি প্রকাশের পর ভারতের প্রথম সারির এক নাগরিক, যিনি আমার শুভাকাঙ্খী এবং নিয়মিত পাঠক। তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছেন, "আমরা নিশ্চিত যে বিজেপি আবার ক্ষমতায় আসছে। তবে নিজের জোরে নয়, শরিকদের সমর্থন নিয়ে। আবার প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু পরিবর্তন যেটা হয়েছে, তা হল এবার লোকসভায় বিরোধীদের উপস্থিতি অনেক বেশি, সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আগের মত নয় এবং আগের মত সহজে আইন পাশ করানো সম্ভব হবে না। কাজেই আইন সভায় রীতিমতো আলোচনা হবে, শোনার মতো বিতর্ক হবে এবং তবেই কোন আইন পাশ হবে এটা আশা করা যায়। নিরপেক্ষ সাংবাদিকরা নির্ভয়ে কাজ করতে পারবেন এবং সরকারের সমালোচনা করলেই কাউকে দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি এবারেও ক্ষমতায় এলে আমাদের সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর আঘাত নেমে আসার যে সম্ভাবনা অনেকে দেখছিলেন, সেটা আমাদের জনগণ রুখে দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে বিজেপি বা কংগ্রেস নয়। জয়ী হয়েছেন দেশের নির্বাচকমণ্ডলী।"

নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনী ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে রামমন্দির নির্মাণ করে ধর্মীয় যে অনুভূতি কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন তারও জবাব ভোটারই দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া এবং সাধারণ ভোটারদের রায় থেকে স্পষ্ট যে, ভারতের জনমানুষ শুধু দেশ প্রেমিকই নয়, তাঁরা অসাম্প্রদায়িক মহৎ মানব গোষ্ঠীর বিশ্ব নজীরও বটে।

লেখক: কলামিস্ট ও নাট্যকার।

পাঠকের মতামত:

২৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test